মাগুরায় ২০ মাদক ব্যবসায়ীর ভাগ্য পরিবর্তন

SHARE

3043মাগুরার পুলিশ সুপার (এসপি) একেএম এহসান উল্লাহর মহৎ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে ভাগ্য পরিবর্তন করলেন জেলার ২০ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। এখন তারা মাদক ব্যবসা ছেড়ে রিকশা ভ্যান চালিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। কেউবা আবার কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ২০ মাদক ব্যবসায়ী হলেন- শাহিনূর, জাহিদ, শাহিন, মো. আলী, রাজ্জাক, রসুল, আলম, রাশেদ, মনিরুল, মজনু, সোহেল, রেজাউল, কাশেম, বাশার, আমিরুল, রফিক, সলেমান, আইয়ুব, মুক্তার ও ডালু। যাদের নামে মাগুরা সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে হাজত খেটেছেন।

স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে শাহিন জানান, পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে তিনি এ অবৈধ ব্যবসার পথ ধরেছিলেন। এছাড়া ছোট কাল থেকে তিনি একটু দুষ্টু প্রকৃতির হওয়ায় সমাজের নামডাক ওয়ালা ব্যক্তিদের কাছ থেকে শুধু অবহেলায় পেয়ে এসেছেন। ভাল আচার ব্যবহার কোন দিন পাননি। কিন্তু মাগুরার বর্তমান পুলিশ সুপার (এসপি) স্যারের কাছ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশার পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।

শাহিনের পরিবার ও ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গেছে, শাহিন এখন আর মাদক ব্যবসা করেন না। এমনকি তিনি এখন মানুষকে ভাল হওয়ার পারমর্শও দিয়ে থাকেন। পরিবারের দ্বায়িত্বও পালন করছেন তিনি।

এছাড়া অপর এক সাবেক মাদক ব্যবসায়ী কাশেম জানান, তিনি অত্যন্ত গরীব মানুষ। ঘরে তার থ্যলাসামিয়া রোগে আক্রান্ত ৩টি মেয়ে রয়েছে। যাদের চিকিৎসার প্রয়োজনে তিনি মাদক ব্যবসা শুরু করেন। তবে সম্প্রতি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যাপক অভিযানে অনেক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছেন। অনেকে কারাগারে রয়েছে কেউবা জামিনে মুক্তি পেলেও পুলিশি আতঙ্কে নিজ বাড়িতে থাকতে পারছেন না। এ অবস্থায় মাগুরা পুলিশের কাছ থেকে সুপথে আসার সুযোগ পেয়ে বর্তমানে অন্যের জমিতে কাজ করে নতুন করে জীবন সাজানোর পরিকল্পনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উল্লেখ্য, মাগুরার পুলিশ সুপার (এসপি) একেএম এহসান উল্লাহ মাদক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলে চলতি মাসের ২০ তারিখে এসব মাদক ব্যবসায়ীরা অবৈধ ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন।

এ বিষয়ে মাগুরার পুলিশ সুপার (এসপি) একেএম এহসান উল্লাহ বলেন, যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের শুধু আইনের আওতায় আনা হলেই সমস্যার সমধান হয় না। এদের প্রয়োজন সঠিক কাউন্সিলিং। মূলত সঠিক কাউন্সিলিংয়ের অভাবে এরা অল্প বয়স থেকে এসব অবৈধ পথে পা বাড়ায়। এজন্যই মাগুরা পুলিশ এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। দু একজন পুলিশের জন্য গোটা ডিপার্মেন্টের দুর্নাম কুড়াতে হয়। তবে পুলিশ সব সময় জনগণের পাশে থাকার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।