ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), প্রতিনিধি,মঙ্গলবার ০৫ আগস্ট ২০২৫ || শ্রাবণ ২১ ১৪৩২ :
অবহেলা আর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল দশা চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থেকে লালখানবাজার ফ্লাইওভারের। ফ্লাইওভারের নাট-বল্টু খুলে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। নিচে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো ৯০ হাজার গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বলছে, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তবে সিটি করপোরেশন জানায়, তদারকির জন্য করা হয়েছে আলাদা কমিটি।
৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বহদ্দারহাট-লালখানবাজার ফ্লাইওভার এখন কার্যত অভিভাবকহীন। গার্ডারের সঙ্গে সংযুক্ত তার আগেই কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে খুঁটিতে তার টাঙিয়ে বাতি চালু রাখার উদ্যোগ নেয়া হলেও সেখান থেকেও তুলে নেয়া হয়েছে বাতিগুলো। স্টিল গার্ডার থেকে খুলে নেয়া হয়েছে নাট-বল্টু ও পাইপ।
Advertisement
ফ্লাইওভারের ওপর যেখানে-সেখানে জমে আছে ময়লা-আবর্জনা ও পানি। খুপরি করে গড়ে উঠেছে মাদকসেবীদের আস্তানাও। অরক্ষিত এই সড়কে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন চলাচলকারীরা। ট্রাকচালক জামাল জানান, রাতে বাতি জ্বলে না। অনেক সময় অন্ধকারে গাড়ি চালাতে হয়। বৃষ্টি হলেই ফ্লাইওভারে পানি জমে ওঠে।
আর মোটরসাইকেলচালক আফজাল বলেন, কেউ কেউ ফ্লাইওভারের ওপরে সুতা বেঁধে রাখে, এতে মুখে ও গায়ে লেগে দুর্ঘটনা ঘটে।
Advertisement
এদিকে, বৃষ্টির সময় ফ্লাইওভারের ওপর পানি জমে যায়, পরে তা গড়িয়ে পড়ে নিচের পথচারীদের ওপর। নিচের দৃশ্য আরও ভয়াবহ। ২০১৯ সালে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ হলেও এখন তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট। মুরাদপুর থেকে দুই নম্বর গেট পর্যন্ত লোহার নিরাপত্তাবেষ্টনী খুলে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উপড়ে ফেলা হয়েছে গাছ ও লাইট স্ট্যান্ড। নিচে বসিয়ে দেয়া হয়েছে ঘর, সেখানে বাস করছেন মাদকসেবীরা।
সিডিএ বলছে, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, ‘এই প্রকল্পের দায়িত্ব এখন সিটি করপোরেশনের কাছে। তবে আমরাও তাদের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সহায়তা করছি।’
Advertisement
https://www.youtube.com/live/E9fMBkbJ3-M?si=k2Ro-HFkcInWkNQ
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বলছে, তদারকি এবং কিশোর গ্যাংয়ের চুরি ঠেকাতে আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা বসছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি গঠন করে তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করছি।’
উল্লেখ্য, ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ফ্লাইওভার ২০১৭ সালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন এই ফ্লাইওভার দিয়ে প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করে।

ফ্লাইওভারের স্টিল গার্ডার থেকে খুলে নেয়া হয়েছে নাট-বল্টু ও পাইপ। ছবি: সময় সংবাদ