
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,বিনোদন প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার ২৭ নভেম্বর ২০২৫ || অগ্রহায়ণ ১২ ১৪৩২ :
সাদাকালো ছবিটিতে হঠাৎ করেই চোখ যায় সংখ্যাটির দিকে। মুখের বাম পাশে লেখা ‘৯’। সংখ্যাটি লিখে অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘সংখ্যা থেকে কণ্ঠে—চলুন আমাদের গল্পটা শোনাই। আপনার নম্বরের গল্প বলেন, আরও জোরে আওয়াজ তোলেন। এর মধ্যে মানুষ হয়তো শুধু একটি সংখ্যা দেখবেন, কিন্তু আমি দেখি আমার সহ্য করা প্রতিটা কষ্ট আর জয় করে ওঠা প্রতিটা মুহূর্ত। আপনার সংখ্যাটিও শেয়ার করেন, আসুন আমাদের ডিজিটাল সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরাই একসঙ্গে দাঁড়াই।’
Advertisement
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী অভিনয়শিল্পীদের প্রায়ই নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। যার কোনো প্রতিকার ছিল না। তারকাদের এই সহিংসতা দীর্ঘদিন ধরেই সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু দিন দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতা বেড়েই চলেছে। এই সহিংসতা আর নয়। এর বিরুদ্ধেই তিশার প্রতিবাদ। ডিজিটাল এই হয়রানির প্রতিবাদ জানাতেই এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন অভিনয়শিল্পী, গায়িকা ও কলাকুশলীরা।

অভিনেত্রী রুনা খান ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার সংখ্যা ২৪। আজ আমি যতটা হয়রানি মন্তব্য পেয়েছি, এ সংখ্যাই এটি। কেউ হয়তো এটাকে শুধু একটি সংখ্যা মনে করবে—কিন্তু আমার জন্য এটা হলো প্রতিটি মুহূর্ত যা আমি সহ্য করেছি, প্রতিটি ক্ষত যা আমি বহন করেছি, এবং সেই প্রতিটি পদক্ষেপ যা আমাকে এগিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। এবার তোমার সংখ্যা বলো।’
Advertisement
প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

আজ বৃহস্পতিবার রুনা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে আমি যেটা অভিজ্ঞতা করেছি, আমাদের দেশের সব স্তরের নারীদের সামাজিক, পারিবারিকভাবে বা রাস্তাঘাটে চলার পথে বিভিন্ন সময়ই হেনস্তা, হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়। এই হেনস্তার পরিমাণ এখন আরও বেড়েছে। বেশ কয় বছর ধরে এটি সামাজিক জীবন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে এসেছে। এই সংখ্যা আগের চেয়ে এখন বেশি। এটা দিন দিন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছি।’





অনলাইন সহিংসতা যেন কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। এই নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে শুধু নারী শিল্পীরাই হয়রানির শিকার হচ্ছেন, বিষয়টা সেটা নয়। এখানে বেশির ভাগ দেশের নারীরাই নিরাপদ বোধ করছেন না।

নিজের একটা মত প্রকাশ করলেই নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। শিল্পীরা যে সংখ্যা প্রকাশ করেছেন, সেটার চেয়েও কেউ কেউ আরও বেশি সহিংসতার শিকার হন। যে কারণে আমার কাছে মনে হয়েছে এর বিরুদ্ধে সবার মানুষ হিসেবে সচেতন হয়ে প্রতিবাদ জানানো দরকার।’
প্রতিবাদের অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘তারা বলেছিল, “এটা তো শুধু একটা কমেন্ট। উপেক্ষা করে যাও।” আমি উপেক্ষা করেছি ১ বার, ২ বার, ৩ বার নয় বহুবার। কিন্তু এটা থামেনি। এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। এটাই আমার গল্প। এবং এটার শুরুটা এবার নম্বর দিয়ে।’

অভিনেত্রী তিশা, রুনা খান বা মৌসুমী হামিদই নন, এভাবে সংখ্যা লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিনয়শিল্পী আশনা হাবীব ভাবনা, শবনম ফারিয়া, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, গায়িকা সাজিয়া সুলতানা পুতুলসহ অনেকে। বিভিন্ন সময় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়াকে দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানির শিকার হতে। নানা সময় তিনি প্রকাশ্যেও প্রতিবাদ করেছেন। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন ট্যাগ লাইন, ‘তোমার নম্বরের গল্প বলো, আরও জোরে আওয়াজ তোলো।’ এই অভিনেত্রীর হাতে লেখা ১০০০। যার অর্থ তিনি প্রতিদিন হাজারবার হয়রানির শিকার হন।
Advertisement

এ ছাড়া ফেসবুকে পোস্ট করে অনেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন—তিনবার হয়রানির কথা জানিয়েছেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, ভাবনা লিখেছেন ৯৯–এর অধিকবার ডিজিটাল মাধ্যমে হয়রানির শিকার হন। গায়িকা পুতুল লিখেছেন ৯। অভিনেত্রী ও মডেল মারিয়া নূর লিখেছেন ৭, নাজিবা বাশার লিখেছেন অসংখ্যবার তাঁকে হয়রানির শিকার হতে হয়। অভিনেত্রী মৌসুমী নাগ লিখেছেন ৩১ বার। তারকাদের এই আন্দোলনের নাম ‘মাই নম্বর অ্যান্ড মাই রুলস।’




