মুয়াজ্জিনসহ ২ জামায়াত কর্মীকে নিজেই গুলি করেন ওসি নজরুল (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কুমিল্লার নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি,সোমবার   ০২ জুন ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ১৯ ১৪৩২ :

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে নিজেই গুলি চালিয়ে মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা বেলাল হোসেন মজুমদার এবং জামায়াত কর্মী বেলায়েত হোসেনকে পঙ্গু করে দেন ওসি নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় ওসি নজরুলসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

বুধবার কুমিল্লার জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী ইমাম মাওলানা বেলাল হোসেন মজুমদার।

 

মামলায় নাঙ্গলকোট থানার তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলাম, এসআই বাবুল আলী, মো. সালাউদ্দিন আহমেদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামছু উদ্দিন কালু, সাবেক পৌর মেয়র আবদুল মালেক, নাজমুল হাসান ভুঁইয়া বাছির, সাইফুল ইসলাম চেয়ারম্যানসহ ৩১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

 

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নাঙ্গলকোট উপজেলার দোলখা ইউপির বামগ্রাম জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন মজুমদার জামায়াতের কর্মী ছিলেন এবং তিনি মসজিদে ইসলামি আলোচনা করতেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতারাসহ নাঙ্গলকোট থানার ওসি নজরুল তাকে নিবৃত্ত করতে নানারকম চাপ প্রয়োগ করতেন।

 

২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতাদের ইন্ধনে মাওলানা বেলাল হোসেন মজুমদার ও বেলায়েত হোসেনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় ওসি নজরুল সঙ্গীয় ফোর্স। আনুমানিক রাত আড়াইটায় ঢাকা-নোয়াখালী হাইওয়ে সড়কের লুধুয়া নামক স্থানে ওসি নজরুল বেলাল ও বেলায়েতের পায়ে গুলি করেন। এসময় পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন গুলির শব্দ শুনে এগিয়ে আসলে ওসি ও তার সঙ্গীয়রা ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক তৈরি করে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের নির্দেশ করে গুলিবিদ্ধ দুজনকে পুলিশের ভ্যানে তুলে দিতে।

 

রক্তাক্ত দুজনকে ভ্যানে তুলে দেওয়ার পর প্রথমে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওসি নজরুল তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলাসহ ২টি মামলা দেন। কারা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ দুজনের অবস্থার অবনতি ঘটলেও তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি দেয়নি ওসি নজরুল।

 

পরে অস্ত্রোপচার করে বাম পা কেটে ফেলা হলে পঙ্গু হয়ে যান মাওলানা বেলাল। এক বছরের বেশি সময় দুজনই কারাবন্দি ছিলেন। মর্মস্পর্শী এই ঘটনা তখন মানুষের মুখে মুখে থাকলেও ক্ষমতার দাপটে ওসি নজরুলের অপকর্ম নিয়ে মুখ খোলার সাহস করেনি কেউ।

 

স্থানীয়রা জানান, ওসি নজরুল ইসলাম সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের বিশ্বস্ত লোক ছিলেন। তাই তাকে দীর্ঘ বছর যাবত সদর দক্ষিণ এবং নাঙ্গলকোট থানায় রাখা হয়। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে ওসি নজরুল ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক।

Advertisement

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন বলেন, মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা বেলাল হোসেনসহ দুই জামায়াত কর্মীকে গুলি চালিয়ে পঙ্গু করার ঘটনায় তৎকালীন নাঙ্গলকোট থানার ওসি নজরুল ইসলামসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছে। মামলাটি কোন সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দেবেন সেই বিষয়ে দুয়েক দিনের মধ্যে আদালত নির্দেশ দেবেন।