ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি ,বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ : ছেলে হয়েও মেয়ে সেজে চুরি করেন তারা। আর চাঁদাবাজি করেন তৃতীয় লিঙ্গ পরিচয়ে। এখানেই শেষ নয়, মুখ লুকাতে চুরি করার সময় ব্যবহার করেন ছাতা। এমনকি নষ্ট করে ফেলেন সিসি ক্যামেরাও।
Advertisement
রাজধানীতে অভিনব এই চোর চক্রটির দুই সদস্যকে সম্প্রতি গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিভিন্ন অফিস টার্গেট করে চুরি করেন তারা।
রাজধানীর ষাটফুট এলাকার একটি অফিসে গত ২৭ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টায় প্রবেশ করতে দেখা যায় এক নারীকে। দ্বিতীয় তলায় উঠে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন তিনি। এবার অফিসে ঢুকে অভিনব এক কৌশল প্রয়োগ করেন। ছাতা দিয়ে প্রথমে মুখ লুকানোর চেষ্টা। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঢেকে রাখতে দেখা যায় সেই ছাতা দিয়ে।
চুরির উদ্দেশে মেয়ে সেজে মুখ লুকিয়ে অফিসে প্রবেশ করছেন চোর চক্রের এই সদস্য। ছবি: সময় সংবাদ
অফিসে থাকা নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান ওই নারী। এই ঘটনার তদন্ত করতে আশপাশের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আরও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। একটি ফুটেজে দুই নারীকে এদিক- সেদিক ঘুরতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন ওই নারী, যাকে অফিসের ভেতরে দেখা গিয়েছিল।
Advertisement
এবার আসামি ধরতে গিয়ে তাজ্জব পুলিশ! যে দু’জন চুরিতে অংশ নিয়েছিলেন তারা কেউ নারী নয়, দুজনই পুরুষ।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে ধরা পড়লেন নারীবেশী এই ব্যক্তি (লাল বৃত্ত), যাকে অফিসের ভেতরে দেখা গিয়েছিল। ছবি: সময় সংবাদ
তাদের মধ্যে একজনের নাম মনির। যখন মেয়ে সাজে তখন হয়ে যায় মনি। কখনো আবার তৃতীয় লিঙ্গ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে। চার বছর ধরে চুরি করে আসছে মেয়ে সেজে। আরেকজন রফিক, নিজেকে পরিচয় দেন রুপা নামে। শতাধিক চুরির অভিযোগ দুজনের বিরুদ্ধেই।
পুলিশ বলছে, শতাধিক চুরিতে জড়িত থাকার পরেও তাদেরকে শনাক্ত করা যায়নি শুধু মেয়ে সাজার কারণে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন সময় সংবাদকে বলেন, শুধু এই অপরাধ করার জন্যই তারা হিজড়া সেজেছেন। তারা নারীদের পোশাক পড়েই এসব অপরাধ করেছেন। এভাবে নারী সেজে তারা আগেও চুরি করে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
সময় সংবাদের সঙ্গে কথা বলছেন মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন,
এক দিকে তিনি পুরুষ হয়ে নিজেকে নারী সেজে আড়াল করেছেন। তার ওপর আবার রুমের ভেতর ছাতা নিয়ে ঘুরেছেন তিনি। সে কিন্তু তার মুখ ঢেকেই রেখেছিল। কিন্তু রুমের ভেতর একটু হাত দেখতে পেয়েছিলাম। পাশাপাশি তার হাঁটা লক্ষ্য করেছি। একটু একটু অংশ মিলিয়ে তাকে শনাক্ত করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এজন্য অনেক সময় লেগেছে। আমরা একটা টিম কাজ করেছি।
পুরুষ হয়েও তৃতীয় লিঙ্গ পরিচয়ে মিরপুর এলাকায় চাঁদাবাজি করে এমন কয়েকজনের নাম পেয়েছে পুলিশ।