(ভিডিও) ড্রোন দিয়ে খুঁজে আন্দোলনকারীদের গুলির নির্দেশ দিতেন শেখ হাসিনা

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,বিশেষ  প্রতিনিধি,রোববার   ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩২:

জুলাই আন্দোলন দমনে, শেখ হাসিনার অন্যতম হাতিয়ার ছিলো ড্রোন ব্যবহার। যার পূর্ণাঙ্গ একটি চিত্র এসেছে, চ্যানেল 24 এর হাতে। যেখানে বলা হয়েছে, বেসরকারি ড্রোন ব্যবহার করা হয়, পুরো আন্দোলন জুড়ে। এসব ছবি গণভবনে দেখে আন্দোলন দমনের নির্দেশনা দিতেন, শেখ হাসিনা।

Remaining Time 7:27

গেল বছর ছাত্র জনতার জুলাই আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনার সরকার যেসব ঘৃণ্য পদক্ষেপ নেয় তার মধ্যে অন্যতম ছিল ড্রোন দিয়ে খুঁজে খুঁজে আন্দোলনকারীদের বের করা। পরবর্তীতে সেসব জায়গায় হেলিকপ্টার পাঠিয়ে গুলির নির্দেশ দেয়া। যার প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আন্দোলন পর্যবেক্ষণে ভাড়া করা হয় বেসরকারি ড্রোন। সেসব ফ্রিল্যান্স ড্রোনের ফুটেজ সরাসরি যেতো গণভবনে। যা পর্যবেক্ষণ করতেন খোদ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ফ্রিল্যান্স ড্রোন অপারেটরদের একজন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে।

আরও পড়ুন: ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে ২ বার ভূমিকম্প: মাত্রা কত, উৎপত্তিস্থল কোথায়

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া ব্যক্তি মোবাইল ফোনে বলেন, ডিএমপি হেডকোয়ার্টার কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে এক ধরনের প্রস্তাব এসেছিল। প্রস্তাবটি ছিল, ড্রোনের নিচে বোমা বা সাউন্ড গ্রেনেডের মতো কোনও ডিভাইস মাউন্ট করে দিতে পারবেন কি না, যা আন্দোলনের সময় উপর থেকে রাস্তার ওপর নিক্ষেপ করা যাবে। তবে তিনি এই প্রস্তাবটি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেন এবং স্পষ্টভাবে জানান যে এ ধরনের কোনও কাজে তিনি যুক্ত হতে পারবেন না।

বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ প্রসিকিউটর তানভীর জোহা জানালেন, এমন অনেক ড্রোনের সন্ধান তারা পেয়েছেন যেগুলো থেকে গুলি করার বিশেষ ব্যবস্থাও ছিল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ প্রসিকিউটর তানভীর জোহা বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি শেখ হাসিনা কোছে ড্রোন থেকে যেসব ফুটেজ আসছে তা জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে সরাসরি সরবরাহ করা হতো। তারা এই ফুটেজের ডাইরেক্ট জুম লিংক ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় অপারেশনও পরিচালনা করেছে। যে কর্মকর্তা লাইভ এই ফুটেজগুলো সংগ্রহ ও নিয়ন্ত্রণ করতেন, তিনিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং জানিয়েছেন যে তিনি ফুটেজগুলো সরাসরি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে পাঠাতেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দুইটি সমঝোতা স্মারক সই

তিনি আরও বলেন, এছাড়া আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে, কিছু বেসরকারি তরুণ যারা ড্রোন তৈরি ও ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করত, তাদেরকে ড্রোনের মধ্যে বোমা ফিট করে বিক্ষোভকারীদের দিকে নিক্ষেপের জন্য প্ররোচনা ও সহযোগিতা দেয়া হয়েছিল। এ বিষয়েও তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

শেখ হাসিনার নৃশংসতার নতুন নতুন তথ্য এখনও পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে এই প্রসিকিউটর বলেন, ঢাকার বাইরে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলির তথ্য সরাসরি শেখ হাসিনার মুঠোফোনে এসএমএস করে করে জানানো হতো। যেখানে থাকতো কত রাউন্ড গুলি করা হয়েছে, কতজন মারা গেলো।

 

তানভীর জোহা বলেন, সেসব তথ্য কার নির্দেশে এসেছে এবং উনারা কত রাউন্ড গুলি করেছেন, এসব বিষয়ে আমরা ডিজিটাল প্রমাণ পেয়েছি। অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। এটি একটি অ্যাপ-ভিত্তিক সমন্বয় ব্যবস্থা, যা গাজীপুর ও ময়মনসিংহ শহরে ব্যবহৃত হয়েছে। যেখানে যেখানে গুলি চালানো হয়েছে, সেখানে কোন কোন কর্মকর্তা ডেপ্লয়েড ছিলেন এবং কেন তারা কমান্ড চেইন ভেঙে সরাসরি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ধরনের ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছেন, এসব বিষয়ও আমরা তদন্ত করছি।

শুধুমাত্র ড্রোন ব্যবহার করে যেসব নৃশংসতা জুলাই আন্দোলনে হয়েছে সেসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে শনাক্ত করেছে হয়েছে। গ্রেপ্তার আছেন মাত্র একজন।