https://www.facebook.com/share/v/1GLsdYk6Gy/
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),মেঘনা প্রতিনিধি, বুধবার ২৯ অক্টোবর ২০২৫ || কার্তিক ১৩ ১৪৩২ :
কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার আলোচিত যুবনেতা ও গণঅধিকার পরিষদ মেঘনা উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি সাইয়িদ খোকন ফেসবুক লাইভে এসে তার গ্রেফতারের নেপথ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। তিনি দাবি করেছেন—মেঘনা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর হোসেন তাকে রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন, টাকা না দেওয়ায় তাকে হুমকি দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়।
Advertisement

সাইয়িদ খোকন বলেন, “গত ২৪ অক্টোবর রাতে আনুমানিক ১২টার দিকে বাউড়খোলা ব্রিজের কাছে আমাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর হোসেন। সেখানে নিয়ে তিনি সরাসরি আমার কাছে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বলেন—‘তর চার ভাই তো বিদেশে থাকে, তুই টাকা দে, না হলে এমন মামলা দেবো তুই ছয় মাসের আগে জেল থেকে বের হতে পারবি না।’ আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি রেগে গিয়ে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন।”
খোকন আরও জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষে মেঘনা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছেন। “এই বিষয়টি নিয়েই আমার সঙ্গে শত্রুতায় জড়িয়ে পড়ে ইনচার্জ আলমগীর। কারণ, আমি নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমে ও স্থানীয়দের সাথে নিয়ে অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছি। এতে করে অনেক প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী ও কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।”
তিনি বলেন, “আমাকে বিকাল ৪টায় গ্রেফতার দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে আমি থানায় গিয়েছিলাম সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটার দিকে। তার আগেই জেলেদের পরিবার আমার কাছে এসে কান্নাকাটি করে জানায়—তাদের স্বজনদের পুলিশ আটক করেছে, যেন আমি কিছু একটা করি। তাদের অনুরোধে আমি নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর হোসেনকে ফোন করি। তখন তিনি আমাকে বলেন—‘আপনি থানায় আসেন, চা-পানি খান, আপনি যদি তাদের পক্ষে মুচলেকা দেন তাহলে আমি জেলেদের ছেড়ে দেব।’ কিন্তু সেটি ছিল একটি পরিকল্পিত ফাঁদ।”
Advertisement
প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

খোকনের দাবি, তিনি থানায় পৌঁছানোর পরপরই তাকে আটকে রাখা হয় এবং পরে তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি ও হামলার অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। “আমি নাকি তাদের ওপর হামলা করেছি—এমন হাস্যকর অভিযোগ এনে তারা আমাকে হয়রানির চেষ্টা করেছে। কিন্তু মহামান্য আদালত সমস্ত তথ্য-প্রমাণ যাচাই করে আমাকে জামিন দিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।”
লাইভে সাইয়িদ খোকন আরও বলেন, “আমার এই গ্রেফতারের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে—আমি মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, প্রশাসনের দুর্নীতি ও প্রভাবশালীদের অপকর্ম প্রকাশ করেছি। সেই কারণেই আলমগীরসহ কিছু ব্যক্তি আমার কণ্ঠ রোধ করতে চেয়েছে। কিন্তু আমি থামবো না। আমি মেঘনার মানুষ ও গণঅধিকার পরিষদের একজন কর্মী হিসেবে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবো।”
তিনি আরও দাবি করেন, “এই ধরনের পুলিশ অফিসারদের কারণে জনগণের মধ্যে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি মেঘনার মানুষ, মহামান্য আদালত ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি—যে ইনচার্জ আলমগীর হোসেন আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। মেঘনা থানায় যেন আর কোনো নিরপরাধ মানুষ এইভাবে হয়রানির শিকার না হয়।”
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মেঘনা ও আশপাশের এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
Advertisement
তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।



