পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি, রোববার , ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ সফর ১৪৪৭ :
সিলেটের সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনের যোগসাজশ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বদলীয় ঐক্যের কারণে প্রশাসনের নিশ্চয়ই যোগসাজশ ছিল। তা না হলে তারা এখন কীভাবে বের করে যে পাথরগুলো কোথায়? আবার নীরবতাও ছিল, হয়তো তারা অত ঝুঁকি নিতে পারেনি।
তিনি জানান, সরকারের কাজ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও মাঠপর্যায়ে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রশাসনের। ইতোমধ্যেই ১৭টি স্থানে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই ফিল্ড পরিদর্শনে যেতে হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান অভিযোগ করেন, তার ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের ওপর হামলার পরই তিন দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে সব স্টোন ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ ও পরিবহন ধর্মঘটের হুমকিতে আবারও পাথর উত্তোলনের দাবি ওঠে।
Advertisement
তিনি বলেন, আজ মানুষ তার শক্তি দেখিয়েছে। লুটেরা চক্রের বিরুদ্ধে জনগণ দাঁড়ালে, রাজনৈতিক শক্তি যতই সমর্থন দিক না কেন, মানুষের শক্তিই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়।
পাথর ও বালু ইজারা দেয়া মূলত খনিজ সম্পদ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাজ বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, জাফলং ও পিয়াইন নদী ২০১১ সালে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিকাল এরিয়া ঘোষণা হওয়ার পর সেখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ছিল। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ওই দুই নদীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর লিজ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট নীতি দিয়েছি- এই ১৭টি স্থানে পাথর তোলা যাবে না। বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রশাসনের। কিন্তু যখন দেখি তারা পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তখন তাদের সাহস জোগাতেই মাঠে যাই। ফেরার পথে আমাদের গাড়ি লক্ষ্য করে অশ্লীল বিক্ষোভ হয়।
ঘটনার পর এক রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কার করে। তিনি মনে করেন, প্রতিবাদ আরও জোরালো হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।
পরিবেশ উপদেষ্টা প্রশাসনের যোগসাজশ ও দায়িত্বহীনতার বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, পাথর লুটের দায় আমাকে দেবেন না। এটি আমার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, তবে পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে আমি কাজ করেছি। প্রকৃত দোষীদের তালিকাভুক্ত করতে হবে।