চাকরি ছেড়ে সফল সূর্যমুখী চাষি ফাতেমা! (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চুয়াডাঙ্গার জীবননগর প্রতিনিধি , সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩ : শখের বসে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন চুয়াডাঙ্গার নারী কৃষি উদ্যোক্তা ফাতেমা তুজ জোহরা, পেয়েছেন সফলতা। সূর্যমুখীর হলুদ ফুলে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে মাঠজুড়ে। মৌমাছি উড়ে উড়ে ফুলে বসে মধু সংগ্রহ করছে। ফুলের বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে সব বয়সের মানুষ ছুটে আসছেন। কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রকৃতির ছোঁয়া পাচ্ছেন তারা।

Advertisement

 

ফাতেমা তুজ জোহরার বাড়ি চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেন। পড়াশোনা শেষ করার পর ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ছোটবেলায় ঢাকাতে থাকার সুবাদে গ্রামে আসা-যাওয়া তেমন একটা ছিল না। কৃষি ও মাটির প্রতি তেমন একটা সখ্য ছিল না।

Advertisement


১৯৯৩ সালে বাবা অসুস্থ হলে গ্রামে আসেন। গ্রামে আসার পর তিনি মাঠজুড়ে শুধু ফসল আর ফসল দেখতে পান। প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে তিনি কৃষির প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েন। বাবাও ছিলেন একজন কৃষক। গ্রামে আসার পর তিনি কৃষির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়েন। ঢাকা থেকে চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে আসেন। গ্রামে আসার পর স্থায়ীভাবে কৃষি কাজ শুরু করেন। বর্তমানে ফসল ও মাছ চাষ করছেন ৭০ বিঘা জমিতে।
দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সূর্যমুখী ফুল চাষের মাধ্যমে তেল উৎপাদন মূল লক্ষ্য ফাতেমার। ৫ কেজি বীজ দিয়ে ৩ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন।
Advertisement

ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘সৌখিনভাবে সূর্যমুখীর চাষ করার ইচ্ছা ছিল। দেশে তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ঘটতি মেটানোর জন্য এ চাষ। কৃষি নিয়ে কখনও ভাবিনি। বর্তমানে কৃষিটাই আমার প্রধান পেশা। আমি কনসালটেন্ট হিসেবে ঢাকাতে কাজ করতাম। উপজেলা কৃষি অফিসারের কথায় কৃষির প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়ি।’

সূর্যমুখী ফলনের বিষয়ে তিনি বলেন, ফুল ও বীজ ভালো হয়েছে। বীজ সংগ্রহ করার পর তেল কতটুকু হয় সেটা দেখার বিষয়। ইউরোপের দেশে এ বীজ থেকে বেশি তেল উৎপাদন হয়। সূর্যমুখী বাগানটা রাস্তা থেকে দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে ছুটে আসছেন। এ চাষ দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পাবে। কৃষিতে এটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাসান আলি বলেন, ‘জীবননগরে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। এ ক্ষেত দেখে খুব ভালো লাগল। চাষ পদ্ধতি সহজ ও লাভজনক হওয়ায় আগামী বছর ৫ বিঘা জমিতে আমি চাষ করব। বীজ ও তেল উৎপাদন করতে পারব।’
Advertisement

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, জেলায় ১৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। সূর্যমুখীর তেল হার্টের জন্য উপকারী। ফলন ও তেল ভালো হবে। এ চাষ কীভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সে বিষয় নিয়ে কাজ করছি।

তিনি বলেন, সূর্যমুখীর বীজ সংরক্ষণ করে এ চাষ জেলায় ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে তেলের ঘটতি মেটানো সম্ভব হবে। কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে স্বল্প সময়ের এ চাষে আগ্রহী করে তুলতে হবে। বীজ থেকে তেল উৎপাদন সহজ করার ব্যবস্থা করতে পারলে এ চাষে ব্যাপক আগ্রহ বাড়বে।