মিশন নাহারে নিজামীর পাঁচ ফ্ল্যাট, ছাড়তে হবে পরিবারকে

SHARE

mishon naharঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর। এবার তার পরিবারকে ছাড়তে হচ্ছে রাজউকের বরাদ্দকৃত প্লটে নির্মিত পাঁচটি ফ্ল্যাট।

রাজধানীর বনানীর ১৮ নম্বর রোডের ৬০ নম্বর প্লটটি নিজামীকে বরাদ্দ দিয়েছিলো বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। পরবর্তীতে একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে দিয়ে ওই প্লটে বাড়ি তৈরি নেন তিনি। ‘মিশন নাহার’ নামের ওই ছয়তলা বাড়িটিতে মোট দশটি ফ্ল্যাটের পাঁচটি নিজামীর।

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বুধবার (১৩ জুলাই) ঘোষণা দিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বরাদ্দ দেওয়া সরকারি প্লটগুলো বাতিল করা হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের নামে বরাদ্দকৃত যেসব প্লট বা ফ্ল্যাটে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি কাজ করছে, তারা তাদের অংশ পাবে। বাকি অংশ সরকার নিয়ে নেবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গুলশান-বনানীকে বিভাজনকারী ঝিলের পাশ ঘেঁষেই জে ব্লকে দাঁড়িয়ে আছে অফ হোয়াইট রঙের ‘মিশন নাহার’। বাড়িটি বানিয়েছে মিশন ডেভেলপার লিমিটেড। এ বাড়ির নামের প্রথম অংশ ডেভেলপার কোম্পানির নামের অংশবিশেষ এবং শেষ অংশটি নিজামী স্ত্রীর নামের শেষ অংশ। নিজামীর স্ত্রীর নাম শামসুন নাহার, যিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

ছয়তলা বাড়িটির নিচতলায় পার্কিং। আর ওপরের পাঁচটি ফ্লোরে মোট ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেয়ারটেকার বাংলানিউজকে জানান, এখানে বিভিন্ন ফ্লোরে নিজামীর ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে। আর পাঁচটি ডেভেলপার কোম্পানির। ৫টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৬এ এবং ৬বি ফ্ল্যাট (টপ ফ্লোর) দু’টিতে নিজামীর পুরো পরিবার বসবাস করে। আর বাকি ৩টি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

কেয়ারটেকারের সঙ্গে কথা বলার সময়ই দেখা যায়, নিজামীর পরিবারের দু’জন নারী সদস্য সিলভার রঙের প্রাইভেটকারে করে বের হয়ে যাচ্ছেন। কয়েক দফা চেষ্টা করার পরও তারা কোনো কথা বলেননি। বরং কেয়ারটেকারকে বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য।

১৯৯৫ সালে আজিজুর রহিম নামের এক ব্যক্তিকে পাঁচ কাঠার ওই প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৬ সালের ২১ মে আগের বরাদ্দ বাতিল করে প্লটটি তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীকে বরাদ্দ দেয় রাজউক। বাড়িটি তৈরি হওয়ার আগেই গ্রেফতার হন নিজামী। ফলে তিনি আর এ বাড়িতে থাকতে পারেননি।

তার পরিবারের সদস্যরাই এখন এখানে বসবাস করছেন।

ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে জানতে বুধবার বিকেল ৩টার পর থেকে ডেভেলপার কোম্পানির ফোন নম্বরগুলোতে কয়েকদফা চেষ্টা করেও কোনোবারই খোলা পাওয়া যায়নি।

পঞ্চম যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।