ঈদের দিন বৃদ্ধাশ্রম ‘যারা মা-বাবার মৃত্যুর খবরেও আসে না, তারা আসবে উৎসবের দিন? (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০২৩ : ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর উৎসব-আনন্দে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে নানান ভোগান্তি পেরিয়ে নগর ছেড়েছেন অনেকেই। তবে পরিবার থেকে দূরে, নির্জন স্থানে প্রিয়জন ছাড়া বৃদ্ধাশ্রমে নিভৃতে চোখের জল ফেলছেন একদল অসহায় মানুষ।

Advertisement

নতুন পোশাক হয়েছে। সকালে সেমাই-মিষ্টি খেয়েছেন। দুপুরের খাবারে ছিল পোলাও, মাংস। রাজধানীর পাইকপাড়ার চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার বৃদ্ধাশ্রমের ১৭০ বাসিন্দার জন্য আয়োজনের কমতি নেই। অপরিচিত মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করলেও চরম অসহায়ত্ব আর একাকীত্ব কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তাদের। মুখে হাসি থাকলেও মন পড়ে আছে পরিবার পরিজনের কাছেই।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) ঈদের দিন সকালে গিয়ে দেখা যায়, বৃদ্ধাশ্রমটিতে সাজসাজ রব। শুভাকাঙ্ক্ষীদের দেওয়া পশু কাটাকাটির কাজ চলছে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে। বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের পরানো হয়েছে নতুন জামা-কাপড়। পোলাও, খাসির মাংস, সালাদ, ডিমের তরকারি সাজানো হচ্ছে প্লেটে। সবার মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে সেই খাবার। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী ও প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার তদারকি করছেন সব। সময় করে বৃদ্ধ বাবা, মায়ের সঙ্গে খুনসুটি করছেন।

Advertisement

এমন সময় মিল্টন সমাদ্দারকে উদ্দেশ্য করে লন্ডনি খালা নামের একজন বলে ওঠেন, ‘আমারে যে দেখতে আসলা না।’ জবাবে মিল্টন বলেন, ‘এলাম তো। সকাল থেকে কয়েকবার এলাম। তুমি ভুলে গেছো মা।’

jagonews24

জাগো নিউজকে মিল্টন বলেন, ‘ঈদের দিন বাবা-মায়েরা ভালো নাই। পরিবার, সন্তান, স্বজন ছেড়ে তারা আসলে ভালো নাই। তারা ভালো খাবার পেয়েছে। নতুন পোশাক পরেছে। সবদিক দিয়ে ভালো কিন্তু মনের দিক দিয়ে ভালো নাই। বৃদ্ধাশ্রমের বাবা-মাকে দেখতে কেউ আসে না। পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব কেউ আসে না। গণমাধ্যমকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী কয়েকজন আসে।’

Advertisement

মিল্টন সমাদ্দার বলেন, ‘বাবা-মা কিংবা মায়ের গর্ভে ধারণ করা সন্তানরা হয়তো আর আসবে না। আমরা অনেকের পরিবারের খোঁজ জানি, কে কোথায় আছে জানি। কিন্তু দেখা যায় মারা গেলে লাশটা নিতেও আসে না। সন্তানরা বলেন, অপেক্ষা করেন আসবো। কিন্তু ১২-১৪ ঘণ্টা পার হলেও তারা আসে না। আমরাই দাফন-কাফন করি। যারা মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আসে না, তারা কী আর উৎসবের দিন আসবে, বলেন।’

jagonews24

তিনি জানান, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহায্যে দুইটা গরু ও বেশ কিছু খাসি কোরবানি হয়েছে। বাবা-মায়েদের সকালে সেমাই-নাশতা দেওয়া হয়েছে। নতুন জামা-কাপড় দেওয়া হয়েছে।