ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),গাজীপুরের কালীগঞ্জ প্রতিনিধি, শনিবার ২৮ জুন ২০২৫ || আষাঢ় ১৪ ১৪৩২ :
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১০ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে চটের বস্তায় ভরে রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে মাদ্রাসার ফটক তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তীব্র রোদের মধ্যে শিশুকে বস্তায় আটকে রাখার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা।
Advertisement
ভুক্তভোগী আবু বকর সিদ্দিকী (১০) কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী দাওদাপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় ফুলদী নূরে মদিনা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে ওই শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন।
অভিযুক্ত মুফতি জাকারিয়া (২৯) ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক। তিনি একই উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা।
Advertisement
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকালে কোনো এক কারণে আবু বকরকে পেটান শিক্ষক জাকারিয়া। আবু বকর কান্না শুরু করলে এবং পরিবারকে জানানোর হুমকি দিলে শিক্ষক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে একটি চটের বস্তায় শিশুটির শরীর আটকে মাথা বাইরে রেখে দোতলা মাদ্রাসা ভবনের রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখা হয়। এ সময় তাকে যাতে কেউ খুঁজে না পান, এজন্য মাদ্রাসার ফটক বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করা হয়।
তারা জানান, বন্দি অবস্থায় বস্তায় প্রস্রাব ও পায়খানা করে ফেলে আবু বকর। দীর্ঘ সময় পর এক সহপাঠী গোপনে জানালা দিয়ে বের হয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর আশপাশের মানুষ জড়ো হন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষক আগেও শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন বলেছেন, “এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? আমার ছেলে ছোট, সে কোনো ভুল করলেও এভাবে নির্যাতনের অধিকার কারো নেই। আমি থানায় অভিযোগ করেছি, মামলা করব। আমি আমার সন্তানের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেছেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, শিশুটিকে পুরোপুরি বস্তার মধ্যে না রেখে মাথা বাইরে রাখা হয়েছিল, যেন সে পালাতে না পারে।”
Advertisement
https://www.facebook.com/share/p/1NT3RTcPAN
তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।