শুধুমাত্র সোনার জন্যই দুই শিশুকে হত্যা, দোকানি গ্রেপ্তার

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১৬ ফেব্রুয়ারি : চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিহত দুই শিশুর গায়ে থাকা স্বর্ণালংকার যে দোকানে বিক্রি করা হয়েছিল, সেই দোকানি মো. পলাশকে (৩০) বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানার পুলিশ। পলাশ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটী আঙ্গারিয়াপাড়ার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাযহারুল ইসলাম জানান, নিহত দুই শিশুর কাছে থাকা ১২ আনা ওজনের গলার চেইন ও কানের দুলের গলানো সোনার পিণ্ড দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পলাশ এ স্বর্ণালংকার আসামি লাকী আক্তারের কাছ থেকে কিনেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তবে লাকী আক্তারের শ্বশুর ইয়াসিন আলী পুলিশের কাছে এখনো কিছু স্বীকার করেননি। এ ঘটনায় শাশুড়ি তানজিলা বেগমের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইয়াসিন আলী ও পলাশকে আজ দুপুরে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। তানজিলা বেগমকে নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত রোববার পৌর এলাকার নামোশংকরবাটীর ফতেপুর মহল্লার ছোট্ট দুই শিশু সুমাইয়া খাতুন (৭) ও মেহজাবিন আক্তার (৬) স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে বাইরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওই দিনই মেহজাবিনের বাবা আবদুল মালেক সদর থানায় অপহরণের মামলা করেন। মঙ্গলবার প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজা শুরু করেন সুমাইয়ার স্বজনেরা। পরে প্রতিবেশী ভ্যানচালক মো. ইয়াসিনের বাড়িতে তার প্রবাসী ছেলে মো. ইব্রাহীমের স্ত্রী লাকী আক্তারের (২৪) শোবার ঘরের খাটের নিচ থেকে সুমাইয়া ও মেহজাবিনের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে গত বুধবার মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই দিন বিকেলে লাকী আক্তার আদালতে ১৬৪ ধারায় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তিকে তিনি জানান, স্বর্ণালংকারের লোভে শিশু দুটিকে খুন করেছেন তিনি। শিশু দুটির কানে সোনার দুল এবং সুমাইয়ার গলায় সোনার চেইন ছিল। তাদের হত্যার পর তিনি সেগুলো ২১ হাজার টাকায় এলাকার এক স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করেছেন। নিহত মেহজাবিনকে গতকাল বিকেলে নামোশংকরবাটী ডিহিপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। সুমাইয়ার বাবা দুবাইয়ে থাকায় তার লাশ সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিল। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুবাই থেকে ফিরে আসার পর সদর হাসপাতালের মর্গের হিমঘর থেকে লাশ বাড়ি নিয়ে আসা হয়। সুমাইয়া আক্তারের বাবা মিলন রানা বলেন, ‘১৩ মাস আগে বাড়ি এসেছিলাম। এবার এসে লাশ দেখলাম। এখন আমার আর কিছু বলার মতো অবস্থা নেই।’