(ভিডিও)স্থানীয়দের সঙ্গে চবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,রোববার   ৩১ আগস্ট ২০২৫ ||  ভাদ্র ১৬ ১৪৩২ :

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে বাসার দারোয়ান কর্তৃক মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নং গেট এলাকায় রাতভর সংঘর্ষে ক্যাম্পাসের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় প্রায়ই ২০ এর অধিক শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির দুই শিক্ষক আহত হয়। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে এখন থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

Advertisement

এছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সকল পরীক্ষা বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে এদের মধ্যে অনেকেই পরীক্ষার্থীও ছিলেন। সবার কথা বিবেচনা রেখেই আজকের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মারধরের শিকার শিক্ষার্থী দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের ছাত্রী সাফিয়া খাতুন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, সাফিয়া রাত আনুমানিক ১১টার দিকে বাসায় ফিরলে গেট বন্ধ পান। একাধিকবার ধাক্কা দেওয়া সত্ত্বেও গেট খোলা হয়নি। পরে তার সহপাঠীরা এসে দারোয়ানকে গেট খুলতে অনুরোধ করলে তিনি তাতেও রাজি হননি। একপর্যায়ে দীর্ঘক্ষণ চিৎকার-চেঁচামেচির পর গেট খোলা হয়। ভেতরে ঢোকার সময় দারোয়ান শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “তুই এত লেট করে কেন ঢুকলি?” এ সময় তিনি ওই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা ও মারধর করেন।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুরা আত্মরক্ষার জন্য দারোয়ানের ওপর চড়াও হন। পরে ওই শিক্ষার্থী তার পরিচিত সিনিয়রদের খবর দেন। তারা দারোয়ানকে আটকানোর চেষ্টা করলে সে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় খবরটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে আরও শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হন। এর পর স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘর্ষও তীব্র আকার ধারণ করে এবং শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।

পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৩ টায় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর সকাল ৭ টায় সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।

এ ঘটনায় চবি ইসলামী ছাত্রশিবির হামলাকারীদের শাস্তি চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তাদের দাবি এলাকায় হানিফ গং এর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে।

শিবির প্রচার সম্পাদক ঈশাক ভূঁইয়া বলেন, স্থানীয়রা যখন শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে এ সময় চারজন শিক্ষার্থী মসজিদের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় হামলাকারীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মসজিদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। ওই এলাকায় হানিফ গং এর সদস্যরা থাকেন সেই থেকে আমরা ধারণা করতেছি যে তারাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে।

চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর হায়দার বলেন, আমরা এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার সবার সাথে বসেছি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Advertisement

এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সাথে কোন ঝামেলা হলেই হানিফ গং এর সাথে যারা জড়িত ওরা সবাই মিলে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। গতকাল রাতে অনেকগুলো উস্কানিমূলক পোস্ট করা হয়েছে ফেসবুকে। তবে হানিফ গং এবং তার সদস্যরা যে এই হামলার সাথে জড়িত এটা আমরা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছি।

 

স্থানীয়দের সঙ্গে চবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ