
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজনীতি প্রতিনিধি,শনিবার ০৯ আগস্ট ২০২৫ || শ্রাবণ ২৫ ১৪৩২ :
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নেতা সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে স্বামীর জায়গায় নিজের নাম লেখার অভিযোগ তুলেছেন নারীনেত্রী নীলা ইসরাফিল। শনিবার (৯ আগস্ট) নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে ঢামেক হাসপাতালে রোগী ভর্তির একটি ফরম যুক্ত করে এ অভিযোগ করেন তিনি। তবে এ অভিযোগকে ‘বাটপারি’ বলে দাবি করেছেন সারোয়ার তুষার।
ফেসবুক পোস্টে নীলা লেখেন, আমি নীলা ইস্রাফিল। ওই দিন আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, সম্পূর্ণ অজ্ঞান অবস্থায়। আমার নিজের নাম, পরিচয়, জীবনের সিদ্ধান্ত সবকিছুর ওপর তখন আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আর ঠিক সেই সুযোগেই সারোয়ার তুষার আমার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম বসিয়ে দিয়েছে। এটা কোনো ‘ভুল’ নয়, এটা আইনগতভাবে জালিয়াতি।
নীলা লেখেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নথি মিথ্যা তথ্য দিয়ে তৈরি করা এবং তা ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ছাড়া বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন করাও অপরাধ।
তিনি লেখেন, আমার অনুমতি ছাড়া আমার পারিবারিক পরিচয় বিকৃত করা মানে শুধু আমার সামাজিক সম্মানকে আঘাত করা নয় এটা আমার মানবাধিকার লঙ্ঘন। UDHR-এর (Universal Declaration of Human Rights) ধারা ৩, ৫, ১২ ও ২২ অনুযায়ী আমার ব্যক্তিগত মর্যাদা, গোপনীয়তা এবং আইনি নিরাপত্তার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। হাসপাতালের নথিতে এই ভুয়া তথ্য ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে, আমার সামাজিক ও আইনগত নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।’
‘আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দাবি করছি, অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত করা হোক। দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হোক।’
নীলা আরও বলেন, আমার প্রকৃত তথ্য পুনঃস্থাপন করা হোক এবং রোগীর অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে যারা এমন অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক এটা শুধু আমার লড়াই নয়, এটা প্রতিটি মানুষের নিজের পরিচয়, মর্যাদা এবং অধিকারের জন্য লড়াই।

অপরদিকে, সারোয়ার তুষার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, নীলা ইসরাফিল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে এসেছিলেন। আমরা পুলিশ ডেকেছিলাম এবং তার পরিচিত মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্ট লেনিন ভাইকে ডেকেছিলাম। পুলিশের উপস্থিতিতে লেনিন ভাইসহ তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি।
তিনি লেখেন, এই ভর্তি ফরমে কি লেখা হচ্ছে তা তখন খেয়াল করি নাই। সেই সুযোগ ছিল না। ফর্ম ইন্টার্ন ডাক্তাররাই পূরণ করেছেন। এখন দেখা যাচ্ছে এটা সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সার্কুলেট করা হচ্ছে।
Advertisement
তুষার লেখেন, হাসপাতালের ভর্তি ফরমের ফর্মালিটিজের কথা আপনারা সবাই জানেন। নারীর ক্ষেত্রে স্বামী/পিতার নাম লিখতে হয়। অথবা যিনি নিয়ে এসেছেন তার নাম লিখতে হয়। এখানে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে care of অর্থে C/O লেখা, যেটা লাল দাগের মধ্য দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে এবং প্রচার করা হচ্ছে আমি নাকি স্বামীর ঘরে নিজের নাম লিখেছি। আমি কি পাগল? বাটপারির একটা সীমা থাকা দরকার!
তিনি লেখেন, হাসপাতালে পেশেন্ট যখন আপনি ভর্তি করবেন তখন পিতা বা স্বামীর নাম না জানলে (মনে করেন রোড অ্যাক্সিডেন্ট বা এমন কিছুতে যখন অচেনা-অজানা লোকেরা হাসপাতালে যায়া ভর্তি করে দিয়ে আসে) তখন C/O লিখে যে ভর্তি করসে তার নাম লেখা হয়। এটা হাসপাতালে ভর্তি এক অতি সাধারণ রীতি। স্বামী/পিতার ক্ষেত্রে উপরে টিক চিহ্ন দেওয়ার রেওয়াজ। এসব প্রতারণা ও বাটপারি বন্ধ করতে হবে।
