সাঈদুর রহমান রিমন,১৭ জুন : রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) এক কর্মকর্তা ব্যক্তিগত জেলখানা বানিয়ে ধরো-ছাড়ো বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে গড়ে দৈনিক ৪০/৪৫ জনকে ধরে এনে টাকা হাতিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইদানীং ঈদ সামনে রেখে এই বাণিজ্য তীব্রতর হয়েছে বলে জানা যায়।
অভিযোগ আছে, টাকা আদায়ের জন্য ধৃত ব্যক্তিদের ওপর দৈহিক নির্যাতনও চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আরএনবির চিফ ইন্সপেক্টর (সিআই) জিহাদুর রহমান জাহিদ এই জেলখানার উদ্ভাবক ও নিয়ন্ত্রক। তিনি গোটা বিমানবন্দর এলাকা জুড়ে নিজস্ব সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। অফিসের স্টোর রুমে আলাদা গেট লাগিয়ে ‘হাজতখানা’ বানিয়ে, রান্নাঘরের পাশেই গড়ে তুলেছেন টর্চার সেল। যখন যাকে খুশি ধরে এনে হাজতখানায় ঢোকানো হচ্ছে। আর লেনদেন শেষে ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে। ধৃতরা নির্যাতিত হয়ে দ্রুত স্বজন পরিজনদের ফোন করে বিকাশে টাকা আনিয়ে সিআইর দাবি পূরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সিআইর চাঁদাবাজির আওতায় যাত্রী থেকে শুরু করে ভিক্ষুক পর্যন্ত কারও রেহাই নেই। স্টেশন ও আশপাশ এলাকায় ভিক্ষা করতে হলেও আগাম ১২০ টাকা চাঁদা দিয়ে তবেই ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে পারে। তার ধরো-ছাড়ো বাণিজ্যের কাজে ‘ডান হাত’ ‘বাম হাত’ হিসেবে কাজ করছে ২ ব্যক্তি। এদের একজন বহু মামলার আসামি মলম পার্টির সর্দার আক্তার হোসেন। অন্যজন বিমানবন্দর এলাকার প্রতাবশালী টয়লেট হান্নান। এসব ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সিআই জিহাদুর রহমান জাহিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একটি চাঁদাবাজচক্র মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আমাকে বিদায় করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি দাবি করেন, প্রতিদিনই ৭/৮ জন অপরাধীকে আটক করে আদালতে চালান দিয়ে থাকেন তিনি— ফলে বিমানবন্দর এলাকা এখন মাদকমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বিমানবন্দর রেলস্টেশনে অবৈধ জেলখানা স্থাপন করে দেদার ধরো-ছাড়োর বাণিজ্য চালানো নিয়ে আরএনবির চিফ কমান্ড্যান্ট আনোয়ার হোসেনের দফতরে বার বার যোগাযোগ করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সৌজন্যে :