ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজশাহীর গোদাগাড়ী প্রতিনিধি,শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫ || শ্রাবণ ১৭ ১৪৩২ :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বিএনপি নেতাদের ছবি সংবলিত ব্যানার ও পোস্টার সরানোকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ ও বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েলের মধ্যে ফোনালাপের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে শোনা যায়, ইউএনওকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং কড়া ভাষায় ধমক দিচ্ছেন বিএনপি নেতা।
Advertisement
জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত গোদাগাড়ী উপজেলার ডাইংপাড়া গোল চত্বরে লাগানো ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণকে কেন্দ্র করে। এগুলোর মধ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ছিল।
এগুলো সরিয়ে ফেলার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েল, যিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক।
Advertisement
অডিওতে শোনা যায়, কে এম জুয়েল ইউএনওকে ফোন দিয়ে জানতে চান, কেন পোস্টার সরানো হয়েছে। প্রথমে ইউএনও বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে তিনি জানান, ‘জনগণের অভিযোগ ছিল।’ তখন বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনগণ অনেক অভিযোগ করে, সব পালন করেন? তাহলে পুরো উপজেলার পোস্টার সরান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেটা বলছি সেটা লিগ্যাল রাইট নিয়া বলতেছি। আপনি কালই ওই জায়গায় পোস্টার আবার লাগাবেন। আমি ঢাকায় আছি, কাল এসে যেন দেখে যেতে পারি।’ তখন ইউএনও শুধু ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে’ বলতে থাকেন।
পাল্টা জবাবে কে এম জুয়েল বলেন, ‘ঠিক আছে মানে কী? অবশ্যই করবেন, নইলে আমরা যেটা করার সেটা করব। আপনি আমার নেতার ছবি সরিয়েছেন। আপনার বিরুদ্ধে যেটা করার, সেটা আমরা করব।’
এছাড়াও অডিওতে ইউএনওকে উদ্দেশ্য করে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি নরসিংদীর মানুষ না? কোন দল থেকে এসেছেন? কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন?’
এ বিষয়ে ইউএনও ফয়সাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গোদাগাড়ী পৌরসভার প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে গত ৬ এপ্রিল পৌর এলাকার ডাইংপাড়া মোড়ের চারপাশে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে রাখা সব ধরনের পোস্টার, ব্যানার, ভ্যানগাড়ি ও দোকানপাট সরানোর নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল এসব কারণে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ২৯ জুলাই মঙ্গলবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেগুলো অপসারণ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং জনস্বার্থে নেয়া প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ছিল।’
Advertisement
https://www.youtube.com/live/E9fMBkbJ3-M?si=k2Ro-HFkcInWkNQ
বিএনপি নেতা কে এম জুয়েল বলেন, ‘যদি প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে পুরো এলাকায় পোস্টার সরাতো তাহলে কোনো অভিযোগ থাকত না। কিন্তু শুধু একটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে বিএনপির নেতাদের ছবি সম্বলিত পোস্টার সরানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ বিষয়ে আমি রাজশাহীর জেলা প্রশাসককেও অবহিত করেছি।’ তিনি প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষতা ও রাজনৈতিক সমতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েল ও ইউএনও ফয়সাল আহমেদ: সংগৃহীত ছবি