খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্য করতে যাইনি

SHARE

kaderঢাকা: বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাতীয় ঐক্য করতে নয়, দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।

শুক্রবার (০৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় মতিঝিলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়াকে বলেছি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। জাতির নেতৃত্ব দিতে চাইলে এখনি ঘোষণা দিতে হবে তার জোটে জামায়াত নেই।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের অঙ্গচ্ছেদ হয়। ওই দিন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বাষির্কীতে জন্মদিন পালন করা চলবে না; যদি তা আসল জন্মদিনও হয়।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তবে খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নয়। তাকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু করতে গেলে বড় ভুল হয়ে যাবে। এ ধরনের ভুল পাকিস্তানি শাসকরা করেছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে হিসাবের বাইরে রেখেছিল। এ জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হয়েছে।

জাতীয় ঐক্য’র জন্য শেখ হাসিনাকে ‘যোগ্য নেতা’ আখ্যা দিয়ে বঙ্গবীর বলেন, জাতীয় ঐক্যর ডাক প্রথম দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বিদেশ থেকে ফিরে তিনি বললেন- জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। আমি খালেদা জিয়াকে যেমন বলেছি জাতীয় ঐক্য করতে জামায়াত ছাড়ুন, তেমনি শেখ হাসিনাকেও বলছি, জাতীয় ঐক্য করতে গণবাহিনীর ইনুকে ছাড়ুন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণ ছাড়া জাতীয় ঐক্য হয় না। যেসব দল জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে তাদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য করুন। যদি তা না পারেন দায়িত্ব গিয়ে খালেদা জিয়ার কাঁধে পড়বে। যদি তিনি সফল হন, নেতা হয়ে যাবেন।

‘ইসলামের সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নেই’-প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য সমর্থন করে বঙ্গবীর বলেন, তার এই বক্তব্যের সঙ্গে আমি শতভাগ এক মত। রাষ্ট্রের ক্ষতি করার জন্যই কিছু উদ্ভ্রান্ত লোক জঙ্গি হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, এটাকে ইস্যু করে ইসলামী ফাউন্ডেশন তাদের খুতবা সারা দেশের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে কেন? তাহলে কি জঙ্গিদের সঙ্গে ইসলামী ফাউন্ডেশনের সম্পর্ক আছে?

আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভেঙেই যদি দেবেন, তাহলে গড়তে দিয়েছিলেন কেন? হলি আর্টিজানের হামলার কারণে যদি সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেন-তাহলে তো তারা মনে করবে ভয় পেয়ে গেছেন। জাতিকে এভাবে ভয় দেখাবেন না।  আবাসিক এলাকা থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরাতে হলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সরান।

বন্দুক যুদ্ধে জঙ্গি হত্যার সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, সবাইকে এভাবে মেরে ফেললে তথ্য উদ্ঘাটন করবেন কী ভাবে? র্যাবের কাছে যদি একজন বন্দি নিরাপদ না থাকে, তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ কীভাবে? খবর নিয়ে দেখুন- পুলিশ ও র্যাবের মধ্যে জঙ্গি আছে কী না?

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন সিদ্দিকী প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে  খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানের ২ নং সার্কেলের ৭৯ নম্বর সড়কে তার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় বৈঠক করেন বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী।