তুই চলে যা, পেছনে তাকালে মেরে ফেলব

SHARE
sizar_116454ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২২ ডিসেম্বর :  নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজারকে চোখে মলম দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছিল অপহরণকারীরা। নিখোঁজ হওয়ার এক মাস ১৪ দিন পর ফিরে এসে এমন তথ্যই জানিয়েছেন তিনি।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানী বনশ্রীর বাসার নিচে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিজার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘নিখোঁজের দিন আমি উবারে করে রোকেয়া সরণি দিয়ে আগারগাঁও যাচ্ছিলাম। রোকেয়া সরণিতে ওরা আমার গাড়ির গতিরোধ করে বলে নামতে হবে, এটা চুরির গাড়ি। নামার পর পেছন থেকে কেউ চোখে-মুখে মলম জাতীয় কিছু লাগিয়ে দেয়। এর পর আমি আর কিছু জানি না।’
সিজার বলেন, ‘আমার যখন জ্ঞান ফেরে, তখন দেখি একটি কক্ষের মধ্যে বন্দি। পেছনে আমার হাত বাঁধা। একটা ময়লা তোষক। জানালা আছে, তবে বাইরে থেকে সিল করা। পাশে আরেকটা রুম আছে। সেখানে ৪-৫ জন কথা বলছিল। তার পর থেকে সেখানেই ছিলাম।’
মোবাশ্বার বলেন, অপহরণকারীদের বিভিন্ন সময় তিনি টাকা-পয়সা নিয়ে কথা বলতে শুনেছেন। তার সঙ্গে থাকা ২৭ হাজার টাকাও অপহরণকারীরা নিয়ে নেয়। কিছু দিন ধরে নিজেদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল অপহরণকারীদের মধ্যে। মনে হতো অপহরণকারীদের কেউ ‘মিসিং’ হয়েছে। অপহরণকারীরা মোবাশ্বারের বন্ধুবান্ধবের মধ্যে বড় কেউ (উচ্চপর্যায়ের) আছে কি না জানতে চাইত।’
ফিরে আসার বর্ণনা দিতে গিয়ে মোবাশ্বার বলেন, গতকাল রাতে চোখ বেঁধে একটা গাড়িতে তুলে বিমানবন্দর সড়কের কোনো এক জায়গায় অপহরণকারীরা তাকে নামিয়ে দেয়। বলে, ‘তুই চলে যা, পেছনে তাকালে মেরে ফেলব।’ পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ডেকে বাসায় ফেরেন।
মোবাশ্বার হাসানের বাবা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে আমরা নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। আমরা খুব খুশি।’
গত ৭ নভেম্বর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে সরকারের এটুআই প্রকল্পের একটি সভায় অংশ নিতে যান সিজার। সেখান থেকে বাসার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
ওইদিনই গভীর রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সিজারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন।
জিডিতে বলা হয়, ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার বাসা থেকে বেরিয়ে সিজার তার কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। নিয়মিত কাজ শেষ করে বিকেলে তিনি বের হয়ে যান। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতক সিজার এক সময় সাংবাদিকতাও করেছেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি করেন। সিজার সম্প্রতি সমাজে জঙ্গিবাদের বিস্তার নিয়ে গবেষণা করছিলেন বলে জানা গেছে।