চীফ ইঞ্জিনিয়ারের পরিকল্পনায় মোংলা বন্দরে জাহাজে ডাকাতির নাটক (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম(টিভি),মোংলা বন্দর প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার , ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬ :

মোংলা বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। খোদ জাহাজের নাবিকেরাই এ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। জাহাজের নাবিক ও স্থানীয় জাহাজ চোরাকারবারিদের যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যোগসাজশের দায়ে আটক করা হয়েছে জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ারকে।

Advertisement

জানা যায়, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান পিএনএন শিপিং লাইন্সের মালিকানাধীন এম.ভি সেজুঁতি জাহাজ ভারত থেকে পাথর বোঝাই করে গত বছরের ২২ জুন মোংলা বন্দরের বেসক্রিক এলাকায় নোঙ্গর করে। এরপর জাহাজটি পণ্য খালাস কাজ শেষ করে। পণ্য খালাস শেষে জাহাটি সে সময় বন্দর ত্যাগের প্রস্তুতিও নেয়। কিন্ত জাহাজটি ওই সময়ে বন্দরে থাকা অবস্থায় হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে জাহাজটির বন্দর আর ত্যাগ করা সম্ভব হয়নি।

সেই থেকে যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে ওই জাহাজটি প্রায় বছরখানেক সময় ধরে বন্দর চ্যানেলের বেসক্রিক এলাকায় অলস পড়ে রয়েছে। জাহাজটি চালু (চলাচল) না থাকায় বাকী পড়ে জাহাজের নাবিকদের বেতন। ফলে আর্থিক সংকটে থাকা জাহাজের নাবিকেরা স্থানীয় চোরাকারবারিদের যোগসাজশে কয়েক দফায় ওই জাহাজের মালামাল চুরি করে বিক্রি করে দেয়। এরপর সর্বশেষ জাহাজের নাবিকেরা স্থানীয় চোরাকারবারিদের সহায়তায় জাহাজটিতে ডাকাতি করায়। কিন্তু সাজানো এ ডাকাতির ঘটনা জানাজানি হলে অভিযানে নামে কোস্ট গার্ড।

 

অভিযানে মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে আটক হয় ডাকাত সুমন হাওলাদার (২১), ডাকাতির মালের ক্রেতা সুমন হোসেন (৩০) ও ডাকাতির পরিকল্পনাকারী মুলহোতা জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জাহাজের ডাকাতি করা বিভিন্ন ধরণের মালামাও।

এদিকে এ ঘটনায় বুধবার (২৮ মে) দুপুরে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরে (মোংলা) আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অপারেশন কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার আবরার হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে এটি একটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও, জাহাজ কর্তৃপক্ষ, জাহাজের অফিসার ও ক্রু এবং আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিক ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল।

জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পায়নি। এতে করে নাবিকদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এ কারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্রুপ/ডাকাতের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়।

Advertisement

আটককৃত ব্যক্তিরা জানায়, তারা জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে। দূর্ভাগ্যজনাক হলেও এতো বড় ঘটনা সম্পর্কে সহায়তা চেয়ে জাহাজের মালিক পক্ষ ক্যাপ্টেন সাহিকুলকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ করা হলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। বর্তমানে উদ্ধারকৃত মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসঙ্গে আটককৃত ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

চীফ ইঞ্জিনিয়ারের পরিকল্পনায় মোংলা বন্দরে জাহাজে ডাকাতির নাটক  , ছবি:ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম(টিভি)