ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল সেতু প্রতিনিধি,শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫ || জ্যৈষ্ঠ ২৩ ১৪৩২ :
কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কয়েকটি মোটরসাইকেলকে। এ ঘটনায় শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ছয়জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল সেতুর ওপর ঘটনাটি ঘটে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি শহীদুল ইসলাম দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ট্রেন চালক সিগনাল অমান্য করে দ্রুত গতিতে সেতুতে উঠে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
নিহতরা হলেন- সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক তুষার (৩২) ও যাত্রী মেহেরিমা নুর আয়শা (২)। অপর নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে আসে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালুরঘাট সেতুর অদূরে পৌঁছায় ট্রেনটি। এ সময় রেলের সিগন্যালম্যান সব যানবাহন থামিয়ে দেন। তবে, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হওয়ায় কয়েকটি যানবাহন সেতুর ওপর আটকে থাকে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সেতুতে উঠার আগেই ট্রেন থামাতে লাইনম্যানসহ অনেকেই সংকেত দেন। ট্রেন চালক সংকেত অমান্য করেন।
ট্রেনটি সেতুতে উঠে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কয়েকটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চালক তুষার ও যাত্রী মেহেরিমা নুর আয়শাসহ তিনজন মারা যান। অন্তত ৬ জন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জালানিহাট স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত গার্ড মো. মাহবুব বলেন, “আমি সিগন্যাল অমান্য হওয়ার সম্ভাবনা বুঝতে পেরে নিজেই সেতুর মুখে গিয়ে ট্রেন থামাতে লাল পতাকা নাড়িয়ে সংকেত দেই। তবুও ট্রেন চালক সেটি উপেক্ষা করেন।”
কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার আমিনুল ইসলাম বলেন, “রাত পৌনে ১১টার দিকে আমরা খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করি।”
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, “কালুরঘাট সেতুতে একটি ট্রেন বিভিন্ন যানবাহনকে ধাক্কা দেয়। পাঁচজনকে ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।”
রেলওয়ে জালানিহাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, “পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছেড়ে আসে। রাত ১০টা ১০ মিনিটে এটি কালুরঘাট রেলসেতুর অদূরে পৌঁছায়। ওই সময় সেতুর ওপরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হয়ে গেলে যানজট তৈরি হয়। আমরা তখনই লাল সিগন্যাল দেই। গার্ডও হাতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দেন। ট্রেন চালক সিগন্যাল মানেননি।”
Advertisement
তিনি আরো বলেন, ‘কালুরঘাট ব্রিজটি ডেড স্টেপেজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে ব্রিজে ওঠার নিয়ম। চালক তা মানেননি।”
শত বছরের পুরনো কালুরঘাট রেল সেতুটি সংকীর্ণ হওয়ায় উভয় দিক থেকে একইসঙ্গে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ট্রেন আসার পূর্বে উভয় দিক থেকে যানবাহন পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রেন না আসলেও স্বাভাবিক সময়ে একদিক বন্ধ রেখে অপর একদিক থেকে যানবাহন চলাচল করাতে হয়।