অনলাইন থেকে অফলাইনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চাঁদপুর প্রতিনিধি,সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১ : মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সোনিয়া রহমান। দুই ভাই-বোনের মধ্যে বড়। ছোট থেকেই দুষ্টু স্বভাবের তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা, বই পড়া ও লেখালেখি করা তার অভ্যাস। অর্জনের তালিকায় থাকতো যে কোনো প্রতিযোগিতায় প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান। ইচ্ছে ছিল নিজে কিছু করবেন। ইচ্ছে মতো চলবেন। সোনিয়ার জন্ম ও বেড়ে উঠা চাঁদপুর সদরে। বর্তমানে তিনি অনার্স কোর্সে অধ্যয়নরত আছেন।

লালন করা স্বপ্নটা ইন্টারমিডিয়েট পড়া অবস্থায় তীব্র হতে থাকে। এর মধ্যেই সোনিয়াকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। কিন্ত তার বড় হওয়ার ইচ্ছে বন্ধ হয়নি। স্বামীর সহযোগিতায় ফেসবুকে একটা গ্রুপ খুলেন। সেখানে নিয়মিত লেখালেখি ও দৃশ্য আঁকার পোস্ট করতেন। পাশাপাশি খাবারের ছবিও দিতেন। তখন থেকে তার মনে সাহস উঁকি দেয়।

সোনিয়া বলেন, আমার বাড়ি গ্রামের দিকে। এখানকার মানুষ ফেসবুক ও ইন্টারনেট সর্ম্পকে তেমন বুঝতো না। আমার বাসায় কিছু অব্যবহৃত প্রোডাক্ট ছিল। নিজের কৌতূহল থেকে সে ছবি গ্রুপে দিয়ে দেই। অবিশ্বাস্যভাবে ৭টির মধ্যে ৩টিই বিক্রি হয়ে যায়। আত্মবিশ্বাসের জায়গাটা বড় হতে থাকে।  তারপর সাধারণ কিছু পোশাকের ছবি গ্রুপে দেই। তখন সবার সাড়া পাই। পাশাপাশি অনেকেই ব্যবসার জন্য সাপোর্ট দেন। বিশেষ করে আমার স্বামী ও বাবা-মা সবসময় পাশে ছিলেন।  তখন থেকে সিদ্ধান্ত নেই অনলাইনে ব্যবসা করবো। সেসময় গ্রুপের নাম দেই ‘ফ্যাশন কর্নার।’

প্রথমে ২৬০০ টাকার পণ্য কিনে ব্যবসা শুরু করেন। সাথে সাথে ফেসবুক গ্রুপের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। গ্রুপে শাড়ি-পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, কামিজ, বাচ্চাদের ড্রেস ও  ফ্যামিলি ম্যাচিং ড্রেস,  জুয়েলার্স  ও অন্যান্য পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে অর্ডারের পরিমাণ বাড়তে থাকে। সেইসঙ্গে মানুষের চাহিদাও। অল্পতেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘ফ্যাশন কর্নার’ গ্রুপ।  অল্প দিয়ে শুরু করলেও এখন প্রতি মাসে অর্ধলাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি হয়। হোম ডেলিভারি ও কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য অর্ডার পৌঁছে দেওয়া হয়।

খানিকটা আক্ষেপের স্বরে সোনিয়া বলেন, প্রথমে যখন হোম ডেলিভারি দিতাম, সবাই বলতো মেয়ে হয়ে এসব কাজ করছি। মেয়েকে দিয়ে এখন কাজ করে খাওয়াবে। যখন দেখলো অনলাইনে অনেক ভালো বিক্রি হচ্ছে, তখন সবাই ভালো বলছে। শ্বশুর বাড়ি, স্বামী ও ফ্যামিলি থেকে সবসময় অনুপ্রেরণা পেয়েছি।