ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নাটোর প্রতিনিধি,বুধবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ || ভাদ্র ১৯ ১৪৩২ :
নাটোরে আলোচিত চিকিৎসক ডা. এএইচএম আমিরুল ইসলামকে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএ) আসাদুল ইসলাম আসাদ হত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার রাতে আসাদ বোরকা পরে খাটের নিচে লুকিয়ে থেকে সুযোগ বুঝে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নাটোর শহরের জনসেবা ক্লিনিকে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন প্রেস ব্রিফিং করে এ সব তথ্য জানান। আসাদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) নাটোরে জনসেবা ক্লিনিক থেকে ডা. এএইচএম আমিরুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আমিরুল ইসলাম ওই ক্লিনিকের মালিক।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যার পর থেকে তথ্য ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় যৌথভাবে কাজ করার একপর্যায়ে হাসপাতালের স্টাফ আসাদুল ইসলাম আসাদকে মূল আসামি হিসেবে শনাক্ত করা হয়। আসাদ বগুড়ার ধুনট উপজেলার বাসিন্দা। ২০২৪ সালে এসএসসি পাসের পর তিনি বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি শুরু করেন। পরে নাটোরে জনসেবা ক্লিনিকে ডা. আমিরুল ইসলামের পিএ হিসেবে তিন বছর ধরে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘‘কর্মরত অবস্থায় হাসপাতালের এক নারী স্টাফকে ঘিরে ডা. আমিরুল, ওই নারী এবং আসাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে গত ২৫ আগস্ট ডা. আমিরুল ওই নারী স্টাফ এবং আসাদকে মারধর করেন। আসাদকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর আসাদ বগুড়ায় ফিরে গেলেও তার মধ্যে প্রতিহিংসার জন্ম হয়। প্রতিশোধ নিতে তিনি বগুড়া থেকে বোরকা ও দুটি ছুরি কিনে নাটোরে ফিরে আসেন।’’
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘‘রবিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় বোরকা পরে আসাদ ডা. আমিরুল ইসলামের চেম্বারের কক্ষে প্রবেশ করেন এবং খাটের নিচে লুকিয়ে থাকেন। রাত ১টার দিকে ডা. আমিরুল নিজের কক্ষে ফিরে আসেন এবং ওষুধ সেবন শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে গভীর ঘুমের মধ্যে থাকা ডা. আমিরুলের ওপর আসাদ ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তাকে হত্যা করেন। পরে ভোর সোয়া ৬টার দিকে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে যান আসাদ।’’
Advertisement
পুলিশ সুপার জানান, যাওয়ার পথে তিনি বোরকাটি সিংড়া আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এলাকার নদীতে এবং ছুরি দুটি নন্দীগ্রাম এলাকায় ফেলে দেন।
(নিহত‘ডা. আমিরুল)
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও প্রতিহিংসার জেরে আসাদ এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। মূলত ক্ষোভ থেকে হত্যা করেছেন।’’
আসাদ আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ডা. আমিরুল ইসলামের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আসাদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে