‘যারা কিছু আদায় করতে পারেনি, তারাই এখন ভারত বিরোধী’

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১১ মার্চ : ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘যারা ভারতের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি, তারাই এখন ভারত বিরোধী কথা বলছে। এসব খেলা বহু খেলেছে তারা।’

তিনি বলেন, ভারতবিরোধিকার কথা তুলে নানা বক্তব্য দিয়ে আসছে তারা। এই অবস্থায় বাংলাদেশে ভারতের দালালি কারা করে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ শনিবার রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুব মহিলা লীগের দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) কোনও দেশপ্রেম নেই। ক্ষমতাটা তাদের কাছে বড় বিষয়। যে যখনই ক্ষমতায় এসেছে অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে। নিজেরাও অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে মুষ্টিমেয় লোকজনকে অর্থ সম্পদের মালিক করেছে। তাদের জোরে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে শুনি খুব ভারবিরোধী কথা। আমার প্রশ্ন ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে যখন আমেরিকান কোম্পানি আমাদের গ্যাস বিক্রি করতে চাইলো ভারতের কাছে, তখন ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল কে? খালেদা জিয়াই তো দিয়েছিলেন। তিনিই তো ক্ষমতায় এসেছিলেন। আমি তো চেয়েছিলাম, আমার দেশের সম্পদ আগে দেশের মানুষের কাজে লাগবে। আমার ৫০ বছরের রিজার্ভ থাকবে, তারপর ভেবে দেখবো আমরা বিক্রি করবো কি করবো না। ফলাফল কী? যাদের বিরুদ্ধে এত কথা বলে, এখানে যে ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এর প্রতিনিধি, সে তো হাওয়া ভবনে বসেই থাকতো। আমেরিকার অ্যাম্বাসির লোক হাওয়া ভবনেই বসে থাকতো। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারাতেই তো কার করেছে তারা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে তারা গ্যাস বিক্রি করতে পারেনি, কিন্তু মুচলেকা তো দিয়েছিল। তাদের মুখেই আবার এত ভারতবিরোধী কথা।’

১৯৯১ সালে বিএনিপ ক্ষমতায় আসার পর সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভারত সফর নিয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘৯১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসলো, তখন তিনি ভারত গেলেন। ভারতে গিয়ে ওনি বেশ ঘুরেটুরে আসলেন। যখন এখানে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলেন, গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে কী হলো, ওনি বলছেন, ‘গঙ্গার পানির কথা? ওহ তো, আমি তো আমি ভুলেই গেছি। দালালিটা করে কে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতবিরোধী কথা বলবেন, তার আগে ওনি গঙ্গার পানি আদায় করার জন্য ফারাক্কা পর্যন্ত লং মার্চও করেছিলেন, আন্দোলনও করেছিলেন। কিন্তু ভারতে গিয়ে গঙ্গার মানির কথা ভুলেই গেলেন। তাহলে দালালিটা করে কে? আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর পরই আমরা কিন্তু গঙ্গা পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করেছি।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আজকে তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। জিয়াউর রহমান তো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সংবিধান লঙঘন করেছিলেন। এ দেশে কবে কখন নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন তারা করছে বা করতে পেরেছে? তাদের ইতিহাসে তা নাই। তাদের ইতিহাসে আছে ভোট কারচুপি, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো অথবা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ভোটের রেজাল্ট ছিনিয়ে নেওয়া।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঝে মাঝে বিএনপি নেতারা খুব অভিযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ইত্যাদি। আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০০১ সালে বিএনপির গুন্ডা বাহিনী তখন কি অত্যাচার করেছিল। এক-এগারোর পর আমি তো বিরোধী দলে ছিলাম। আমাকে তো গ্রেফতার করার কথা না। কিন্তু আমাকে প্রথমে দেশে আসতে দিলো না। পরে গ্রেফতার করা হলো। আজকে আমরা ক্ষমতায় আছি, কই বিএনপির নেতাদের উপর এত অত্যাচার করি না। করলে তো আমরা করতে পারি। তারা নাকি ভয়ে রাস্তায় নামতে পারে না। এত যদি ভয় থাকে তাহলে রাজনীতি কেন?’

যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।