দ্বিতীর দফায় সিএসইর এমডির পদত্যাগ

SHARE

564প্রথম দফা পদত্যাগের সপ্তাহ না পেরুতেই দ্বিতীর দফায় পদত্যাগ করলেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওয়ালি উল মারুফ মতিন। রোববার তিনি পর্ষদ চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে ৩০ নভেম্বর প্রথম দফায় পদত্যাগ করেন ওয়ালি-উল মারুফ। তবে শেষ পর্যন্ত আলোচনায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

সূত্র বলছে, রোবারের পদত্যাগের পর এরই মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ সভায় পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সিএসইর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ।

তবে সূত্র বলছে, প্রথম দফায় পদত্যাগপত্রে তিনি পরিচালনা পর্ষদের হস্তক্ষেপের কথা জানান। কিন্তু রোববার অবশ্য পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণ বলে উল্লেখ করেছেন।

এখন গৃহীত পদত্যাগপত্র চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আগামী দুই এক দিনের মধ্যে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) পাঠানো হবে বলে সিএসই সূত্রে জানা গেছে।

পদত্যাগপত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে সিএসইর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, এমডি দ্বিতীয়বারের মত পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। প্রথমবারের পদত্যাগের সময় পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্যদের হস্তক্ষেপসহ অভিযোগগুলো প্রত্যাখান করে এবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করছেন। বিষয়টি নিয়ে পর্ষদ সভায় আলোচনা হয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানিক কিছু নিয়মনীতি রয়েছে সেই অনুসারে বিষয়টি সুরাহা হবে।

এ বিষয়ে সিএসইর পরিচালক শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, জরুরি বোর্ড সভায় এমডির পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, এমডি সাহেব অনেক প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে সিএসইতি যোগদান করেন। কিন্তু সিএসইর প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় তিনি পদত্যাগ করছেন। আমরা চেয়েছিলাম সম্মানের সহিত বিদায় দিতে। তিনি সেই সুযোগ টুকুও গ্রহণ করেননি।

সূত্রে জানা গেছে, এমডির কর্মকাণ্ডের প্রতি সন্তষ্ট ছিল না বোর্ড। নিয়োগ লাভের আগে সিএসইর উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও সেগুলো বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হন তিনি। ব্যর্থতা আড়াল করতে এমডি পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেন পরিচালকরা। তাই পরিচালকদের চাপেই পদত্যাগে বাধ্য হয়েছে ওয়ালি-উল-মারুফ।

এদিকে বিএসইসি ও সিএসইর একাধিক সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মতপার্থক্য ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্যদের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে তিনি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

পদত্যাগপত্রে মারুফ মতিন বলেন, পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্যরা এমডির বিভিন্ন সিদ্ধান্তে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছেন, যা মেনে নেওয়া কঠিন। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন পরিপন্থী এ ধরনের কর্মপরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের কারণে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগগুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তিনি কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারছেন না।

উল্লেখ্য, স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনাকে মালিকানার প্রভাবমুক্ত করতেই ২০১০ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনাকে আলাদা (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) করা হয়েছিল। স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যাতে ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়ে ডিমিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইনে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ক্ষমতাও বাড়ানো হয়।

২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর সিএসইর এমডি ৩ বছরের জন্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।