(ভিডিও)রেস্টুরেন্টে ডরি ফিসের নামে কী খাচ্ছেন!

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),ঢাকার অভিজাত রেস্টুরেন্ট থেকে, রোববার   ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ||  কার্তিক ২৫ ১৪৩২ :

ঢাকার অভিজাত রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত—বর্তমানে ‘ডরি ফিশ’ ফ্রাই মেনুর এক অনিবার্য নাম। বিয়ে, পার্টি কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠানে এই খাবারের চাহিদা এখন তুঙ্গে। শিশু থেকে বয়স্ক—সবাই পছন্দ করছে নরম মাংসের সুস্বাদু এই মাছ।

Advertisement

 

রেস্টুরেন্ট মালিকদের দাবি, এটি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সামুদ্রিক ডরি ফিশ, যা পুষ্টিকর ও উচ্চ মানের প্রোটিনসমৃদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে এই জনপ্রিয় খাবারের পেছনে লুকিয়ে আছে এক ভয়ঙ্কর প্রতারণা।

 

সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের  অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

 

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে দেখা গেছে, “ডরি ফিশ” নামে বিক্রি হচ্ছে আসলে পাঙ্গাস মাছ, যা বিশেষ কেমিক্যাল ব্যবহার করে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ ও গন্ধে রূপান্তর করা হচ্ছে।

 

বাজারের এক দোকানে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি মাছের চামড়া, মাথা ও কাঁটা আলাদা করে স্তুপ করে রাখছেন। প্রথমে বোঝার উপায় নেই, এটি কোন মাছ।

 

অনুসন্ধান দলের প্রশ্নে দোকানকর্মীরা জানান, এগুলো মূলত পাঙ্গাস মাছ, যা “ডরি” নামে বিক্রির জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়।

 

তাদের ভাষায়, এটা সবাই নেয়—বাসা-বাড়ি, হোটেল, রেস্টুরেন্টে যায়। সকালে কেটে প্যাকেট করে পাঠিয়ে দেই। যদিও দোকান মালিক দাবি করেন, তারা মাত্র এক মাস ধরে এই ব্যবসা করছেন, এবং মূলত “পোষা প্রাণীর খাবার” হিসেবেই এটি বিক্রি করেন। কিন্তু পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৪০০ কেজি মাছ এখান থেকে রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোর—গুলশান, বনানী, মহাখালী ও ধানমন্ডির— রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারে সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, মাছগুলোর গায়ে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল, যা মাছের গন্ধ ও স্বাদ পরিবর্তন করে সামুদ্রিক মাছের মতো করে তোলে। দোকান কর্মীদের একজন গোপনে স্বীকার করেন, এই কেমিক্যাল না দিলে ফাঙ্গাসের মতো গন্ধ থাকে। কেমিক্যাল দিলে মনে হবে ডরি ফিশ।

Advertisement

প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

রেস্টুরেন্ট মালিকদের অনেকে এ বিষয়ে অবগত থাকলেও ব্যবসায়িক কারণে চোখ বন্ধ করে আছেন।

 

তারা জানেন, প্রকৃত ডরি ফিশ আসলে ভিয়েতনাম বা নিউজিল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয় এবং এর দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। অথচ এই “স্থানীয় ডরি” মাত্র ৩০০–৩৫০ টাকায় বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে লাভের আশায় অনেকেই ভেজাল মাছ পরিবেশন করছেন অতিথিদের প্লেটে।

 

পুষ্টিবিদ ও খাদ্যবিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই ধরনের রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাত মাছ মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘমেয়াদে এটি লিভার, কিডনি ও পরিপাকতন্ত্রে জটিল সমস্যা তৈরি করতে পারে।

Advertisement

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, এ ধরনের প্রতারণা প্রমাণিত হলে এটি অপরাধ হিসেবে দণ্ডনীয়, কারণ এতে সরাসরি ভোক্তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে।