‘মদের টাকা’ সংগ্রহ করতে শাকিলকে জবাই করে তারা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ২১ মে ২০২৩ : ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার মঠবাড়ি এলাকায় ইজিবাইক চালক শাকিল হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ মে) রাতে তাদের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা–পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

Advertisement

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাব্বির হোসেন মেহেদী (২২),  ইব্রাহিম চান (২১), জনি (২০) ও শারাফাত (২০)। পরে গ্রেপ্তার আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা সুইসগিয়ার চাকু, আসামিদের ব্যবহৃত রক্তমাখা সিএনজি ও ইজিবাইক জব্দ করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে রোববার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার জনসন রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গেল শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে স্থানীয়রা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ফোন করে জানান, মঠবাড়ী পদ্মা রেলওয়ে সেতুর নিচে সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের পরিত্যক্ত ইটের খোলার ভেতরে একটি গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। মৃতদেহটি একই ইউনিয়নের পালিরা গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে শাকিলের (১৭)। মরদেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, শাকিল দশম শ্রেণির ছাত্র। নিজের পড়াশোনা, মায়ের চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটাতে শাকিল স্কুল শেষে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইজিবাইক চালাত। গেল বৃহস্পতিবার বিকেলে ইজিবাইক নিয়ে বের হলেও রাতে আর বাসায় ফেরেনি সে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে শাকিলের বড় বোন সীমা (২৪) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

Advertisement

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িতরা নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ও সবাই মাদকাসক্ত।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, গেল বৃহস্পতিবার তারা পরিকল্পনা করেন একটা ইজিবাইক ছিনতাই করবেন। এরপর সেটির ব্যাটারি বিক্রির টাকা দিয়ে মদের পার্টি করবেন। সেদিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার ইব্রাহিম চানের সিএনজি নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাউটাইল ঘাটে ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। সেখানে কোনো ইজিবাইক না পেয়ে শরাফত ও জনি কাটাইল ঘাট এলাকা থেকে সামনে এগিয়ে গিয়ে শাকিলকে পান। শাকিল  জনির পূর্ব পরিচিত ছিল। পরে জনি, শারাফাত ও সাব্বির গাড়ি নিয়ে মঠবাড়ী পরিত্যক্ত ইটখোলায় যান। অপরদিকে ইব্রাহিম চান সিএনজি নিয়ে পিছু পিছু যান।

তারা আরও জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই শারাফাত সুইসগিয়ার দিয়ে শাকিলের গলায় টান দেন। এতে শাকিল ইজিবাইক থেকে পড়ে যায় এবং গলা চেপে ধরে চিৎকার শুরু করে। তখন জানি পেছন থেকে শাকিলের পিঠে এলোপাতাড়ি চাকু মারতে থাকেন। এরপর জনি, সাব্বির ও ইব্রাহিম চান শাকিলের মাথা ও হাত-পা চেপে ধরেন এবং শরাফাত শাকিলকে সুইসগিয়ার দিয়ে মাথার সামনে-পেছনে জবাই করে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর শরাফত, জনি ও ইব্রাহিম চান সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চলে যান। আর সাব্বির নিহত শাকিলের ইজিবাইক নিয়ে চলে যান।