ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ || আষাঢ় ৩ ১৪৩২ :
ইসরায়েলি হামলার পর পুনরায় সম্প্রচার শুরু করল ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি
ইসরায়েলি হামলার পর পুনরায় সম্প্রচার শুরু করল ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি। ইসরায়েলের হামলায় কিছুক্ষণের জন্য সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের। তবে পুনরায় সম্প্রচার শুরু হয়েছে। রাজধানী তেহরানে ইসলামী প্রজাতন্ত্র সম্প্রচার সংস্থার (আইআরআইবি) ভবনে ওই হামলা চালানোর পর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের।
Advertisement
আইআরআইবির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাসান আবেদিনি বলেন, “ইরানের জনগণের শত্রু জায়নিস্ট শাসক কয়েক মিনিট আগে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সংবাদ নেটওয়ার্কের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “এই (ইসরায়েল) শাসনব্যবস্থা জানে না, একটি সামরিক হামলা চালিয়ে ইসলামী বিপ্লবের কণ্ঠ ও মহান ইরানের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করা যায় না।”

ঝিনাইদহে বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা

বগুড়ায় আসামির ছুরিকাঘাতে ২ পুলিশ আহত
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিও সদর দপ্তরে হামলা
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিও সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে সেগুলোর সম্প্রচার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের হুমকির কিছুক্ষণের মধ্যেই হামলা ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
বিবিসি জানায়, হামলার আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিও দ্রুতই ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন মি. কাৎজ।
ইরানের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা
ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কেরমানশাহে একটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় হাসপাতালটির একাংশের ছাদ ধসে পড়েছে। এতে কয়েকজন রোগী আহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছে।
ইরানের ফারস ও তাসনিম সংবাদ সংস্থার প্রকাশিত একাধিক ভিডিওর বরাত দিয়ে সিএনএন বলেছে, হামলায় কেরমানশাহে ফারাবি হাসপাতালের একটি অংশের ছাদ ধসে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভিডিওচিত্র যাচাই করেছে সিএনএন।
তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘাঈ অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে হাসপাতালকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, বাঘাই বলেন, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকায় হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধ। ইতিহাস বিচার করবে, এই (ইসরায়েল) শাসনের মিত্র ও পক্ষ অবলম্বনকারীদের জন্য চিরস্থায়ী লজ্জা অপেক্ষা করছে।
তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সিএনএনকে জানায়, তারা ইরানে কোনো হাসপাতালের ওপর হামলার বিষয়ে অবগত নয়।
তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, হাসপাতালটির ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙা কাচ ও ছাদ ধসে এই ইউনিটের রোগীরা আহত হয়েছেন।
ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করল পাকিস্তান: ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাতের মধ্যে প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। অনির্দিষ্টকালের জন্য সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করার ঘোষণার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন বেলুচিস্তানের কর্মকর্তারা।
সোমবার (১৬ জুন) কাদির বখশ পিরকানি নামে বেলুচিস্তান প্রদেশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “চাগি, ওয়াশুক, পাঞ্জগুর, কেচ ও গওয়াদার- এই পাঁচটি জেলার সব সীমান্ত সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে।”
চাগি জেলার একটি সীমান্ত চৌকির কর্মকর্তা আতাউল মুনিম বলেন, “ইরানে প্রবেশ এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।”
তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, সীমান্তে বাণিজ্য কার্যক্রমের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই এবং যেসব পাকিস্তানি নাগরিক ইরান থেকে দেশে ফিরতে চান, তারা সীমান্ত পার হতে পারবেন।
আতাউল মুনিম বলেন, “আজ প্রায় ২০০ জন পাকিস্তানি শিক্ষার্থীর ফেরার কথা রয়েছে।”
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: কূটনৈতিক সমাধানে একমত পুতিন-এরদোয়ান
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত মেটাতে জোরদার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা দরকার বলে একমত হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।
সোমবার (১৬ জুন) আঙ্কারা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও প্রেসিডেন্ট পুতিন ফোনে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এরদোয়ান ও পুতিন উভয়ে একমত হয়েছেন যে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত বন্ধ হওয়া জরুরি এবং অবিলম্বে কূটনীতির জন্য একটি পথ উন্মুক্ত করা উচিত।
এরদোয়ান তার পূর্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এই সংকট সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় ফিরে যাওয়া।
অন্যদিকে, রাশিয়ার ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থার বরাতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন ও এরদোয়ান ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘শক্তি প্রয়োগের’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
ক্রেমলিন আরো জানায়, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে দুই নেতা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা ইতোমধ্যেই বহু প্রাণহানির কারণ হয়েছে এবং গোটা অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
ক্রেমলিন বলেছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট এরদোয়অন অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সব বিরোধপূর্ণ বিষয়, বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পন্থায় নিষ্পত্তির পক্ষে মত দিয়েছেন।
ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ ইরানি নারী-শিশু নিহত, দাবি তেহরানের
ইসরায়েলের চার দিনের হামলায় ইরানের অন্তত ৪৫ জন নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তেহরান।
ইরানের সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি দেশটির ওপর ইসরায়েলি হামলা নিয়ে সোমবার (১৬ জুন) একটি বিবৃতি দিয়েছেন, যা সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ প্রকাশ করেছে।
আলজাজিরা মোহাজেরনির বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশের অনুবাদ তুলে ধরেছে, যেখানে সার্বিক পরিস্থিতির সারাংশ উঠে এসেছে।
মোহাজেরনি বলেছেন, “এই যুদ্ধ আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তা চাইনি।”
তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ জন নারী ও শিশু নিহত হয়েছে এবং আরো ৭৫ জন নারী ও শিশু আহত হয়েছেন। নারী ও শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানানো প্রমাণ করে যে, ইসরায়েল কেবল সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানার যে দাবি করছে, সেটি পুরোপুরি মিথ্যা।
কেরমানশাহ প্রদেশের ফারাবি হাসপাতালের ওপর হামলাকে ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার নির্মমতা ও বর্বরতার প্রতিচ্ছবি বলে মন্তব্য করেন মোহাজেরনি।
তিনি বলেন, জনগণের জন্য মসজিদগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং প্রতিটি প্রদেশে সংকট ব্যবস্থাপনা কক্ষ গঠন করা হয়েছে।
‘আমরা ইরানের পরিস্থিতি মেনে নিতে পারি না`
১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের বিচারমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ইয়োসি বেইলিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার সরকারে কট্টর ডানপন্থি ‘উন্মাদদের’ অন্তর্ভুক্ত করে একটি বিশাল ভুল করেছেন।
তিনি আলজাজিরাকে বলেন, “ওরা কখনোই সরকারের অংশ হওয়ার মতো ছিল না। ওরা ইসরায়েলি জনমতের একটি ক্ষুদ্র অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। এটা অত্যন্ত সমস্যাজনক।”
বেইলিন আরো বলেন, “গত কয়েক বছরে নেতানিয়াহু অনেক বড় বড় ভুল করেছেন। সেগুলোর মধ্যে একটি ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে রাজি করানো।”
তবে তিনি এটাও জোর দিয়ে বলেন, “ইরান একটি বাস্তব হুমকি।”
“এক সময় আমরা একে অপরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলাম। কিন্তু ১৯৭৯ সালের পর যেকোনো কারণে হোক, আমরা তাদের চোখে শয়তানে পরিণত হলাম; কারণ তারা ইহুদিদের ঘৃণা করে এবং চায় আমরা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাই। তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না। এটা এক ধরনের শত্রুতামূলক মানসিকতা, যা সহ্য করা যায় না। আমরা ইরানের বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নিতে পারি না,” বলেন বেইলিন।
ইরানের ৩০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংসের দাবি ইসরায়েলের
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি করেছে, ইরানের সঙ্গে চলমান লড়াই চতুর্থ দিনে প্রবেশ করার পর তাদের ৫০টিরও বেশি জেট বিমান ইরানের অন্তত ১২০টি ‘ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার’ ধ্বংস করেছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিনের একটি বিবৃতি ইসরায়েলের টেলিভিশনে প্রচার করা হয়েছে। এতে তিনি বলেছেন, “এই সংখ্যা ইরানি সরকারের ‘ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারের’ এক-তৃতীয়াংশের সমান।”
কয়েকদিন ধরে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোর ওপর ধারাবাহিক হামলার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন দাবি করছে, তাদের বিমান পশ্চিম ইরান থেকে তেহরান পর্যন্ত আকাশসীমার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
ডেফরিন বলেন, “এখন আমরা বলতে পারি, “এখন আমরা তেহরানের সম্পূর্ণ আকাশ দখল করেছি।”
শুক্রবার ভোরে ইরানে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রথম দিনের হামলায় ইরানের কয়েকজন সামরিক কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। এর জবাবে ইরানও হামলা চালায়। সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা চলছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংখ্যা দেখে ইসরায়েলিরা হতবাক
ইসরায়েল বরাবরই বলে আসছিল তাদের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে এবং এই ব্যবস্থা বিদেশি আক্রমণ ঠেকাতে কার্যকর। তবে ১৩ জুন শুক্রবার রাত থেকে আজ ১৬ জুন সোমবার পর্যন্ত টানা চারদিন ইরানের পাল্টা আক্রমণে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ কাজ করেনি। ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি শহরের আবাসিক ব্লক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য লোকাল কলের সম্পাদক মেরন র্যাপোপোর্র্টের মতে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা দেখে ইসরায়েলি জনগণ হতবাক হয়ে গেছে, যা ইসরায়েলের উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে।
রবিবার রাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদিও সামরিক বাহিনী এটিকে প্রত্যাশা অনুযায়ী চিত্রিত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ইসরায়েলিরা বেশ অবাক যে, ইরানের এতো ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি ইসরায়েলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এতো বিশাল।”
তিনি আরো বলেন, “ইরানের হামলাগুলো কিছু কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতেও সফল হয়েছে। তবে কিছু ঘটনা সম্ভবত জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করেনি ইসরায়েলি সরকার।”
তিনি বলেন, “আমরা সবকিছু সম্পর্কে জানি না কারণ সেন্সরশিপ বেশ কঠোর। কিন্তু যদি আমরা কিছু জানি তাহলে তা প্রকাশ করার অনুমতি নেই।”
র্যাপোপোর্ট আরো জানান, তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর একটি চুক্তিকে সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র সম্ভাব্য উপায় হিসেবে দেখেন।
তিনি বলেন, “ইরান আত্মসমর্পণ করবে না, অদূর ভবিষ্যতে তেহরানের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটবে না এবং অবশ্যই ইসরায়েলও আত্মসমর্পণ করবে না। তাই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি ছাড়া আমি অন্য কোনো উপায় দেখছি না।”
সোমবার টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের হামলায় ইসরায়েলে এ পর্যন্ত ২১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।
ইসরায়েলে ইরানের নতুন অভিযান ‘ইয়া আলী ইবনে আবি তালিব’
‘ট্রু প্রমিজ-৩’ অভিযানে ইরানের বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী মহাকাশ ও বিমান শাখা ব্যাপকভিত্তিক ও সুনির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ইসরাইলের গভীরে আঘাত হানছে, যা ইসরাইলের নিরাপত্তা কৌশলকে সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত করেছে এবং তেল আবিবকে হতবাক ও আতঙ্কিত করে তুলেছে। সোমবার (১৬ জুন) ভোরে ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি শহরে হামলা চালিয়েছে ইরান।
ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্স টুড লিখেছে, বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর মহাকাশ ও বিমান শাখা শনিবার (১৫ জুন) রাতে ‘সত্য প্রতিশ্রুতি-৩’ অভিযানের নতুন পর্যায় শুরু করেছে, যার কোডনাম ‘ইয়া আলী ইবনে আবি তালিব’। এই অভিযানে ব্যাপক ও সমন্বিতভাবে ইসরাইলের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। সোমবার ভোরেও এই অভিযান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আত্মঘাতী ড্রোনের সমন্বয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে, যা ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সরাসরি জবাব।
এই অভিযানে ‘ইমাদ’, ‘গাদর’ ও ‘খায়বার শেকান’ নামে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল হাইফা, তেল আবিব ও ইসরাইলের উত্তরাঞ্চল।
ইসরাইলের শোধনাগার, বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র এবং বিমান বাহিনীর জ্বালানি সরবরাহ স্থাপনাগুলোকে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত করাই এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর নির্ভুলতা এবং শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গভীরে প্রবেশ করার ক্ষমতাকে প্রমাণ করে। তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র এবার ব্যবহার করেছে ইরান।
ইমাদ ক্ষেপণাস্ত্র: ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ইমাদ’ এই অভিযানে মূল ভূমিকা পালন করেছে। প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পাল্লাবিশিষ্ট এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘কদর’ ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে উন্নত করা হয়েছে এবং এটি আঘাত হানার আগ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ওয়ারহেড দিয়ে সজ্জিত, যা ম্যানুভারিং ফিনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্রের উচ্চ নির্ভুলতা হাইফার কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুগুলোকে সফলভাবে আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে।
গাদর ক্ষেপণাস্ত্র: ‘গাদর’ ক্ষেপণাস্ত্র, তিনটি ভিন্ন মডেলে ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৯৫০ কিলোমিটার পাল্লায় তৈরি করা হয়েছে। এটি আবার তার কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। উন্নত জাইরোস্কোপিক নির্দেশনা ব্যবস্থা এবং তরল জ্বালানি ব্যবহার করে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শত্রুর প্রতিরক্ষা ও লজিস্টিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
খায়বার শেকান ক্ষেপণাস্ত্র: উন্নত ‘খাইবার শেকান’ ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার রবিবার রাতের অভিযানকে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথমবারের মতো ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে উন্মোচন করা হয়েছিল। এর বিশেষভাবে ডিজাইন করা তিন-শঙ্কুযুক্ত ওয়ারহেড বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় উচ্চমাত্রার ম্যানুভারিং ক্ষমতা প্রদান করে। এটি বিশেষভাবে ‘ডেভিড’স স্লিং’ এবং ‘প্যাট্রিয়ট’ এর মতো উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। ছোট ও হালকা গঠনের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি বেসামরিক যান বা স্টিলথ লঞ্চার থেকেও নিক্ষেপযোগ্য।
ইসরাইলি মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযানে বেশ কয়েকজন ইসরাইলি হতাহত হয়েছেন। দখলকৃত ভূমির উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোতে প্রকাশিত ছবিগুলোতে ব্যাপক বিস্ফোরণ, হাইফার তেল স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ড এবং সামরিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ দেখা যায়।
ইসরায়েলি হামলায় ইরানের আইআরজিসি কমান্ডার ও সৈন্য নিহত
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সংঘাত চতুর্থ দিনে পৌঁছেছে এবং উভয় পক্ষেই হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর একটি ইউনিট আনসার আল-মাহদি কোর জানিয়েছে, আজ সোমবার সকালে জানজান প্রদেশে ইসরায়েলি হামলায় তাদের একজন কমান্ডার এবং একজন সৈন্য নিহত হয়েছেন।
আইআরজিসি সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিহতদের জানজানের ইজরুদ জেলার আইআরজিসি কমান্ডার রেজা নাজাফি এবং সৈন্য হাসান রাসুলি হিসেবে শনাক্ত করেছে।
এর আগে গতকাল রবিবার বিকেলে ইসরায়েলের হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার ডেপুটি হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আইআরজিসির তৃতীয় ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহসেন বাঘেরিও নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার ইসরায়েলের আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরানজুড়ে সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী এবং নারী ও শিশুসহ ২২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অপরদিকে ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে ২১ জন নিহত হয়েছেন।
ইরানের সর্বশেষ হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, আহত প্রায় ৩০০
ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে রবিবার রাতে ও সোমবার ভোরে নতুন করে দুই দফায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। সর্বশেষ এসব হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া আহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৩০০ জনে পৌঁছেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
সোমবার সকালে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাতভর ইরান থেকে দেশের উত্তর ও কেন্দ্রস্থলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে অন্তত ২৮৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী একজন নারী গুরুতর আহত এবং ১৪ জন মাঝারিভাবে আহত হয়েছেন। বাকিদের বেশিরভাগই হালকা আহত অথবা তীব্র মানসিক আঘাত পেয়েছেন।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদম (এমডিএ) জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হাইফা শহরে তিনজন এবং মধ্য ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
যার মানে, চার দিন আগে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হামলা শুরু করার পর থেকে তেহরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন।
আজ সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুমকি দিয়ে বলেছেন, “ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তেহরানের বাসিন্দাদের ভুগতে হবে।”
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির দিকে ইঙ্গিত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, “তেহরানের অহংকারী একনায়ক একজন ভীত খুনি হয়ে উঠেছে, যিনি ইসরায়েলের বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় যাতে ইসরায়েলি বাহিনী তার ক্ষমতা ধ্বংসকারী আক্রমণ চালিয়ে যেতে না পারে।”
কাটজ বলেন, “তেহরানের বাসিন্দাদের এর মূল্য দিতে হবে এবং তা খুব শিগরিগই।”
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্য ইরানি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস ক্ষতিগ্রস্ত
ইসরায়েলে রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল দুই দফায় ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইরানের সর্বশেষ এই হামলায় তেল আবিব ও হাইফাসহ অন্তত ৪টি অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জানা গেছে, অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে ইরানের ৪টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে সরাসরি আঘাত হেনেছে। এই হামলায় তেল আবিবে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর আলজাজিরার।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে মাইক হাকাবি বলেন, “তেল আবিবে মার্কিন দূতাবাস ভবনের কাছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভবনের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।”
তিনি জানান, মার্কিন কর্মীদের কোনো আঘাত লাগেনি এবং জেরুজালেম ও তেল আবিবে দেশটির দূতাবাস ও কনস্যুলেট আজ বন্ধ থাকবে।
ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আরো ‘বিধ্বংসী’ হামলার প্রতিশ্রুতি ইরানের
তেহরানে নতুন করে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে আরো ‘বিধ্বংসী’ অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি) রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-তে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, “ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে আরো বিধ্বংসী অভিযান চালাবে তেহরান। ইসরায়েল সম্পূর্ণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত’ হামলা অব্যাহত রাখবে।”
ইসরায়েলে ইরানের সর্বশেষ হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং আরো কয়েক ডজন ইসরায়েলি আহত হয়েছেন।
ইরানের কুদস ফোর্সের সদর দপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কিছুক্ষণ আগে সামাজিক যোগযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে জানিয়েছে, তারা ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত কুদস ফোর্সের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে।
কুদস ফোর্স হলো ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর-এর একটি শাখা, যা মূলত বিদেশি কার্যক্রমের জন্য পরিচিত। কুদস ফোর্স, আইআরজিসির একটি অভিজাত শাখা হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সামরিক অভিযান এবং প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো- যা লেবানন থেকে ইরাক, ইয়েমেন এবং সিরিয়া পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে মিত্র মিলিশিয়াদের সমর্থন করার জন্য কাজ করে থাকে।
ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের মধ্যে বিপুল সংখ্যক ট্যাঙ্কার বিমান মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র
চলমান ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের মধ্যে, মার্কিন বিমান বাহিনী আটলান্টিক মহাসাগরে মার্কিন ঘাঁটি থেকে বিপুল সংখ্যক ট্যাঙ্কার বা জ্বালানিবাহী বিমান মোতায়েন করার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং তথ্য অনুসারে, রবিবারের শেষের দিকে কেসি-১৩৫ এবং কেসি-৪৬ ট্যাঙ্কার বিমানের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, কমপক্ষে ৩০টি বিমান পূর্ব দিকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ধরনের ট্যাঙ্কার বা জ্বালানিবাহী বিমানগুলো তাদের নিজ দেশ থেকে অনেক দূরে বিমান হামলায় অংশগ্রহণকারী বিমানগুলোতে জ্বালানি ভরার জন্য প্রয়োজন, যেমন ইরানে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলা।
অর্থাৎ, ইরানে হামলা চালাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো আকাশে থাকা অবস্থাতেই মার্কিন কেসি-১৩৫ এবং কেসি-৪৬ ট্যাঙ্কার বিমানগুলো থেকে জ্বালানি নিতে পারবে।
মধ্য ইসরায়েলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিহত ৩, আহত ১০
আজ সোমবার মধ্য ইসরায়েলের তেল আবিবসহ চারটি এলাকায় ইরানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাতে হেনেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, হামলার স্থান থেকে ৬৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী একজন নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন, ছয়জন মাঝারিভাবে আহত এবং ৬০ জন হালকা আহত বা তীব্র উদ্বেগে ভুগছেন।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
এমডিএ আরো জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ইরানের চারটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলগুলোতে উদ্ধার অভিযান জোরদারভাবে চলছে।
ইরানের দশম দফার হামলায় কেঁপে উঠল ভোরের ইসরায়েল
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। রবিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর পর, সোমবার (১৬ জুন) ভোর হতে না হতেই দ্বিতীয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইরানের এটি দশম আক্রমণ।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সোমবার ভোরে ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরপরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হোম ফ্রন্ট কমান্ড সাধারণ ইসরায়েলিদের বোমা শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছে।
তেহরান টাইমস জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফায় সরাসরি আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কঠোর সেন্সরশিপ সত্ত্বেও, অনলাইনে প্রচারিত ফুটেজে হাইফায় একটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগুনে পুড়ে গেছে বলে দেখা গেছে। অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। তেল আবিবের একাধিক স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরান ইসরায়েলের নেগেভ মরুভূমি এবং কিরিয়াত গাটের কৌশলগত স্থানগুলোর পাশাপাশি হাইফার অন্যান্য অঞ্চলগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে ইসরায়েলের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে তেহরান।
আগের দিনগুলোতে, ইরান ইসরায়েলের বৃহত্তম তেল শোধনাগার এবং ১৫০টিরও বেশি সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি করেছে।
Advertisement
শুক্রবার ভোরে তেহরানের আবাসিক ভবন ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা চালানোর পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
তেহরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জন ইরানি সামরিক কর্মকর্তা, ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং ২২০ জনেরও বেশি ইরানি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইরান ইসরায়েলকে ‘অসহায়’ না করা পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।