ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা কঠিন কেন?(ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, রোববার   ১৫ জুন ২০২৫ ||  আষাঢ় ১ ১৪৩২ :

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ফেব্রুয়ারিতেই সতর্ক করে জানিয়েছিল, ইসরায়েল ২০২৫ সালের মধ্যেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে বন্ধ করতে সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে মত দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে যে ধ্বংস সাধন করা হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করেই ইসরায়েল এখন আরো বড় সুযোগ নিতে চাইছে।

Advertisement

কেন হামলা চালালো ইসরায়েল

একটি মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো—ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন আনা।

তারা ইরানকে অস্তিত্বগত হুমকি হিসেবে দেখে। কারণ, ইরান কখনোই ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি, বরং পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে ইসরায়েলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে—এমন আশঙ্কা বহু বছর ধরে তুলে ধরছে তেলআভিভ। 

ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে ছায়াযুদ্ধে জড়িত। একদিকে যেমন ইসরায়েল গোপন অভিযানের মাধ্যমে ইরানি বৈজ্ঞানিকদের হত্যা করেছে, অন্যদিকে তেহরান সমর্থন দিয়ে এসেছে হিজবুল্লাহ, হামাস এবং ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের মতো আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে—যারা সরাসরি ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত।

গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীগুলোর হামলা আরো বেড়ে গেছে, বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে। 

ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও নেতানিয়াহু চাপে রয়েছেন। সাম্প্রতিক একটি সেনা খসড়া বিল নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে সরকার। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে আগাম নির্বাচনের পথে হাঁটার সম্ভাবনাও তৈরি হয়—যেখানে জরিপ অনুযায়ী নেতানিয়াহু হারতে পারেন।

তবে শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্ট বিল বাতিল করে নেতানিয়াহুকে আরো কিছু সময় দেয়। 

হামলার সময় ও প্রেক্ষাপট

ইসরায়েলের এই হামলার সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একদিন আগেই জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান জানিয়ে দেয়, ‘তারা তাদের পরমাণু কার্যক্রম আরো জোরদার করবে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া জানানো ছাড়া আর কোনো পথ নেই।’

ইরান বারবার বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে—বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা গবেষণার জন্য।

তবে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হলে তা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে নিয়ে যেতে পারে। ইসরায়েলের এই হামলা শুধু পারমাণবিক হুমকির জবাব নয়, বরং এটি রাজনৈতিক সংকট থেকে নজর সরানো, আঞ্চলিক প্রতিপক্ষকে দুর্বল করা এবং নিজেদের কৌশলগত শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর একটি প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তবে এই পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলকে আরেকটি বড় সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। 

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা এত কঠিন কেন?

ইরান বহু বছর ধরেই তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে সামরিক হামলা থেকে রক্ষা করতে চূড়ান্তভাবে সুরক্ষিত করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব স্থাপনাকে পুরোপুরি ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন — এবং ইসরায়েলের মতো রাষ্ট্রের পক্ষেও তা সহজ হবে না।

সিএনএনের সামরিক বিশ্লেষক সেড্রিক লেইটন বলেন, ‘ইরান যে কংক্রিট ব্যবহার করে, তা সাধারণ নয় — এটি অত্যন্ত শক্তিশালী, সুরক্ষিত ও বিশেষ ধরণের কংক্রিট।’ তিনি আরো বলেন, ‘এমন এখনো পরিষ্কার নয় যে, ইসরায়েলের বোমাগুলো এই কংক্রিট ভেদ করতে পারবে কি না।’ তার মতে, ইসরায়েল যদি সত্যিই এই স্থাপনাগুলো ধ্বংস করতে চায়, তাহলে একের পর এক কয়েক দফা তীব্র বিমান হামলা চালাতে হবে।

ইরানের কিছু পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এমনভাবে মাটির গভীরে নির্মিত, সেগুলো সাধারণ বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করা কার্যত অসম্ভব। উদাহরণ হিসেবে ওয়াশিংটনের কুইন্সি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সহসভাপতি ত্রিতা পার্সি জানান, ইরানের ফোর্ডো পারমাণবিক কেন্দ্র প্রায় অর্ধমাইল গভীরে মাটির নিচে অবস্থিত। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ দেখিনি, ইসরায়েল এই ধরনের স্থাপনাগুলোতে সঠিকভাবে প্রবেশ করতে সক্ষম।’

অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো অ্যালেক্স প্লিটসাস বলেন, ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো একে অপরের সঙ্গে সুগঠিত সুড়ঙ্গ দিয়ে সংযুক্ত এবং অনেক ক্ষেত্রেই সেই সুড়ঙ্গগুলোতে ৯০-ডিগ্রি কোণ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ৯০-ডিগ্রি বাঁক নিতে পারে না… ফলে আক্রমণের সম্ভাব্য পথ অনেকটাই সীমিত হয়ে যায়।’

এই কারণেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সরাসরি আঘাত হানা শুধু জটিল নয়, রীতিমতো কৌশলগত চ্যালেঞ্জের বিষয়। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের একক প্রচেষ্টায় এগুলোর সম্পূর্ণ ধ্বংস সাধন সম্ভব নয় এবং আংশিক আঘাতে তেমন লাভও হবে না — বরং এর ফলে ইরান আরও প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠতে পারে। ইরান তাদের পারমাণবিক প্রকল্পগুলো শুধু প্রযুক্তিগতভাবে নয়, স্থাপত্যগতভাবেও এমনভাবে গড়ে তুলেছে যাতে কোনো রাষ্ট্র সহজে এগুলো ধ্বংস করতে না পারে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই ইসরায়েলের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে এবং তা ভবিষ্যতে যেকোনো সামরিক অভিযানের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

ইসরায়েলের ইরান হামলা কি পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিতে পারে? যুক্তরাষ্ট্রও কি জড়িয়ে পড়বে?

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা সত্যি হতে যাচ্ছে। ইরানে ইসরায়েলের সরাসরি আক্রমণ শুধু দুই দেশের সংঘর্ষে সীমাবদ্ধ থাকবে না—এটি সহজেই এক বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়তে পারে। ইসরায়েল বহুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সর্ববৃহৎ অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। ফলে ইসরায়েল যখন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়, তখন তা যুক্তরাষ্ট্রকেও ঝুঁকির মুখে ফেলে। এই সপ্তাহেই ইসরায়েল হামলা চালাতে পারে—এমন গোয়েন্দা সতর্কবার্তা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের অপ্রয়োজনীয় কূটনৈতিক কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে। এই হামলার ফলে অঞ্চলটি এমন এক অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে প্রবেশ করেছে, যার আগে কোনো নজির নেই।

ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব

ইরান মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রতিরোধ জোট গড়ে তুলেছে, যার মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহ (লেবানন), হুথি বিদ্রোহী (ইয়েমেন), এবং ইরাক-সিরিয়ার বিভিন্ন মিলিশিয়া গোষ্ঠী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার ফলে এই গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে এবং বহু ফ্রন্টে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ইসরায়েল-ইরান আলোচনার সম্ভাবনা শেষ?

এই হামলার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান আলোচনাও ভেস্তে যেতে পারে। পূর্বেও যখন দুই দেশ সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জড়িয়ে পড়েছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে পরামর্শ দিয়েছিল যেন তারা ইরানের জ্বালানি বা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা না চালায়। তখন ইরান সীমিত ও প্রতীকী পাল্টা আঘাত করে উত্তেজনা প্রশমিত রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।

শুক্রবার ইসরায়েলের হামলা কেবল প্রতীকী নয়—এটি ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক কাঠামোর ‘মাথায়’ সরাসরি আঘাত করেছে। নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পাশাপাশি নিহত হয়েছেন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি এবং ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি।

সালামি নিহত হওয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক বেথ স্যানার তুলনা করেছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফকে হত্যা করার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভাবুন তো, যদি এমনটা আমেরিকার সঙ্গে হতো, আমেরিকানরা কী করত?’

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান এখন ‘অস্তিত্বগত হুমকির’ মুখে রয়েছে। ফলে এবার ইসরায়েলকে অনেক বড় আকারে প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আগের চেয়ে আরো ভয়াবহ পাল্টা হামলা আসতে পারে। এটি যদি ঘটেই যায়, তাহলে তা কেবল ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না—হিজবুল্লাহ, হামাস, হুথি ও অন্যান্য গোষ্ঠীসহ পুরো অঞ্চল জ্বলবে।
এবং এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি যুদ্ধের অংশ হতে বাধ্য হতে পারে।

ইসরায়েলের এই আক্রমণ শুধু একটি অভিযান নয়, এটি হয়তো এক নতুন যুদ্ধের শুরু। বিশ্ব এখন সেই যুদ্ধের দিকেই তাকিয়ে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচী কেন এত বিতর্কিত?

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি। তেহরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক প্রযুক্তি আয়ত্ত করতে চায়। তবে পশ্চিমা শক্তিগুলো – বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ – অভিযোগ করে আসছে যে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ দীর্ঘদিন ধরেই বলছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র না ছড়ানোর চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে।

গত বৃহস্পতিবার, প্রায় দুই দশক পর, আইএইএ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে, ইরান চুক্তিভঙ্গ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও আইএইএ বিশ্বাস করে, ইরান ২০০৩ সাল পর্যন্ত একটি গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়েছিল, যা পরে স্থগিত করা হয়। তবে ইরান এ অভিযোগ অস্বীকার করে এবং দাবি করে, তারা কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করেনি।

২০১৫ সালে, ইরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাকে বলা হয় জেসিপিওএ। এই চুক্তির অধীনে ইরানকে ইউরেনিয়াম মাত্র ৩.৬৭ শতাংশ বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়। ইউরেনিয়ামের মজুত ৩০০ কেজি সীমায় রাখতে বলা হয়। আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে পুরনো আইআর-১ সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করতে বলা হয়।

২০১৮ সালে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে বের করে আনেন। এরপর থেকে ইরান ধীরে ধীরে চুক্তির সব সীমা অমান্য করে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা শুরু করে – যা অস্ত্র তৈরির মাত্র এক ধাপ নিচে (৯০ শতাংশ)।

নিষেধাজ্ঞা ও গুপ্তহত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করলেও তা পারমাণবিক কর্মসূচিকে থামাতে পারেনি। ইসরায়েল শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যার মতো অভিযান চালিয়েও ইরানের কর্মসূচি বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মে মাসে আইএইএ-এর এক প্রতিবেদন বলেছে, ইরান গোপনে তিনটি স্থানে পারমাণবিক পদার্থ নিয়ে কাজ করেছে, যা আগে ঘোষণা করা হয়নি।

Advertisement

আরেকটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় ৪০৮ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে – যা আরো সমৃদ্ধ করলে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট। ইরান বলছে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার তাদের সার্বভৌম অধিকার, এবং এ বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না। তাদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন, চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করছে, অস্ত্র তৈরির জন্য নয়।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ও তেহরানের মধ্যে বিশ্বাসের সংকট চরমে। চুক্তি লঙ্ঘন, নিষেধাজ্ঞা, গুপ্তহত্যা ও সামরিক হামলা – সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন সঙ্ঘাতপূর্ণ ও বিস্ফোরক হয়ে উঠেছে। এই পারমাণবিক উত্তেজনার পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, নিরাপত্তা উদ্বেগ, এবং মধ্যপ্রাচ্যের শক্তি-সাম্য রক্ষা করার লড়াই।

সূত্র : সিএনএন