সাক্ষরতার হার কমানোর জন্য দায়ী বিএনপি-জামায়াত

SHARE

5203বিএনপি-জামায়াত দেশের সাক্ষরতার হার কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন ৯৬ সালে সরকার গঠন করি তখন আমাদের কথাই ছিল নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। সবাই সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন হবে, কেউ নিরক্ষর থাকবে না। আমরা জেলা নির্দিষ্ট করে নিরক্ষরমুক্ত জেলা ঘোষণার কাজ শুরু করি। যার ফলে ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো পুরস্কারও দিয়েছে। কিন্তু ২০০১ সালে আমরা যখন সরকারে ছিলাম না তখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে সেই কর্মসূচিগুলো বাতিল করে দেয়। ৯৬ সালে মাত্র ৪৫ ভাগ সাক্ষরতার হার পেয়েছিলাম। পরে সাক্ষরতার হার ৬৫ দশমিক ৫ ভাগে উন্নীত করেছি।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক অডিন্যান্স অ্যাক্ট ১৯৭৪ আইন করেছেন। তিনি বিধ্বস্ত বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৪জন শিক্ষককে সরকারিকরণ করেন। মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। এর পরবর্তিতে কোনো সরকার আর স্কুল সরকারি করেনি। আমরা যেহেতু জাতির পিতার আদর্শে বিশ্বাস করি, সেহেতু তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। ২০০৮ সালে সরকারে এসে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছি। ১ লাখ ৩ হাজার ৪৫ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণের ঘোষণা দিয়েছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণি করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড একধাপ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।

ধাপে ধাপে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় ডিজিটাল করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার জন্য যে সোনার ছেলে-মেয়ে দরকার, সেই সোনার ছেলে-মেয়ে গড়ার কারিগর হচ্ছেন শিক্ষক। তাই প্রত্যেক ছেলে-মেয়ে যাতে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানে এবং ন্যায়-নীতিবান হয়ে আর্দশ নিয়ে মানুষ হয়- সেই চর্চা করানোর দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে শিক্ষকদের। কারণ আমরা চাই আমাদের ছেলে-মেয়েরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক। তারা যেন বিভ্রান্তির পথে না যায়। মাদকাসক্তি,সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যেন জড়িত না হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। অথচ সেই ইসলাম ধর্মের নামে সন্ত্রাসী বা জঙ্গিবাদী এটা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য না। কাজেই আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন এসব থেকে দূরে থাকে। তাদের যেন কেউ বিভ্রান্ত করতে না পারে। প্রত্যেকটা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদে এই শিক্ষা দেয়া উচিত।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন খালিদ। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অসমান্য অবদান, খেলাধুলা, সংগীত, বিদ্যালয় পরিচালনা, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি  ও শিক্ষার্থীদের পদক প্রদান করেন।

‘মানসম্মত শিক্ষা, জাতির প্রতিজ্ঞা’- এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান চলবে। এই শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।