মুখ খুললেন মুরাদের সেই বিতর্কিত লাইভের উপস্থাপক

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ : সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ। নাহিদ রেইন্স নামের একটি ইউটিউবারের লাইভে গত ১ ডিসেম্বর বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন মুরাদ। এরপর সেই লাইভ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

মুরাদ হাসানের করা আপত্তিকর মন্তব্য মেনে নিতে পারেননি অনেকে। সেই লাইভের উপস্থাপক নাহিদকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। ডা. মুরাদকে না থামিয়ে উসকানি দিয়েছেন নাহিদ- এমন কথাও বলছেন অনেকে। এ জন্য তারও বিচারের দাবি তুলেছেন কেউ কেউ।

এসব ঘটনায় এবার মুখ খুলেছেন ইউটিউবার নাহিদ রেইন্স। যার আসল নাম নাহিদ হেলাল। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন নাহিদ। ব্যাখ্যা দিয়েছেন লাইভসহ বিভিন্ন বিষয়ের।

নাহিদ বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলার জন্য ডা. মুরাদ হাসানকে অতিথি করেছিলাম। বাংলাদেশে পাকিস্তানপন্থী মানুষ, সাপোর্ট, হাফ পাস আন্দোলন, বিএনপি-জামায়াত শিবিরের রাজনীতি, পেট্রোল বোমাবাজি নিয়ে কথা বলার উদ্দেশ্যে ছিল। বিএনপি’র ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। এরকম লাইভ শোতে বিপরীতে গেস্টকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আমরা জানি মুরাদ হাসান বেশি হাইপার থাকেন। উনি যে উক্তিগুলো করেছেন সেটা উনার নিজস্ব মতামত। আমি মনে করি এগুলো আমাদের নারী সমাজের জন্য খুবই লজ্জাজনক, অপমানজনক ছিল। আমি এগুলো সমর্থন করি না।

তিনি আরও বলেন, আমি জানতাম তার (মুরাদ হাসান) ওই স্টেটমেন্টের কারণে বড় কিছু হতে পারে। সবার রিয়েলাইজেশন দেখে মনে হয়েছে, উনাকে সরি বলা উচিত। সেই লাইভের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাকে সরি বলানোর জন্য আরেকটি লাইভের আয়োজন করি। এ লাইভে বসার আগে তাকে প্রায় ৩০ মিনিট বোঝানো হয়। কিন্তু উনি সরি বলেননি, বরং আমি সরি বলেছি। এরপরও লাইভটি ভালো ছিল না। তাই ডিলেট করে দিয়েছি।

এমন মন্ত্রীকে চাইলেই কথার মধ্যে থামানো যায় না উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, আমি চেষ্টা করেছি উনি ভালো কিছু বলুক। কিন্তু আমি তাতে ফেল করেছি। এই ধরনের অনলাইন শোতে এমন কেউ থাকলে তাদের কন্ট্রোল করা খুবই কঠিন। শিষ্ঠাচার সব জায়গায় থাকতে হবে। আমি ব্যর্থ হয়েছি। উনি প্রমিজ করেছিলেন সরি বলবেন। কিন্তু বলেননি।

এদিকে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ডা. মুরাদ হাসান। তার পদত্যাগপত্র সারসংক্ষেপ আকারে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে বিকেল ৩টায় প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তার পক্ষে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দফতরে জমা দেন। সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন। এদিন, দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ হাসান।

এদিকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বক্তব্য সরকার ও দলকে বিব্রত করেছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।

এছাড়া ডা. মুরাদ হাসানের সুস্থতা কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (মুরাদ হাসান) আমাকে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি তার সুস্থতা কামনা করি। আমি তার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কমনা করি।’