ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : মৃত্যুর আগে সন্তানের নির্যাতনের মুখে সব সম্পত্তি লিখে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বাবা। বলছি, সোনালী ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপ্যাল অফিসার ফিরোজ ভূঁইয়ার কথা।
ছয় মাস আগে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ছোট ছেলেকে নির্যাতনের মুখে বাড্ডা ও নরসিংদীর দুটি বাড়ি ও ব্যাংকে থাকা কোটি টাকা লিখে দিতে বাধ্য হবার কথা।
সম্পত্তির দ্বন্দ্বে মৃত্যুর পরে দাফনেও বিলম্ব হয়েছিল এই হতভাগ্য পিতার। নিজ বাড়ির গ্যারেজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়েছিলো ফিরোজ ভূঁইয়ার মরদেহ।
প্রতিবেশী ও পুলিশের সহায়তা তার মরদেহ পাঠিয়ে দেয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পর মানুষের চাঁদার টাকায় দাফন হয়েছিলো ফিরোজ ভূঁইয়ার।
গেলো শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি। আর মৃত্যুর সাত মাস আগে ছেলের হাতে নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে গেছেন তিনি। চোখের জলে বর্ণনা করেছেন ছেলের নির্যাতনের কথা।
ছোট ছেলে আবির ও তার স্ত্রী কৌশলে হাতিয়ে নেয় বাবা ফিরোজ ভূঁইয়া এবং মার অবসরের আনুতোষিক ভাতা থেকে পাওয় এক কোটি টাকা।
নরসিংদীর স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে ফিরোজ ভূঁইয়া বলে গেছেন, ব্যাংক লোণ আর জমির খাজনা দেয়ার কথা বলে বাড্ডার পাঁচ তলা বাড়িটি জোর করে লিখে নেয় ছোট ছেলে আবির। এই সাক্ষাতকারের ভিডিওটি সংগ্রহ করেছে একাত্তর টিভি।
সেখান থেকে জানা যায়, ওই বাড়ি হারিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী যেতে চেয়েছিলেন নরসিংদীর বাড়িতে। কৌশলে সেটিও লিখে নিয়ে বাবা মাকে বাড়ি ছাড়া করে ছেলে। ছেলেকে সব কিছু লিখে দেয়ার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে তাকে আশ্রয় নিতে হয় অন্যের বাড়িতে।
এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ছেলের বিরুদ্ধে নিজেই মামলা করেছিলেন ফিরোজ ভুঁইয়া। সেই মামলা এখনও চলমান বলে জানিয়েছেন তার শ্যালক আবদুল হামিদ।
তিনি একাত্তরকে জানান, চাকরি জীবনে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ গড়েছিলেন এই বাবা। কিন্তু তার শেষ দিনগুলো কেটেছে শূন্য হাতে, লোকের কাছে চেয়ে চিন্তে।
এসবের পেছনে ছোট ছেলের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের ইন্ধনের কথাও বলে গেছেন ফিরোজ ভুঁইয়া। মৃত্যুর কিছুদিন আগে কৌশলে বাবাকে নরসিংদী থেকে বাড্ডার বাসায় নিয়ে আসেন ছেলে আবির। সেখানেই চরম অমানবিক পরিস্থিতিতে তার মৃত্যু হয়।
যদিও ছোট ছেলে আরিফুর রহমান আবির দাবি করেছেন, বাবা তাকে মৃত্যুর আগে স্বেচ্ছায় সব সম্পদ লিখে দিয়ে গেছে।