হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ চাষে দুলালের বাজিমাত (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),হবিগঞ্জ প্রতিনিধি,শনিবার, ১০ জুন ২০২৩ : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে উত্তর হাফিজপুর গ্রামে কৃষক দুলাল মিয়ার বাড়ির পিছনের ৩০ শতক জমি হলুদ ও কালো রঙের তরমুজে দৃষ্টি কাড়ছে মানুষের।

এখানে মাচায় মাচায় ঝুলছে মধুমালা জাতের হলুদ রঙের ও ব্ল্যাক বেবী জাতের কালো রঙের তরমুজ। ফলন এতটাই ভালো হয়েছে যে, দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। আর খেতেও রসালো ও সুস্বাদু এই তরমুজ। বিক্রি করে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

Advertisement

উত্তর হাফিজপুর গ্রামে খেতে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ কচি লতাপাতার মাঝে ঝুলছে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ। ছোট-বড় তরমুজে নুয়ে পড়েছে মাচা। দেখতে যেন হলুদ ও কালোর সমারোহ। মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। পোকা দমনে ব্যবহার হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ। তাতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে না। এ তরমুজ চাষ দেখতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী। এর আগে একই কৃষক সবজি ও ধান চাষ করে হয়েছেন সফল।

তিন বছর ধরে বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শ গ্রহণ করে তরমুজের চাষ করছেন কৃষক দুলাল মিয়া।

দুলাল মিয়া জানান, এবছর তিনি প্রায় ৩০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। এখন প্রায় ১ হাজার তরমুজ আছে জমিতে। আর কয়েকদিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হবে এসব তরমুজ। তাই বর্তমানে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে দুলাল মিয়ার।

এ জমিতে তিনি মধুমালা ও ব্ল্যাক বেবী জাতের তরমুজ চারা রোপণের জন্য কিছুদূর পরপর তৈরি করেন বেড। ওই বেডে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর বীজ রোপণের স্থানে ফুটো করে তা রোপণ করেন। বীজের চারা গজালে বাঁশ, সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করেন। ছোট ছোট বাঁশের খুঁটি দিয়ে মাচায় চারা তুলে দেন। এভাবেই তিনি ক্ষেত প্রস্তুত করেছেন বলে জানান।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তরমুজ চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমান বাজারে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৭০ থেকে ১০০ টাকা। সে হিসেবে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন, আশা করছেন দুলাল মিয়া।

তরমুজ চাষে সার্বিকভাবে পরামর্শ প্রদান করায় তিনি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Advertisement

 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলে কৃষি উন্নয়ণ প্রকল্পের আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে গ্রীষ্মকালীন মাচায় দুই রঙের তরমুজ চাষ করেন কৃষক দুলাল মিয়া। দুলাল মিয়া তরমুজ আবাদ করে সফল। তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছি। দুলালের তরমুজ চাষে সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও এ জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তারাও আমার কাছে পরামর্শ চাইছেন। আমি পরামর্শ দিয়েছি। এক কথায়, হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ চাষে দুলালের বাজিমাত।

Advertisement

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ মো. আশেক পারভেজ বলেন, তরমুজ চাষ বাহুবলে ছিলো না। আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলার উত্তর হাফিজপুর গ্রামে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ চাষ করেন দুলাল মিয়া। তার জমিতে চাষকৃত হলুদ ও কালো তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। প্রমাণ হলো, হলুদ ও কালো তরমুজ চাষে বাহুবলের মাটি বেশ উপযোগী। এ জাতের তরমুজ রসালো ও সুস্বাদু।