রংপুর না বরিশাল, কে যাবে ফাইনালে

SHARE

732বিপিএলের নতুন নিয়ম। আইপিএলের আদলে। ফাইনালে ওঠার লড়াইতে সেমিফাইনাল হবে না। হবে কোয়ালিয়ার এবং ইলিমিনেটর রাউন্ড। সে হিসেবে কিন্তু বেঁচে গেছে রংপুরই। নতুন নিয়মের কারণে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে গেলেও ফাইনালে ওঠার সুযোগ পচ্ছেন রংপুর রাইডার্স। অথচ, এই একই নিয়মের কারণে জিতেও সরাসরি ফাইনালে খেলতে পারছে না বরিশাল বুলস।

কারণ তো সেই নিয়মেই লেখা। প্রথম কোয়ালিফায়ারে জয়ী দল সরাসরি ফাইনালে। পরাজিত দল অপেক্ষায় থাকবে ইলিমিনেটর রাউন্ডে জয়ী দলের মোকাবেলা করার জন্য। যেটা হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। সেই ম্যাচটিই আজ। সন্ধ্যা ৬টায়, মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। মুখোমুখি রংপুর রাইডার্স এবং বরিশাল বুলস।

রংপুর-বরিশাল না বলে যদি বলা হয়, মুখোমুখি সাকিব-গেইল, তাহলে ম্যাচটার জৌলুস অনেক বেড়ে যায়। দর্শকদের কাছে কাটতিও বেড়ে যাবে নিশ্চিত। কারণ, ক্রিস গেইল হলেন সারা বিশ্বে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা। আর সাকিব আল হাসান হলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দুই সেরা ক্রিকেটারের দ্বৈরথ নিশ্চিতভাবেই জমিয়ে তুলবে আজকের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার রাউন্ডের ম্যাচটি।

তবে ব্যাক্তিগত লড়াই চাপিয়ে আজকের এই ম্যাচটি কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় লড়াই’ই। ফাইনালে যাওয়ার শেষ সোপান। ফাইনালের একটিস্থান আগেই নিশ্চিত করে রেখেছে মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অপর স্থানটির জন্যই লড়বে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স এবং মাহমুদুল্লাহ ও ক্রিস গেইলদের বরিশাল বুলস।

শেষ পর্যন্ত কে যাবে ফাইনালে?
উত্তরটা এখনই দেয়া মুশকিল। কারণ এমনিতেই ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। তারওপর, এটা টি-টোয়েন্টি। ধারনারও অতীত যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এই যেমন প্রথম কোয়ালিফায়ারে ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে এবং অধিনায়কত্বে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ সাকিব আল হাসান। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমন একটা বাজে দিন খুঁজতে বেশ চিন্তা করতে হয়েছে সাকিবকে। পরে জানালেন, ২০১২ সালে কোন একটি ম্যাচে এতটা বাজে খেলেছিলেন তিনি।

একই সঙ্গে বলা যায় ক্রিস গেইলেরও কথা। প্রথম দুই ম্যাচে দারুন ফ্লপ। পরের ম্যাচেই জ্বলে উঠেছিলেন দানবীয় রূপে। ৪৭ বলে খেলেছিলেন ৯২ রানের ইনিংস। শনিবারও ইলিমিনেটর রাউন্ডে ঢাকার বিপক্ষে প্রথম ১২ বলেই তুলে ফেলেছিলেন ৩০ রান। এরপর আরও ৭ বল খেলে করেন মাত্র ১ রান। শেষ পর্যন্ত মুস্তাফিজের অবিশ্বাস্য এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন তিনি।

সাকিবের ভাষায়, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনই। খারাপ দিন আসতেই পারে।’ তবে মুখোমুখি দুই দলের ভালো দিন একসঙ্গে হবে না যে এটা তো নিশ্চিত। এক দলের খারাপ দিন হবেই। সেই দলটা আজ কোনটি?

খারাপ দিনের কথা এ কারণেই বলা, সমরে-শক্তিতে কোন অংশেই কম নয় বরিশাল-রংপুর। দু’দলেই রয়েছে সেরা ক্রিকেটার। নিজেদের সেরাটা খেলেই তারা বিপিএলের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। তবে, সাকিব আল হাসানের দলের জন্য প্লাস পয়েন্ট হলো, তারা কোন এক ম্যাচে খারাপ খেললে, সেটা পরের ম্যাচেই পুষিয়ে দেন। প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারের পর সাকিব নিজেই বলেছেন, ‘পরের ম্যাচে ভুলগুলো আর করতে চান না।’

যদি তাই হয়, সঙ্গে সাকিবের নিজের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বের ধার যদি শানিত আকারেই দেখা যায় এই ম্যাচে, তাহলে নিশ্চিত বলা যায়, বিপদ আছে বরিশাল বুলসের জন্য। যদিও দলটিতে রয়েছে ক্রিস গেইলের মত বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। সাব্বির রহমান রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ রয়েছেন ফর্মে। কেভন কুপার অলরাউন্ড ণৈপুন্য দিয়ে ঘুরিয়ে দিতে পারেন ম্যাচের মোড়। আর আল আমিনের মত পেসার তো যে কোন মুহুর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপ।

সবশেষে কিন্তু একটা কি ফ্যাক্টর থেকেই যাচ্ছে। টস। এই একটি বিষয়ই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে পঞ্চাশ ভাগ। কারণ, ইদানিং একটা বিষয় দাঁড়াচ্ছে, টস জয় মানেই ম্যাচ জয়। তাহলে, টস জয়ের ভাগ্যটা আজ কার হবে? সাকিব আল হাসানের নাকি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের?