গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানী ঢাকায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার পর বৃষ্টির তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, দেখা দেয় তীব্র যানজট। যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে পড়ে অনেক গাড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।

Advertisement

রাজধানীর বিজয় সরণি মোড় থেকে শুরু করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ পর্যন্ত সড়কে পানি জমে যান চলাচল বিঘ্ন হয়। রাত ১১টার দিকে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি, সৈনিক ক্লাব মোড় থেকে কাকলী হয়ে নৌ সদর দপ্তরের সামনে পর্যন্ত রাস্তা হাঁটুসমান পানিতে ডুবে যায়। সেখানে বেশ কিছু যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে পড়ায় সেগুলো রাস্তায় আটকে থাকে।

রাত ১২টার দিকে মিরপুরের কালশী এলাকায়ও একই চিত্র দেখা যায়। কালশী উড়ালসড়ক থেকে পূরবী পর্যন্ত সড়কে জমে ছিল হাঁটুসমান পানি। সাংবাদিক আবাসিক এলাকার প্রধান ফটকের সামনের রাস্তার চিত্র ছিল আরও ভয়াবহ। পানি ছিল প্রায় কোমর পর্যন্ত। ওই অংশের সড়কের দুই পাশে অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি যানবাহন বিকল হয়ে রাস্তায় আটকে থাকতে দেখা যায়।

এ সড়কে রাজধানী পরিবহনের একটি বাস বিকল হয়ে রাস্তায় থেমে থাকতে দেখা যায়। ভেতরে বয়স্ক নারীসহ কয়েকজন যাত্রী বসে ছিলেন। চালকের সহকারী জানান, পানি না কমা পর্যন্ত গাড়ি সরানো সম্ভব হবে না। রাস্তায় পানি বেশি থাকায় ওই নারী যাত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নামতে ভয় পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিক আবাসিক এলকার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, আবাসিক এলাকার সব কটি সড়কে প্রায় হাঁটুসমান পানি। আবাসিক এলাকার পূর্ব পাশে থাকা খাল ও সড়ক পানিতে একাকার হয়ে গেছে। আবাসিক এলাকার একজন নিরাপত্তা প্রহরী জানান, সাধারণত ৪ নম্বর সড়কের ফটক রাত ১০টার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে ওই ফটক আজ খোলা রাখা হয়েছে।

এদিকে রাত ১০টার দিকে মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে কাজীপাড়া পর্যন্ত সড়কেও প্রায় হাঁটুপানি জমে থাকতে দেখা যায়। এ সময় জলাবদ্ধতার কারণে অসংখ্য ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাস বিকল হয়ে রাস্তায় থেমে থাকতে দেখা যায়। মোটরসাইকেলচালকদের অনেকে তখন ফুটপাত দিয়ে গন্তব্যে চলাচল করেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আরও কয়েক দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এতে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সংস্থাটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এ নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলে ডিএনসিসির হটলাইন নম্বর ১৬১০৬ অথবা নিয়ন্ত্রণকক্ষে ০১৭৩৩৯৮২৪৮৬ নম্বরে ফোন করে তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।