
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, শুক্রবার ৩১ অক্টোবর ২০২৫ || কার্তিক ১৫ ১৪৩২ :
মুম্বাইয়ের পওয়াই এলাকায় ১৭ শিশুকে জিম্মি করা রোহিত আর্যা নামের এক ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে গুলিতে আহত হয়ে মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবারের এ ঘটনায় প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি অবস্থা শেষে সব শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
Advertisement

পুলিশ জানায়, উদ্ধার অভিযানের সময় আর্যা এয়ারগান দিয়ে গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সেই গুলিতে আর্যার বুকে আঘাত লাগে এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘটে ‘আরএ স্টুডিও’ নামের একটি ছোট চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে। পুলিশ জানিয়েছে, আর্যা ওই স্টুডিওতে অডিশনের কথা বলে ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ডেকে নিয়ে যান এবং পরে তাদের জিম্মি করে রাখেন।
দুপুর প্রায় দেড়টার দিকে পওয়াই থানায় ফোনে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় আলোচনার চেষ্টা, কিন্তু আর্যা শিশুদের ছাড়তে অস্বীকার করেন এবং ক্ষতি করার হুমকি দেন। পরে পুলিশ জোরপূর্বক প্রবেশ করে সব ১৭ শিশুকে নিরাপদে উদ্ধার করে।
রোহিত আর্যা মূলত সরকারের এক প্রকল্পের আর্থিক হিসাবের জন্য আলোচনা করার জন্য প্রশাসনকে চাপ দিতেই শিশুদের জিম্মি করেন।
Advertisement
প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

ঘটনার আগে আর্যা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে তিনি বলেন, আত্মহত্যার বদলে জিম্মি করার পথ বেছে নিয়েছেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, “আমি রোহিত আর্যা। আত্মহত্যা করার বদলে আমি একটা পরিকল্পনা করেছি—কিছু শিশুকে জিম্মি করেছি। আমার দাবি সহজ, নৈতিক ও নীতিগত কিছু প্রশ্ন। তোমাদের সামান্য ভুল পদক্ষেপই আমাকে উস্কে দেবে।”
তিনি আরও হুমকি দেন, “আমি কোনো টাকা চাই না, আমি সন্ত্রাসীও নই। আমি শুধু কথাবার্তা চাই। যদি আমি না বাঁচি, অন্য কেউ আমার এ কাজ করবে, কিন্তু এটা হবেই।”
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি এয়ারগান ও কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের পাত্র উদ্ধার করেছে, যা দিয়ে আর্যা পুলিশকে ভয় দেখাচ্ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিশুরা ‘ওয়েব সিরিজ’-এর অডিশনের জন্য স্টুডিওতে এসেছিল, যা একটি আবাসিক ভবনের নিচতলায় অবস্থিত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোহিত আর্যা আগে দাবি করেছিলেন যে, মহারাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ তার কাছ থেকে ‘পিএলসি স্যানিটেশন মনিটর প্রকল্প’-এর কাজ করিয়ে ২ কোটি রুপি পরিশোধ করেনি। এই প্রকল্পটি ছিল ‘চিফ মিনিস্টারস মাই স্কুল, বিউটিফুল স্কুল’ অভিযানের অংশ, যা তার ‘লেটস চেঞ্জ’ প্রচারণা থেকে ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল।
আর্যা অভিযোগ করেন, তিনি দু’বার অনশনও করেছিলেন এবং তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী দীপক কেসারকার তাকে ব্যক্তিগতভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি দাবি করেন, কেসারকার তাকে ব্যক্তিগতভাবে ৭ লাখ ও ৮ লাখ রুপির দুটি চেক দিয়েছিলেন, পরবর্তীতে আরও অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখেননি।
Advertisement
তবে মহারাষ্ট্রের শিক্ষা সচিব রণজিৎ সিং দেওল স্পষ্টভাবে জানান, রোহিত আর্যার সঙ্গে সরকারের কোনো ২ কোটি রুপির চুক্তি ছিল না। তিনি বলেন, “তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ওই প্রকল্পে অংশ নিয়েছিলেন এবং কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি সনদ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ‘মাই শালা, সুন্দর শালা’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে আলোচনাও হয়েছিল, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। তাই সরকার তার কাছে কোনো অর্থ পাওনা নয়।” সূত্র: এনডিটিভি



