ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিনোদন প্রতিনিধি,শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : উপমহাদেশের কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
সঙ্গীত জগতের এই কিংবদন্তীর শেষযাত্রায় পা মিলিয়েছেন বন্ধু—অনুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ফুলের চাদরে সাজানো শিল্পীর মরদেহ নিয়ে ভিলে পার্লের পবনহংস শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হয় শববাহী গাড়ি। ফুল, মালা, বাপ্পি লাহিড়ির ছবি দিয়ে সাজানো একটি ট্রাকে মহাশ্মশানের উদ্দেশে রওনা হয়।
সেই ট্রাককে ঘিরে চারপাশে উপচে পড়ছিল অনুরাগীদের ভিড়। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় পবনহংস শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় বাপ্পি লাহিড়িকে। সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তার।
কিন্তু এমন দিনেও তার পাশে দেখা যায়নি ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিঠুন চক্রবর্তীকে। বাপ্পি লাহিড়িকে শেষ বিদায় জানাতে যাননি বলিউডের ‘ডিস্কো কিং’।
বাপ্পি লাহিড়ি আর মিঠুনের বন্ধুত্ব ছিল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এ কথা সবারই জানা। এ দু’জন জুটি গড়ে আশির দশকের ব্লকবাস্টার অনেক ছবি উপহার দিয়েছেন। মিঠুনকে বলিউডের ‘ডিস্কো কিং’ বানিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়িই।
সেই মিঠুন কেন বন্ধুর শেষযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন না। এ নিয়ে সমালোচনা শুরুর আগেই কারণ জানিয়েছেন মিঠুন নিজেই।
তিনি জানান, প্রিয় ‘বাপিদা’র নিথর দেহ দেখার মতো অবস্থায় ছিলেন না তিনি। বাপ্পি লাহিড়িকে হাসিমুখ ছাড়া আর কোনও রূপে কল্পনাই করতে পারেন না তিনি। তাই শেষকৃত্যের দিনে হাজির হননি।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিঠুন বলেন, “বাপ্পিদা আমার দীর্ঘদিনের সহযোগী। তিনি যেদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আমি বেঙ্গালুরুতে ছিলাম। এ খবরে আমি অনেক শোকাহত হয়েছিলাম। আমি তাকে ওভাবে দেখতে চাইনি। আমি বাপ্পি দাকে যেভাবে চিনি, তাকে মনে রাখতে চাই। আমি তাকে এভাবে দেখতে চাই না। বাপ্পি দা চিরকাল আমার সঙ্গে থাকবেন। এটাই আমার চিন্তা। মহামারীর সময় যখন আমার বাবা মারা যান, আমি আসতে পারিনি। আমি তাকে এভাবে দেখতে চাইনি। আমরা কেমন ছিলাম, সে জন্য আমি তাকে স্মরণ করতে চেয়েছিলাম। একইভাবে আমি বাপ্পিদাকে স্মরণ করতে চাই আমরা কীভাবে বসতাম। একসঙ্গে গান বানাই, গান শুনি। আমি শুধু তার সঙ্গে ভাল দিনগুলো মনে রাখতে চাই।”
প্রসঙ্গত, বলিউডে অন্য ধারার নাচ নিয়ে এসেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। তার সে নাচের ধরণ ভালো বুঝতে পারতেন বাপ্পি লাহিড়ি। সিনেমায় মিঠুনের জন্য সেভাবেই গান বানাতেন, কম্পোজ করতেন। আর সিনেপ্রেমীরা মিঠুনের সেসব নাচ গোগ্রাসে গিলত।
বাপ্পি-মিঠুন জুটি ‘ডিস্কো ড্যান্সার, ‘কসম প্যাদা করনে ওয়ালে কি’ এবং ‘ডান্স ড্যান্স সিনেমা’ উপহার দেয়। যেসব ছবির ‘আই অ্যাম এ ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘জিমি জিমি জিমি আজা’, ‘ইয়াদ আ রাহা হ্যায়’, ‘কাম ক্লোজার’ এর মতো গানগুলো আজও সিনেপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া তোলে।