ডিবির ৮ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত : কী ঘটেছিল নিউ ওয়েভ’ ক্লাবে

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২১ এপ্রিল : রাজধানীর কাফরুলের ‘নিউ ওয়েভ’ ক্লাবে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পরিচয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর গোয়েন্দা পুলিশের একজন সহকারী কমিশনারসহ আটজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে গত মঙ্গলবার রাতে ইব্রাহিমপুরের ‘নিউ ওয়েভ’ ক্লাবে ঠিক কী ঘটেছিল, তা স্পষ্ট হয়নি পুলিশ কর্মকর্তাদের কথায়। বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

এ কমিটির সদস্য মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদ জানান, তাদের তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জামিল আহমেদ ও পুলিশ সদর দফতরের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার রাতে সাধারণ পোশাকে ‘নিউ ওয়েভ’ ক্লাবে যায়। ১১ জনের ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার দলের সহকারী কমিশনার রুহুল আমিন। ওই ক্লাবে জুয়া খেলা হচ্ছে অভিযোগ তুলে তারা ক্লাবে থাকা লোকজনের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা নিয়ে নেন।

এ সময় পরিচয় জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন বলে একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়। এরপর সেখান থেকে চারজনকে আটক করে ক্লাব থেকে বেরিয়ে যান গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। কাফরুল এলাকায় সেনানিবাসের ফটকের চেকপোস্টে মিলিটারি পুলিশ গাড়ি থামালে আটকরা মারধর করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন। পরে সেখানে কাফরুল থানা পুলিশ আসে এবং তারা অভিযানে অংশ নেওয়া ১১ ডিবি সদস্যকে থানায় নিয়ে যান।

ওই ক্লাবে আসলে কী ঘটেছিল জানতে চাইলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, কাফরুলে ডিবির একটি টিম অপারেশনে ছিল। সেখানে একটি ক্লাব থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। কয়েকজনকে আটক করে ফেরার পথে মিলিটারি পুলিশ তাদের আটকায় ও পরে থানা পুলিশ যায়। ক্লাব থেকে আটকদের ‘জোর করে ধরে আনা হয়েছিল’ জানিয়ে বাতেন বলেন, তারা কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না। সেখানে একটা কনফিউশন তৈরি হয়। এরপর সেখান থেকেই আমাদের পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি তদন্ত কমিটি করে দেন। যাদের ধরা হয়েছিল তাদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন বলেন, ডিবির লোক তো অন্য কোনো বাহিনীর পরিচয় দেওয়ার দরকার নেই। তাদের তো নিজেদেরই পরিচয় আছে। তবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দায়িত্বে থাকা ওই দলটির মাদকবিরোধী অভিযানের ‘জুরিসডিকশন’ ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) মো. নুরুন্নবী জানান, ওই অভিযানে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের আট সদস্যকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তাদের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ‘নিউ ওয়েভ’ ক্লাবে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী কমিশনার রুহুল আমিন বলেন, আমার কোনো কথা বলা ঠিক হবে না। আমি তো এখন অভিযুক্তের কাতারে। ঘটনাটি সিনিয়র স্যাররা তদন্ত করে দেখছেন। তবে এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে অভিযান চালানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডিবি সারা বাংলাদেশে অপারেশন করে। যশোর, নড়াইল কি আমাদের জোন? সেখানেও তো আমরা কাজ করি। এখানে তো আইনগত কোনো বাধা নেই। ওই ঘটনায় কাফরুল থানার ওসি শিকদার মো. শামীম জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।