(ভিডিও)কুমিল্লা-৯ আসন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর গাড়িবহরে হামলা, ভাঙচুর

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),কুমিল্লা-৯ প্রতিনিধি, মঙ্গলবার , ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ :

কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সামিরা আজিমের (দোলা) গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা একটার দিকে লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ছনগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

Advertisement

(এনসিপি থেকে মনোনয়ন নিলেন তাসনিম জারা)

সামিরা আজিমের পক্ষের দাবি, হামলায় অন্তত ৩০ জন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, আহত হয়েছেন পাঁচজন।

সামিরা আজিম কুমিল্লা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত কর্নেল (অব.) এম আনোয়ার-উল আজিমের কন্যা। গত ৩০ মে আনোয়ার-উল আজিম মারা যান। এর কিছুদিন পর রাজনীতিতে সক্রিয় হন সামিরা। এদিকে মনোনয়ন পাওয়া আবুল কালাম বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক ও লাকসাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি।

সামিরা আজিমের অনুসারী মো.জসিম উদ্দিন, জাহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় অন্তত পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টা থেকে সামিরা লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নে তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফার প্রচারপত্র বিতরণ ও উঠান বৈঠকের কর্মসূচি শুরু করেন। ইউনিয়নের কেমতলি উঠান বৈঠক শেষে গাড়িবহর নিয়ে ছনগাঁও যাওয়ার পথে আবুল কালামের অনুসারীরা গাড়িবহর আটকে ভাঙচুর ও সামিরার অনুসারীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় ইটপাটকেল ছোড়া হয়, যা সামিরার ওপরে গিয়ে পড়ে। সামিরা ছাড়াও হামলায় বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন, আবদুল হালিম, নুরু, শামছুল হক, যুবদল নেতা আবুল কাশেম, ফয়সল, জাহিদুল ইসলাম, সাগর, পারভেজ, আলাউদ্দিন, মন্টু, মোরশেদ আলমসহ ৩০ জনের বেশি নেতা-কর্মী আহত হন। সামিরা আজিমের ব্যবহৃত গাড়ি, বহরে থাকা আরেকটি প্রাইভেট কার, নেতা-কর্মীদের অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কুমিল্লা ও লাকসামের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সামিরা আজিম বলেন, ‘একটি উঠান বৈঠক শেষে অন্যটিতে যাওয়ার পথে বিএনপির সম্ভাব্য তালিকায় মনোনয়নপ্রাপ্ত আবুল কালামের অনুসারীরা আমার গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে। আমাকে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে ও আমার অনুসারী জসিম উদ্দিনকে জানে মেরে ফেলা। এ ঘটনায় আমি আমার নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিকট সুষ্ঠু বিচার চাই।’

তবে এ বিষয়ে আবুল কালামের নেতা–কর্মীরা জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান (বাদল)। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ওই এলাকায় ৩১ দফার প্রচারপত্র বিতরণসহ তাঁদেরও পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ হয়েছে। আবদুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি তাদের (সামিরা পক্ষ) ওপর হামলা হয়েছে, তবে কারা হামলা করেছে, এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এ ঘটনা নিয়ে তারা কালাম ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। আজিম ভাইয়ের মেয়ে সামিরা বর্তমানে জসিম উদ্দিন নামে আওয়ামী লীগের এক লোককে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ব্যক্তি ফেসবুকে এসেও কালাম ভাই, আমিসহ দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষ তার ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারে। তবে হামলার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।’

লাকসাম উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মো.শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার প্রার্থী মনোনয়ন পেয়ে গেছেন, তাহলে আমরা কেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করব? আমরা তো এখন সবার ঐক্যের জন্য কাজ করছি। মূল কথা হলো কালাম ভাইয়ের কোনো অনুসারী এ ঘটনায় জড়িত নয়। একটি পক্ষ বিশৃঙ্খলা চেষ্টা করে শান্ত লাকসাককে অশান্ত করতে চাইছে।’

Advertisement

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে জানিয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানামতে পাঁচজনের মতো আহত হয়েছেন। তবে হামলার শিকার কেউ এখনো থানায় এজাহার নিয়ে আসেননি। তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে, এজাহার নিয়ে আসামাত্রই আমরা মামলাটি গ্রহণ করব। এ ছাড়া পুলিশ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’