ইউএনওর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন (ভিডিও)

SHARE
ইউএনওর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের কলেজছাএীর ধর্ষণের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),টাঙ্গাইল প্রতিনিধি,শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ : কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী, প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন টাঙ্গাইলের এক কলেজ ছাত্রী। বিয়ের প্রলোভনে নিবার্হী কর্মকর্তার লালসার শিকার হওয়া ওই কলেজ ছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ ও তার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশও দিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় বিচার না পাওয়া পর্যন্ত প্রাণহানির শঙ্কায় দিন পার করছেন ওই কলেজ ছাত্রী।

বর্তমানে মনজুর হোসেন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।

কলেজ ছাত্রীর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ২০২১ সালে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেন দায়িত্বে থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয় কলেজ ছাত্রীর। পরিচয়ের এক পর্যায়ে নির্বাহী কর্মকর্তা কলেজ ছাত্রীকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন।

কলেজ ছাত্রীর বাবা-মা অসুস্থ থাকার কারণে পারিবারিক ভাবে বিয়ে ঠিক হয়। এ বিষয়টি ইউএনও মনজুর হোসেনকে অবহিত করেন কলেজ ছাত্রী। পরে ইউএনও বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে কলেজ ছাত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ইউএনও টাঙ্গাইল কুমুদিনী কলেজের সঙ্গে পাওয়ার হাউজের পেছনে একটি বাসা ভাড়া নেন। বাসা ভাড়া নেয়ার আগে তিনি নিজের সমস্ত তথ্য গোপন রেখে, মিথ্যা পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তারা দুই মাস সংসার করেন।

পরবর্তীতে কলেজ ছাত্রী ইউএনও’র পার্সোনাল ব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করে জানতে পারে ইউএনও বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। ইউএনওর কাছে কলেজ ছাত্রী এ বিষয় নিয়ে জানতে চায় কেন তার কাছে বিয়ের বিষয়টি গোপন করা হয়েছে। সেখানে কলেজ ছাত্রী উত্তেজিত হলে ইউএনও তাকে থামতে বলে। পরবর্তীতে মনজুর হোসেন কলেজ ছাত্রীর মোবাইল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং মনজুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ও মেসেজ চ্যাটিং সকল আলামত ডিলিট করে দেয়। ইউএনও মনজুর হোসেন কলেজ ছাত্রীকে এ বিষয়ে কারও কাছে শেয়ার না করার অনুরোধ জানান এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কলেজ ছাত্রী বলেন, ইউএনও মনজুর হোসেনের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে আমাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখায় এবং তার সরকারি বাস ভবনে আমাকে নিয়ে যায়। সেখানে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও মনজুর হোসেন বিবাহিত হয়েও তিনি অবিবাহিত পরিচয় দিয়েছেন। আমি সরল মনে তার কথা শুনে বিশ্বাস করেছি। তিনি শুধু আমাকে ব্যবহারই করেছেন সামাজিকভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। বাংলাদেশে একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েও আমার সঙ্গে এরকম করতে পারেন এটা আমি কোনদিন বিশ্বাস করিনি। আমি আমার প্রাপ্য অধিকার চাই।

ইউএনও মনজুর হোসেনের কাছে মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে কল দিলে, তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. শামীম আলম চ্যানেল 24 কে বলেন, করিমগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মনজুর হোসেন গত ৩ এপ্রিল যোগদান করেন। অভিযোগের ব্যাপারে তিনি জানেন না।

এ ব্যাপারে কলেজ ছাত্রীর মা বলেন, ইউএনও মনজুর হোসেন আমার মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা সামাজিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার মেয়ে কলেজে যেতে পারছে না। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি এর সঠিক বিচার চাই।

অভিযোগের বিষয় নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) শুনানি হওয়ার কথা ছিলো বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গণি।