(ভিডিও) উপ-উপাচার্যের গাড়ি লক্ষ্য করে ‘ভিক্ষা’ দিলেন শিক্ষার্থীরা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম ((ভিডিও),রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,রোববার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ||  আশ্বিন ৬ ১৪৩২ :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে উপ-উপাচার্যের গাড়িতে কয়েন ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রশাসন ভবন-১ এর সামনে এ ঘটনা ঘটে।

 

 

জানা গেছে, বেলা আড়াইটার দিকে প্রশাসন ভবন-১-এর সামনে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করেন অনশনরতসহ আন্দোলনকারী একদল শিক্ষার্থী। উপ-উপাচার্য তাদের সঙ্গে কথা বলতে আসলে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে টাকা ও কয়েন ছুড়ে মারেন। এ সময় তারা ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

Advertisement

আবশ্যক

প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

 

অনশনরত শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম বলেন, “আমরা মৃত্যু পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। কাফনের কাপড় গায়ে দিয়ে এখানে বসেছি। এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমরা এক ফোঁটা পানিও মুখে নেব না।”

সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “রাকসুর আমেজে আবারো পোষ্য কোটা ফিরিয়ে এনে রাকসু বানচালের অপচেষ্টা চলছে। তারা মূলত রাকসুকে জিম্মি করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন বলেন, “পোষ্য কোটা সংক্রান্ত একটা মামলা হাইকোর্টে তালিকাভুক্ত হয়েছে। আমাদের ইতোমধ্যে উকিল নোটিশের উত্তরও দিতে হয়েছে। এটাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। আমরা তো আইনের বাইরে যেতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার জন্যই সব মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “পোষ্যকোটার বিষয়তো তো আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত না, প্রশাসনের সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আমাকে বাসায় যেতে দিবে না, খেতে দিবে না এমন আন্দোলন আমি কখনো দেখিনি। এটা কি ধরণের আন্দোলন?”

 

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভর্তি কমিটির সভায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর থেকেই বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ঘোষণার পরপরই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলমান ছিল। এতে নতুন বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

 

ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জোহা চত্বরে এক সমাবেশ করেন তাঁরা ৷ এক ঘণ্টার বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম কাফনের কাপড় পরে এককভাবে আমরণ অনশনে বসেন। পরে আরো আট শিক্ষার্থী একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে যোগ দেন। তারা হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সজিবুর রহমান, সমাজকর্ম বিভাগের আরিফ আলভি, আবু রাহাদ ও সৈয়দ ইসপাহানী, ফলিত গণিত বিভাগের তৌফিকুল ইসলাম, আরবি বিভাগের রমজানুল মোবারক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাজমুল হক আশিক এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রেদোয়ান আহমেদ রিফাত।

Advertisement

 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা। তারা ব্যর্থ হয়ে ফিয়ে যাওয়ার পরই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিতে ভিজে অনশন কর্মসূচি পালন করায় দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য রাবি মেডিকেলে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।

উপ-উপাচার্যের গাড়ি লক্ষ্য করে ‘ভিক্ষা’ দিলেন শিক্ষার্থীরা