https://youtu.be/PvkyggyKNjE?si=lE4jz-NVofyoFnwR
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ময়মনসিংহের ভালুকা পৌর শহর প্রতিনিধি, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫ || আষাঢ় ৩১ ১৪৩২ :
যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সে আমার স্ত্রী-সন্তানকে মারল, আমি তা মেনে নিতে পারছি না। তারা তো কোনো দোষ করেনি। কেন আমাকে নিঃস্ব করে দিলি ভাই? আমি কাদের নিয়ে বাঁচব। আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন রফিকুল ইসলাম।
Advertisement
গতকাল সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের ভালুকা পৌর শহরের পনাশাইল এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ময়না আক্তার (২৫), তাঁদের মেয়ে রাইসা আক্তার (৭) ও ছেলে নীরব হোসেনের (২) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ভাড়া বাসার দুটি রুমে স্ত্রী-সন্তান ও তাঁর ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে নিয়ে বসবাস করতেন রফিকুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই একটি হত্যা মামলার আসামি। তাকে আড়াই মাস আগে ৪০ হাজার টাকা দেনা করে জেল থেকে ছাড়িয়ে এনেছি। তারপর সে আমার সাথে থেকে অটোরিকশা চালাত। এক রুমের বাসায় থাকতে কষ্ট হতো। তাই দেড় মাস আগে পনাশাইল এলাকায় দুই রুমের ভাড়া বাসা নিই। এক রুমে আমি পরিবার নিয়ে আর অন্য রুমে সে থাকত। মাঝেমধ্যে খাওয়াদাওয়া নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হতো। আর কোনো সমস্যা ছিল না। গতকাল রাত ৮টার সময় আমি ডিউটিতে চলে যাই, পরে সাড়ে ১০টার দিকে বাসায় কল দিলে ময়নার নম্বর বন্ধ পাই। তারপর নজরুলের নম্বরে কল দিয়ে ময়নার সাথে কথা বলি। আজ সকালে বাসায় এসে দরজা বন্ধ পাই এবং গেটও তালাবদ্ধ ছিল। পরে বাসার মালিক নিয়ে তালা ভেঙে দেখি তাদের রক্তাক্ত মরদেহ। আমার ভাইকে আর খুঁজে পাইনি। তার মোবাইলও বন্ধ।
‘ভাই এমন করবে জানলে জেল থেকে আমি বের করতাম না। কেন আমার এমন ক্ষতি করলি ভাই।’
নিহত ময়নার বোন আছমা আক্তার বলেন, ‘খবর শুনে এসে দেখি, আমার বোন ও তার দুই সন্তানের মরদেহ খাটের ওপর পড়ে রয়েছে। আমার বোনজামাই খুবই ভালো মানুষ। ৯-১০ বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও কোনো দিন ঝগড়া হয়নি। নজরুল আমার বোন, ভাগনে-ভাগনিকে মেরেছে। তা না হলে সে পলাতক কেন?’
Advertisement
বাসাটির মালিক হৃদয় হাসান হাইয়ুম বলেন, ‘দেড় মাস আগে রফিকুল বাসা ভাড়া নিয়েছে। এক রুমে সে তার পরিবার নিয়ে এবং অন্য রুমে তার ভাই নজরুল ইসলাম থাকত। তবে তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য দেখিনি। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা-ও বলতে পারছি না।’
বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে ভালুকা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনতোষ সাহা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত ছাড়া এর বেশি কিছু বলা যাবে না। নজরুলকেও ধরার চেষ্টা করছি।’
Advertisement
https://www.facebook.com/share/p/1NT3RTcPAN
রফিকুল ইসলাম নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার সেনের বাজার গ্রামের সন্তু মিয়ার ছেলে। আর ময়না ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের পায়লাবর চৌরাস্তা গ্রামের আফতাব উদ্দিনের মেয়ে। রফিকুল ইসলাম ভালুকার রাসেল স্পিনিং মিলে শ্রমিকের চাকরি করেন।