(ভিডিও) ৫ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচিতে জাবির চাকরিচ্যুত ৩ কর্মচারী

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,বুধবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ||  আশ্বিন ২৩ ১৪৩২ :

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ না করায় চাকরিচ্যুত তিন কর্মচারী চাকরি ফিরে পেতে পাঁচদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

 

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পঞ্চমদিনের মত ওই হলের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

Advertisement

 

অভিযুক্ত ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক এবং প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি।

 

ভুক্তভোগী তিন কর্মচারী হলেন, ফজিলতুন্নেসা হলের ডায়নিং অ্যাটেন্ডেন্ট (মহিলা) মিরা রানী রায়, চম্পা এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মী (মহিলা) মোছা. সোমা।

জানা যায়, তারা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে গত দেড় বছর ধরে হলটিতে কর্মরত ছিলেন। গত ২৮ আগস্ট তাদের চাকরিচ্যুত করে এসব পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবিএম আজিজুর রহমান। তিনি জানান, “হল প্রাধ্যক্ষের (নজরুল ইসলাম) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ভুক্তভোগী তিন কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, ২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড সিকিউরিটি সল্যুশন নামক আউটসোর্সিং কোম্পানির আওতায় তারা ফজিলতুন্নেসা হলে নিয়োগ পান। নিয়োগের পর থেকে তারা স্বাভাবিকভাবে কাজ করে আসছিলেন। তবে গণ-অভ্যুত্থানের পর হলটিতে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই হলের কাজের পাশাপাশি তার বাসায় গিয়েও আনুষঙ্গিক কাজ করার জন্য বলা হয়।

Advertisement

প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

তবে কর্মচারীদের অনেকেই প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে গেলেও ওই তিনজন অস্বীকৃতি জানান। গত এপ্রিল মাসে প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে না গেলে চাকরিচ্যুত করা হবে বলেও তাদের হল প্রশাসন থেকে হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের মধ্যে জানাজানি হলে হলের এক ওয়ার্ডেনের মাধ্যমে সমাধান হয়।

নতুন করে তাদের গত ২৮ আগস্ট চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর চাকরি ফিরে পেতে গত ১ অক্টোবর থেকে তারা হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তবে গত শুক্রবার ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় সাপ্তাহিক বন্ধ থাকা তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি।

 

ভুক্তভোগী ওই তিন কর্মচারী বলেন, আমাদের যে পদে নিয়োগ হয়েছে আমরা সে পদেই কাজ করব। হলের সব কাজ আমরা করতে আগ্রহী। কিন্তু হলের প্রাক্ষের বাসায় কেন কাজ করতে যাব। হলের প্রাধ্যক্ষের বাসায় আমরা কাজ করতে যেতে রাজি না হওয়ার পর থেকেই আমাদের হুমকি দিয়ে রাখছিল। পরে হঠাৎ শুনি আমাদের চাকরি নেই।

তারা বলেন, এই চাকরির ওপর আমাদের সংসার চলে। এভাবে হঠাৎ করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে আমরা এখন খাব কি? বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারের অফিসে আমরা এটার সঠিক বিচারের দাবি জানিয়ে অভিযোগ দিয়েছি।

 

তাদের অভিযোগ, ওই তিনজনকে বাদ দিয়ে অধ্যাপক নজরুল ইসলামের বাসায় আগে থেকে যারা কাজ করতেন, তাদের হল কর্মচারী হিসেবে নতুন করে ঢোকানো হয়েছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ফজিলতুন্নেসা হলের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে ওই তিন কর্মচারী। একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা- ‘বিনা কারণে চাকরিচ্যুত হওয়া মানি না’, ‘আমরা হারানো চাকরি ফেরত চাই’, ‘আমরা হলে কাজ করতে এসেছি, প্রাধ্যক্ষ নজরুল স্যারের বাসায় কাজ করতে নয়।’

এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড সিকিউরিটি সল্যুশন নামক আউটসোর্সিং কোম্পানির ডিরেক্টর (অপারেশন) মিনারুল ইসলাম বলেন, “হলে তাদের কাজ করতে দেওয়া হয়েছে। তবে তারা কাজ না করে রাজনীতি, আন্দোলন করে। সেজন্য তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।”

তারা কোন ধরনের কাজ করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মূলত ওই কর্মচারীরা হলের প্রাধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সেজন্য তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাই আসলে প্রধান কারণ। হলের কর্মচারীরা প্রাধ্যক্ষের বাসায় কেন কাজ করবে সেটা আসলে আমারও প্রশ্ন।”

Advertisement

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।