দেশের প্রথম ভ্যাকসিন ও এন্টিভেনাম উৎপাদন প্লান্ট হচ্ছে মুন্সিগঞ্জে: ছবি ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),প্রতিনিধি, রোববার , ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ সফর ১৪৪৭ :
দেশের স্বাস্থ্য খাতে ভ্যাকসিন ও প্রয়োজনীয় এন্টিভেনমের চাহিদা মেটাতে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম ভ্যাকসিন ও এন্টিভেনম উৎপাদন প্ল্যান্ট। এরই মধ্যে প্রকল্প এলাকায় শুরু হয়েছে প্রায় ৪০ একর জমিতে ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজের সমাপ্তি হলে শুরু হবে ভ্যাকসিন ও অ্যান্টি ভেনামসহ ঔষধ উৎপাদন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রায় সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে থাকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনসহ অ্যান্টিভেনামের সংকট। সাপ কিংবা কুকুর বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হলে অসুস্থদের নেয়া হয় সরকারি হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে।
ফলে দেশে ভ্যাকসিন ও প্রয়োজনীয় অ্যান্টিভেনামের চাহিদা মেটাতে প্রথমবারের মতো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ কোম্পানি এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) উদ্যোগে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখানে বিসিক কেমিকেল শিল্প পার্কে শুরু হচ্ছে ফার্মাসিউটিক্যালস, ভ্যাকসিন ও এন্টিভেনম প্রকল্প।
Advertisement
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ইডিসিল এর গোপালগঞ্জ প্লান্টের ভ্যাকসিন ইউনিট এবং মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট এবার স্থানান্তর করা হচ্ছে মুন্সিগঞ্জে। ফলে প্রকল্প এলাকায় শুরু হয়েছে ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া। এতে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে আশাবাদী স্থানীয়রা।
প্রকল্প এলাকায় ঘুরে দেখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম সাংবাদিকদের জানান, দেশে ভ্যাকসিন তৈরি ও বিতরণ সহজ করতে বিসিকের কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে নেয়া হয়েছে ভ্যাকসিন প্ল্যান্ট নির্মাণের উদ্যোগ। এরই মধ্যে ৪০ একর জমি বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। জমি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিসিক।
এরপর আগামী ছয় মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে যন্ত্রপাতি আমদানি ও অন্যান্য অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সব মিলিয়ে পূর্ণ সক্ষমতা অর্জনে আরও আড়াই থেকে তিন বছর সময় লাগবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে আমরা প্রায় ৭০ শতাংশ ওষুধ সরবরাহ করতে পারছি। কোয়ালিটির দিক থেকে এগুলো কোনো প্রাইভেট উৎপাদকের চেয়ে কম নয়। তবে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ চাহিদা পূরণে অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হবে। সেগুলো আনার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, অ্যান্টিভেনমসহ কিছু ওষুধ এখনো কার্যকর হচ্ছে না। তবে দেশের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ভ্যাকসিন ও ওষুধ উৎপাদনে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এরই মধ্যে সিরাজদিখাঁন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে গড়ে উঠছে একাধিক বহুতল ভবন উন্নতি হচ্ছে অবকাঠামো গত অগ্রগতির।
Advertisement
জানা গেছে, ৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন প্লান্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারখানায় ১৫ ধরনের টিকা উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্লান্টটিতে ২০২৮ সালের মধ্যে ছয় ধরনের ও ২০২৯ সালে আরও ৯ ধরনের টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়। ২০৩০ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।