ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের শিকার প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন হয়ে উঠেছেন যেন নির্যাতিত মানুষের কণ্ঠস্বর। নির্যাতিত হওয়ার পর ভেঙে পড়লেও পরিবারের, বিশেষ করে তাঁর বাবার প্রেরণায় ঘুরে দাঁড়ান ফুলপরী। নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান লিখিতভাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সহপাঠীদের সহযোগিতা পাচ্ছেন তিনি।
(পাবনার আটঘরিয়ায় নিজ বাড়িতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন, তাঁর মাসহ পরিবারের সদস্যরা সমকাল)
ফুলপরী সমকালের কাছে নির্যাতনের ঘটনার পাশাপাশি নানা বিষয় তুলে ধরেন। এ ঘটনায় চারটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে একই সঙ্গে। এখন পর্যন্ত তদন্ত নিয়ে সন্তুষ্ট তিনি। দ্রুত তদন্ত শেষে দোষী সবার শাস্তি নিশ্চিতের দাবির কথাও বলেছেন।
ফুলপরীর বাড়ি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার শিবপুরে। সেখানে তাঁর বাবা-মা ও দুই ভাই থাকেন। এক বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। বড় ভাই হযরত আলী লেখাপড়া শেষ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছোট ভাই চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তাঁদের পরিবার এলাকার অনেকের কাছেই অনুকরণীয়।

বাবা ভ্যানচালক আতাউর রহমান ছেলেমেয়েকে কষ্ট বুঝতে দেন না সহজে। তাই ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেদের পায়ে দাঁড়াবে- এই চিন্তা থেকেই যা আয় করেন এর বেশির ভাগ খরচ করেন শিক্ষার পেছনে।
আতাউর রহমান এমন নির্যাতনের ঘটনায় প্রথমদিকে বেশ ভেঙে পড়েন। পরে সাহস দেন মেয়েকে, নিজেও শক্ত হন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে মেয়েকে অভিযোগ দিতে সাহস দেন তিনি। আর এই সাহসেই ঘুরে দাঁড়ান ফুলপরী।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুলপরী সমকালকে জানান, ‘একাধিক তদন্ত দল তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে, তিনি তাদের বিস্তারিত জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তদন্ত দল যেভাবে কাজ করছে তাতে তিনি সন্তুস্ট। তবে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির ওপর তার তেমন কোনো আস্থা নেই।’ ফুলপরী বলেন, অন্যায় যা হয়েছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন, সব কথা প্রকাশ্যে বলা কঠিন। অন্যায় যার সঙ্গেই হোক, এর প্রতিবাদ চলতে থাকবে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করে যাবেন এখন থেকে। তাঁর নিজের সঙ্গে যা হয়েছে, তা যে কারও সঙ্গে হতে পারে। চুপ থাকলেই তারা সাহস পেয়ে যাবে। সাহস করে প্রতিবাদ করলে তখন সবাই এগিয়ে আসে।
হলগুলোতে ছাত্র সংগঠনগুলোর যে অলিখিত খবরদারি থাকে, সেটাও বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে শিবপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি সমকালকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের নামে তাঁর ওপর বর্বর নির্যাতন করা হয়েছে। চিরতরে র্যাগিংয়ের অবসান চান তিনি ও তাঁর পরিবার। ফুলপরী বলেন, ‘আমার ওপর যে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়, অথচ আমার বিন্দুমাত্র দোষ ছিল না। বিকৃত সুখ পেতে এ ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। আমার জামা ওপরের দিকে তুলে ধরতে বাধ্য করা হয় এবং তারা ভিডিও করে। এটা কোন ধরনের র্যাগিং?’ তাঁকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ২০৬ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে গণরুমে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। তারা চড়-লাথি মারে। সবার পায়ে ধরলেও তারা বলে র্যাগিং কাকে বলে দ্যাখ, তুই বেশি বেড়ে গেছিস। রাত ১১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তারা নির্যাতন চালায়। পিন দিয়ে চোখ ফুটো করার চেষ্টা করে। কান্না করলে মুখের মধ্যে গামছা এঁটে দেয়। এ ছাড়া বাজে ভাষা ব্যবহার করে প্রভোস্ট স্যারসহ বিভিন্ন জনের নামে কথা বলতে বাধ্য করে এবং ভিডিও করা হয়। তারা কথা বললেও মারে, না বললেও মারে। তিনি বলেন, এ ধরনের র্যাগিং আর চাই না। আমার মতো অনেক নিরীহ মেয়ে পড়াশোনা করতে আসে। অনেকে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে বাড়ি চলে গেছে অথবা নীরবে অত্যাচার সহ্য করেছে। এর সুষ্ঠু বিচার চাই। র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন চিরতরে বন্ধ করা উচিত।
ফুলপরীর বাবা ভ্যানচালক আতাউর রহমান সমকালকে বলেন, ‘আমি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। ছেলেমেয়েকে অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। ৭ ফেব্রুয়ারি ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। ৮ ফেব্রুয়ারি তার ক্লাস ছিল। হোস্টেলের মেয়েরা বিনা কারণে আমার মেয়েকে মেরেছে। অনেক অত্যাচার করেছে। কার কাছে গিয়ে এই নির্যাতনের বিচার চাইব। আমি দেশবাসীর কাছে বিচার ও দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।
ফুলপরীর মা তাসলিমা খাতুন সমকালকে বলেন, ‘ওই ঘটনার পর থেকে আমার মেয়েও খুব ভয় পাচ্ছে। বমি করছে। কেমন জানি হয়ে গেছে। এই নির্যাতনের বিচার চাই।’ ফুলপরীর বড় ভাই হযরত আলী বলেন, ‘আমার নিরীহ বোনকে নির্যাতনের বিচার চাই। র্যাগিং একেবারে বন্ধ চাই।’
অচলায়তন ভাঙবে সাহসী প্রতিবাদেই
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী পারিশা আকতার বলেছেন, আমি মনে করি, সাহসটা কমবেশি সবার মধ্যেই আছে। মানুষের বিপদে এগিয়ে আসার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। সাহস নিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই ভাঙবে অচলায়তন। যুগান্তর কার্যালয়ে বুধবার তার সঙ্গে কথা বলেছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাবিবুর রহমান খান।
রাজধানীর কাওরান বাজারে সম্প্রতি দুই ছিনতাইকারীকে আটক করে ভাইরাল হন পারিশা। তুলে দেন পুলিশের হাতে। সাধারণ মানুষ তাকে খেতাব দিয়েছে ‘সাহসী কন্যা’।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তার গ্রামের বাড়ি। সীতাকুণ্ড গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে উচ্চ শিক্ষার্থে আসেন ঢাকায়। ২০১৫-২০১৬ সেশনে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে।
বর্তমানে পড়ছেন মাস্টার্সে। বাবা-মা দুই ভাই নিয়ে সুখী সংসার পারিশাদের। দীর্ঘদিনের পছন্দের মানুষের সঙ্গে কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে তার। স্বামী বিদেশে থাকায় পড়াশোনার জন্য ক্যাম্পাসের অদূরেই থাকেন তিনি।
যুগান্তরের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে এসেছে সেইদিনের সাহসী গল্প আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ নানা বিষয় ।
যুগান্তর : ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফিরে পাওয়ার অনুভূতি কেমন?
পারিশা : অনুভূতিটা আগের মতো ছিল না। কারণ, মোবাইলের চেয়ে ফোনের ভেতরের জিনিসগুলো আমার প্রিয় ছিল। কিন্তু তা কিছুই নেই। মনটা খারাপ।
যুগান্তর : এমন সাহস কীভাবে পেলেন?
পারিশা : এক কথায় বলতে গেলে মোবাইল ছিনতাই হওয়ার পর আমার মাথা খারাপ হয়ে যায়। আমার মাথায় রাগ উঠে যায়। এতদিন শুধু শুনেছি, এভাবে মানুষের ফোন ছিনতাই হয়। কিন্তু আজ আমার ফোন ছিনতাই হলো।
এটা আমি মেনে নিতে পারিনি। অনেকে ভাবেন মোবাইল নিয়ে গেছে বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারী ধরব? আমি কিন্তু তেমনটা ভাবিনি। তাকে ধরতে আমার ভয় লাগেনি। সাহসটা বলতে গেলে জন্মগতভাবেই পেয়েছি।
Advertisement
আমার মা খুব সাহসী। আমরা যখন ছোট তখন থেকেই মা চাকরি করেন। সীতাকুণ্ড থেকে ট্রেনযোগে চট্টগ্রামে গিয়ে প্রতিদিন অফিস করেন। চাকরি করছেন আবার সংসারও চালাচ্ছেন। তাছাড়া আমি প্রচুর সিনেমা দেখি।
বলতে গেলে সব তামিল মুভি দেখেছি। আমি তামিল মুর্ভিন ফ্যান। পাশাপাশি ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘সিআইডি’ দেখতাম। সবকিছু মিলিয়ে মানসিক সাহসটা তৈরি হয়ে গেছে। তাছাড়া আমি অনেক কিছু সহ্য করতে পারি।
সহজেই ধৈর্য হারাই না। এ ছাড়া আমি যে বিষয়ে পড়ালেখা করছি (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ) সেখান থেকেও সাহস পেয়েছি। আমার ক্লাসে ২০ জন ছেলে, আমি একমাত্র মেয়ে। ওরা অনেক সময় মজা করে বলে তুই তো মেয়ে নয়, আমাদের মতো ছেলেই।
যুগান্তর : এমন সাহসী ঘটনা আগেও ঘটেছিল কিনা?
পারিশা : আগেও ঘটেছিল। তবে এতটা কঠিন পর্যায়ে যায়নি। একবার আমি আমার কলেজ রোড দিয়ে হেঁটে চোখের চিকিৎসক দেখাতে যাচ্ছিলাম। তখন একটি ছেলে আমার গায়ে হাত দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে একটি ঘুসি মারি। জানতে চাই কেন আমার গায়ে হাত দিলি। এমন সাহস থাকার পেছনে আরেকটি কারণও ছিল। এলাকায় আমার পরিবারের একটি সুনাম আছে। সবাই একনামে চেনে।
যুগান্তর : অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে বিপদ হতে পারে এমনটা মনে হয়নি?
পারিশা : না। আমি কখনো এমনটা ভাবি না। তাছাড়া আমার জীবনের প্রতি মায়া নেই। মৃত্যুকে আমি সব সময় বরণ করতে রাজি। আল্লাহর ওপর ভরসা আছে। আমার জায়গায় যদি অন্য কারও মোবাইল ছিনতাই হতো তাহলেও আমি এভাবেই প্রতিবাদ করতাম। আমার সামনে কোনো অন্যায় হলে সেটা মেনে নিতে পারি না। ছোটবেলা থেকেই আমার এ অভ্যাস।
যুগান্তর : নারীদের চলার পথে কী কী সমস্যা রয়েছে, তাদের কী করা উচিত?
পারিশা : নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নারীদেরই প্রথমে চিন্তা করতে হবে। পুরুষের চেয়ে নারীরা বিপদ আগে আঁচ করতে পারে। তাই যে কোনো বিপদে নারীদের প্রতিবাদী হতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী। তাই আমরা কেন পিছিয়ে থাকব। বিপদ দেখলে নিজেদের কেন গুটিয়ে রাখব। নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। আর একটা কথা মনে রাখতে হবে, একজন মানুষের বিপদে আরেকজন এগিয়ে আসতে হবে।
মনের মধ্যে মনোবল, সাহস থাকলে কেন একজনের বিপদে এগিয়ে আসবেন না। আমি মনে করি সাহসটা কমবেশি সবার মধ্যেই আছে। বিপদে এগিয়ে আসার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। বিপদে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, ছিনতাইকারী ধরতে এতটা দৌড়েয়েছি। কিন্তু কয়েকজন ছাড়া কেউ জানতে চায়নি কী হয়েছে। আমি যখন ছিনতাইকারীকে ধরলাম তখনও কেউ এগিয়ে আসেনি। যারা দেখছিলেন তারা বলেন, আপা আপনিই মারেন।
আমরা মারলে ঝামেলায় পড়তে পারি। কিন্তু আমরা এমন কেন। মানুষের এ মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। সবাই এক হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সমাজে অন্যায়-অবিচার কমে আসবে।
যুগান্তর : পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
পারিশা : শুরুর দিকে পুলিশ সহযোগিতা করেনি। গণমাধ্যমে খবর আসার পর তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছি। সবশেষে আমার ফোনটি তারা উদ্ধার করতে পেরেছে।
তবে আমি মনে করি, এটা আরও আগেই উদ্ধার করা সম্ভব ছিল। তিনি বলেন, ছিনতাই কিন্তু এখন ছোটখাটো কোনো বিষয় নয়। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভয়াবহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
কেন তারা বিষয়টিকে বড় করে দেখছে না। শুধু পুলিশ নয়, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্যকে এ কাজে লাগাতে হবে।
যুগান্তর : এ ঘটনার পর পারিবারিকভাবে কোনো সমস্যা হয়েছিল কিনা?
পারিশা : শ্বশুরবাড়ির লোকজন অনেক সাপোর্টেড। এ ঘটনায় আমার শ্বশুর অনেক খুশি। তিনি আমাকে ফোন করে বলেছেন, ‘মা ফার্স্টক্লাস কাজ করেছ।’ উনি সবাইকে বলেছেন, ছিনতাইকারী ধরেছে, খারাপ কিছু তো করেনি।
আমার শাশুড়ি, ভাসুর সবাই খুশি। তবে উনারা এখন একটু সাবধানে চলাফেরা করতে বলেছেন। তিনি বলেন, তার স্বামী চাকরি সূত্রে বর্তমানে সৌদি আরবে আছেন। ঘটনার পর উনি একটু ভয় পেয়েছিলেন।
ঢাকায় আমি একা থাকি। পরিবারের কেউ নেই। কোনো বিপদ হতে পারে। ওর মা-বাবা বিষয়টা কিভাবে নেবে। কিন্তু ওর মা-বাবা যখন বিষয়টি সহজে নিয়েছে তখন সে স্বস্তি পায়।
যুগান্তর : সমাজের প্রতি আপনার বার্তা কি?
পারিশা : নারী জাতি এই নয় যে আমরা দমে থাকব। নিজেদের সাহস, শক্তি, সামর্থ্য দিয়ে যতটুকু প্রতিবাদ করা যায় তা করতে হবে। সবার উদ্দেশ্যে বলব, মানুষ মানুষকে সহযোগিতা করা খুব প্রয়োজন। একজনের বিপদে এগিয়ে এলে সমাজে এত অন্যায়-অনাচার হতো না।
একজনের বিপদে যখন দশজন এগিয়ে আসবে তখন অপরাধীরাও অপরাধ করতে ভয় পাবে। আমাকে ছুরি মারবে এ ভয়ে আমি ধরব না? কিন্তু ছিনতাইকারী যদি মনে করে সে এ কাজ করলে দশজন তাকে ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়বে-তাহলে ওর ভেতরও ভয় কাজ করবে।
যুগান্তর : ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
পারিশা : বিসিএস পরীক্ষা দেব। আমার পছন্দের তালিকায় অ্যাডমিন ক্যাডার। আমি মন থেকে মানুষের সেবা করতে চাই। মনের সাহস এবং ইচ্ছা আছে কিন্তু আমার হাতে ক্ষমতা বা টাকা নেই। টাকা-পয়সা দিয়ে অনেক কিছু করা যায় কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতায় সবকিছু সম্ভব নয়। আমি যদি সরকারের প্রশাসনে কাজ করি তাহলে মানুষের জন্য কিছু করতে পারব।
যুগান্তর : আপনাকে ধন্যবাদ
পারিশা : যুগান্তরকে অসংখ্য ধন্যবাদ
মোবাইল ফোন উদ্ধার : বুধবার সকালে তেজগাঁও থানায় সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, ২১ জুলাই কাওরান বাজার এলাকা থেকে পারিশা আকতারের মোবাইলটি বাস থেকে ছিনিয়ে নেয় রিপন ওরফে আকাশ।
তাকে ধাওয়া করলে মোবাইলটি আরেক ছিনতাইকারীর কাছে হাতবদল করে পালিয়ে যায় রিপন। তিনি আরও বলেন, রিপন মোবাইলটি ছিনিয়ে দৌড় দেয় কিন্তু তার পিছু পিছু অন্য এক যুবক দ্রুত হাঁটতে শুরু করে।
ওই যুবকের সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে তার সম্পর্কে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং তাকে ২৪ জুলাই কাওরান বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বয়স ১৭। তার কাছ থেকে রিপনের জড়িত থাকার তথ্য মিলে। এরইমধ্যে আরেক ঘটনায় রিপনও গ্রেফতার হয়।
রুবাইয়াত বলেন, রিপনও প্রথমে ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। তবে ১৭ বছরের ছেলটি আর রিপনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদের পর সে স্বীকার করে। তার তথ্যমতে, কাওরান বাজারের একটি দোকান থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
ছিনতাই করা মোবাইল কেনার অপরাধে দোকানটির মালিক মো. শফিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছেলেটি ও রিপন বলে, তারা ৪ হাজার টাকায় মোবাইলটি বিক্রি করে দেয়। রিপন নেয় ১ হাজার টাকা আর ১৭ বছরের ছেলেটি নেয় ৫০০ টাকা। বাকি টাকায় তারা মদ কিনে পান করে।