ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),মোহাম্মদপুর প্রতিনিধি, শনিবার ০৮ নভেম্বর ২০২৫ || কার্তিক ২৪ ১৪৩২ :
মোহাম্মদপুরের আলোচিত ‘কবজিকাটা গ্রুপ’ আবারও আলোচনায়। দলের প্রধান কবজিকাটা আনোয়ার গ্রেপ্তারের পর এখন তার সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন তারই ছোট বোন মাসুমা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারের পর মাসুমা ও তার ভাই দেলোয়ার, সহযোগী অ্যালেক্স বাবুসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী মিলে পুরো এলাকায় দাপট চালাচ্ছেন। তাদের চাঁদাবাজি ও হুমকিতে অতিষ্ঠ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হন কবজিকাটা আনোয়ার। কিন্তু তাতে থেমে থাকেনি তার প্রভাব। ২০২৩ সালের ২৫ জুন আনোয়ারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী স্থানীয় যুবক শাকিলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ভুক্তভোগী ও তার পরিবার জানান, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যবসা দখল।
শাকিলের বড় ভাই জাহাঙ্গীর, যিনি তুরাগ ইউনিট বিএনপির সভাপতি, দাবি করেন— তুরাগ হাউজিং এলাকার ময়লার ব্যবসা দখল করতেই আনোয়ার তার ভাইকে আক্রমণ করে। ২০১৮ সাল থেকে সিটি করপোরেশনের টেন্ডার নিয়ে ওই ব্যবসা চালাচ্ছিলেন জাহাঙ্গীর ও তার সহকর্মী মোশারফ। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর, ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেয় আনোয়ার।
আনোয়ার গ্রেপ্তারের পর তার বোন মাসুমা এই ব্যবসা ও পুরো নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রণ নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, মাসুমার নেতৃত্বে দলটি এখন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজি, দখল, হুমকি—এসব কর্মকাণ্ডে সে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। একাধিক অডিও রেকর্ডেও মাসুমার ভয়ঙ্কর হুমকির প্রমাণ মিলেছে।
সম্প্রতি, ৩০ অক্টোবর, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় ঢাকা উদ্যানের হাজী জয়নাল আবেদিন কাঁচাবাজারের নিরাপত্তা কর্মকর্তার ওপর হামলা চালায় দেলোয়ার। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “এলাকায় এখন কেউ নিরাপদ নয়। দিন-রাত হুমকি-ধমকি চলে। প্রশাসন না নড়লে আমরা ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাই।”
অভিযোগের বিষয়ে একাত্তরের সাংবাদিক দল মাসুমার সঙ্গে কথা বলতে শ্যামলী হাউজিংয়ের তার বাসায় গেলে তিনি ঘরে ছিলেন না। পাশের বাসিন্দারা জানান, সংবাদকর্মীরা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই তিনি তড়িঘড়ি করে বের হয়ে যান।
পুলিশ জানায়, আনোয়ার ও তার সহযোগীদের পর যারা এই গ্রুপ পরিচালনা করছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। “দেলোয়ারকে আমরা আটক করেছি। তার পর কেউ এই অপরাধ কর্মকাণ্ড চালালে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে,”—বলেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
Advertisement
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের দাবি— দ্রুত এই সন্ত্রাসী চক্রকে নির্মূল করে মোহাম্মদপুর এলাকাকে অপরাধমুক্ত করা হোক।





