ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজনীতি প্রতিনিধি,শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫ || শ্রাবণ ১৭ ১৪৩২ :
কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ‘গোপন বৈঠকের’ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া আরও দু’জনকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। সব মিলিয়ে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন ২২ জন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এই মামলার তদন্তে আরও কারা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল– তা বের করার চেষ্টা করছে।
Advertisement
মামলার তথ্য ও গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরা-সংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে বৈঠক শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পর্যন্ত। বৈঠকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরসহ ৩০০-৪০০ জন অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে সরকারবিরোধী পরিকল্পনা হয়। এছাড়া সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দেয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ডিসি তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বৈঠকের ঘটনায় ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। আরও কারা জড়িত, তা তদন্তে উঠে আসবে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারাদেশ থেকে লোকজন এনে ঢাকায় জড়ো করা হবে বলে বৈঠকে পরিকল্পনা হয়। এরপর তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করবে। অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির ছক করা হয়। এমন অরাজক পরিবেশ তৈরি করে তারা শেখ হাসিনার দেশে ফেরত আসা নিশ্চিত করতে চান।
Advertisement
গোপন বৈঠকের ঘটনায় গত ১৩ জুলাই ভাটারা থানায় মামলা করেন এসআই জ্যোর্তিময় মণ্ডল। এজাহারে এক নম্বর আসামি হলেন যুবলীগ নেতা সোহেল রানা। দুই নম্বর আসামি আওয়ামী লীগের নেত্রী শামীমা নাসরিন শম্পা। এর আগে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১২ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার একটি বাসা থেকে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা পুলিশ। একইদিন একই এলাকা থেকে শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বামী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। দু’জনকে গ্রেপ্তারের পর ভাটারা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, সোহেল রানা ও শম্পাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বৈঠকে অংশ নেয়া মেজর সাদিকুল হক ওরফে মেজর সাদিককে হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
মেজর সাদিক নামের একজন আওয়ামী লীগের লোকজনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে—এমন সংবাদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সেনা সদরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেজর সাদিকের বিষয়ে আমরা অবগত। তার বিষয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বলতে পারব।’
Advertisement
https://www.youtube.com/live/E9fMBkbJ3-M?si=k2Ro-HFkcInWkNQ
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গোপন বৈঠকের আরেকটি উদ্দেশে ছিল আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কার্যক্রম গতিশীল করার চেষ্টা। গোপন বৈঠকের মামলায় যে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। তারা ‘প্রিয় স্বদেশ’, ‘এফ ৭১ গেরিলা’, ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম’, ‘প্রজন্ম ৭১’, ‘শেখ হাসিনা’সহ বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের সদস্য।