কারাগারে নিয়োগ হচ্ছে ৩১০৭ জনবল

SHARE

1846কারাগারের সেবার মান বৃদ্ধি, কর্মচারীদের উদ্দীপনা বাড়ানো এবং কারা বিভাগ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তনের লক্ষ্যে ৩ হাজার ১০৭ জন জনবল নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ডেপুটি জেলার থেকে শুরু করে অধঃস্তন সব পর্যায়ে এই জনবল নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে থাকছে ১২ জন মনোবিজ্ঞানীও। কারা অধিদফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১৪ সালের কারা সপ্তাহে উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ জনবল নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে কারা অধিদফতর। সরকারি প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর কারা বিভাগের জন্য নতুন এসব পদ অর্থ বিভাগের অনুমোদন মিলেছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর হওয়ার পর পরেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এছাড়া অনুমোদন সাপেক্ষে ঢাকায় কারা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কার্যক্রম শুরু করেছে। রাজশাহীতে হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি। এর নির্মাণ প্রকল্প ইতোমধ্যে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। খুব শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে।

আগামী ২০ থেকে ২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কারা সপ্তাহ ২০১৬। সারাদেশে একযোগে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কারা সপ্তাহ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে কারা অধিদফতর।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে দেশে কারাগার রয়েছে ৬৮টি। এর মধ্যে ধারণ ক্ষমতা মোট ৩৪ হাজার ৭৯৬ জন। এর বিপরীতে বর্তমানে ৭১ হাজার ১০৫ জন বন্দী রয়েছে। এতো সংখ্যক কারাবন্দীর জন্য যে পরিমাণ জনবল রয়েছে তা খুবই কম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৭৫০ বন্দীর জন্য কারারক্ষী রয়েছে মাত্র ১৩ জন। সে জন্য জনবল নিয়োগের বিষয়টি আলোচিত হয়ে আসছে আরো ১০ বছর ধরে। তবে গত বছর জনবল নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সবুজ সংকেত দেয়ার পর নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। আগামী এপ্রিল ও মে নাগাদ এই জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে কারা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল ফজলুল কবীর বলেন, মানুষের মধ্যে কারাগার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার প্রচার রয়েছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই। কারাগারকে আমরা সংশোধানাগারে রূপান্তর করতে চাই।

তিনি বলেন, কেউ বন্দীদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর যেন আবারো অপরাধে না জড়ায় সেজন্য বিশদ পরিকল্পনা রয়েছে কারা অধিদফতরের। এ জন্য সেবার মান বৃদ্ধি ও কর্মচারীদের দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তনের জন্য তিন হাজারের বেশি জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ডেপুটি জেলার থেকে শুরু করে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পর্যন্ত রয়েছে।

কারা অধিদফতরের এ অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আরো বলেন, বর্তমানে কারাগারে বন্দীদের মধ্যে ৪৩৮ জন মানসিক রোগী ও ৫ হাজার ৯৭০ জন মাদকাসক্ত রয়েছে। তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে এবং অপরাধী কারাবন্দীরা যেন মুক্তি পেয়ে আবারো অপরাধে না জড়ায় সেজন্য ১২ জন মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ দেয়া হবে। তারা নিয়মিত মানসিক রোগী ও মাদকাসক্ত কারা বন্দীদের কাউন্সেলিং করবেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী অর্থবছরেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।