ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,শুক্রবার ০৭ নভেম্বর ২০২৫ || কার্তিক ২৩ ১৪৩২ :
চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছেন সরোয়ার হোসেন বাবলা। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন। দীর্ঘ দেড় দশক ধরে চট্টগ্রামে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তিনি।
Advertisement

একসময় ‘এইট মার্ডার’-এর আসামি ও সাজ্জাদ হোসেন খানের সহযোগী হিসেবে আলোচনায় আসেন বাবলা। পরে গুরু সাজ্জাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিলে আলাদা দল গঠন করেন তিনি। সেই সময় সাজ্জাদের আরেক সহযোগী ছোট সাজ্জাদ তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। বড় সাজ্জাদের নির্দেশে বাবলার ওপর একাধিকবার হামলা চালানো হয়। প্রতিবারই বেঁচে গেলেও বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়, ঘটনাস্থলেই মারা যান বাবলা।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের হাত ধরে রাজনৈতিক মঞ্চে জায়গা করে নেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের বাবলা। এর আগে সাজ্জাদ হোসেনের হাত ধরে বাবলা ও তার সহযোগী নুরুন্নবী ম্যাক্সন চট্টগ্রামের অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। আধুনিক অস্ত্র হাতে ত্রাস ছড়ানো ম্যাক্সন ২০১১ সালের জুলাইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল থেকে গ্রেপ্তার হন। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বায়েজিদ এলাকা থেকে বাবলাকে আটক করে পুলিশ।
তাদের কাছ থেকে একটি একে-৪৭ রাইফেল, দুটি পিস্তল, একটি এলজি, দুটি ম্যাগাজিন ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করা হয়। ২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা কাতারে চলে যান এবং সেখান থেকেই চাঁদাবাজি চালাতেন বলে পুলিশের অভিযোগ। কাতারে মারামারির ঘটনায় এক মাস সাজা খাটার পর ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাবলাকে দেশে ফেরত পাঠায় কাতার পুলিশ।
ঢাকায় নেমেই বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এরপর বায়েজিদ থানার খন্দকীয়া পাড়ায় বাবলার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩০ রাউন্ড গুলিসহ একটি একে-২২ রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করা হয়। প্রায় চার বছর কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হয়ে ফের আলোচনায় আসেন তিনি। গত বছরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আবারও গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্ত হন বাবলা।
Advertisement
প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

মুক্তির পর বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন তিনি। কারাগারে থাকাকালে চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে আরও ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন বাবলা।
মাত্র এক মাস আগে বিয়ে করেন বাবলা। তার বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ ও আবু সুফিয়ানসহ আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা। বিভিন্ন সমাবেশ ও কর্মসূচিতে তাদের পাশে দেখা গেছে বাবলাকে। বুধবার বিকেলে বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এরশাদ উল্লাহ টার্গেট ছিলেন না; টার্গেট ছিলেন সরোয়ার বাবলা। তাকে নিশ্চিতভাবে হত্যা করার জন্যই গুলি চালানো হয়। সরোয়ারের বিরুদ্ধেও অনেক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
Advertisement
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি বিএনপির বিষয় নয়। প্রার্থীর প্রচারণায় শত শত মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। সরোয়ার সেখানে অংশ নিলেও এটি দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের পূর্ববিরোধের জের।



