ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি, সোমবার , ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৩ সফর ১৪৪৭:
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। সন্ত্রাসবাদ, হত্যা, মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে র্যাব জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। অপরাধ দমনে র্যাবের এই নিরলস প্রচেষ্টা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ সম্প্রতি দুই জেলায় সংঘটিত আলোচিত হত্যা মামলার প্রধান আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (১৮ আগস্ট) র্যাব মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংএ এই তথ্য জানান র্যাব-১০।
কেরাণীগঞ্জে সৎ ছেলের ঘাতক পিতা গ্রেফতার
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে তফুরা খাতুনের ছেলে রাকিবুল সরদার (১৪) হত্যার ঘটনায় তার সৎ পিতা মোঃ আজহারুল সরদার (৩৬)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তফুরা খাতুন প্রথম স্বামী খায়রুল সরদারের মৃত্যুর পর দুই বছর আগে আজহারুলকে বিয়ে করেন। তবে নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি প্রায় ৬ মাস আগে আদালতের মাধ্যমে তালাক নেন। এরপর থেকেই আজহারুল নিয়মিত হুমকি দিতেন।
গত ১৪ আগস্ট রাকিবুল কাজে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি। পরে ১৬ আগস্ট সকালে আজহারুলের ভাড়াবাড়ি থেকে রাকিবুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন
মামলা রুজুর মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে র্যাব-১০ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খুলনার হরিণটানা থানাধীন জিরো পয়েন্ট মোড়ে অভিযান চালিয়ে আসামি আজহারুলকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে রাকিবুলকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার
অন্যদিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিল থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহত মো. রেদুয়ান (২৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. জহুরুল মুন্সী ওরফে সুলতান জাহির (২৫)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
রেদুয়ান ১৩ আগস্ট বিকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন। কয়েকদিন পর স্থানীয়রা বিল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল ১৮ আগস্ট গভীর রাতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে আসামি জহুরুলকে গ্রেফতার করে। তার বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, রক্তমাখা জামাকাপড়, ভিকটিমের ব্যাংক কার্ড, মানিব্যাগ, পাদুকা ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মাদারীপুর জেলার শিবচর থেকে নিহতের মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।
Advertisement
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জহুরুল স্বীকার করেছে যে, পূর্বেকার সম্পর্কের জের ধরে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রেদুয়ানকে চাকু দিয়ে হত্যা করে এবং মরদেহ বিলে ফেলে দেয়।
দুই জেলায় সংঘটিত চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডগুলোর প্রধান আসামিদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।